বিধ্বংসী অশ্বিন। ৫-৫২। ছবি: এপি
দিনের ছ’নম্বর ওভারেই ব্যাট হাতে নামছেন তাদের পাঁচ নম্বর ব্যাটসম্যান— ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট ইতিহাসে এমন ঘটনা শেষ ঘটেছিল ভারতের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের বছরে। কপিল দেব কাপ হাতে তোলার মাস তিনেক আগে। পোর্ট অব স্পেনে ৩৩ বছর আগের সেই ঘটনা ফিরে এল শনিবার। জামাইকার সাবাইনা পার্কে।
সে দিন ১-৩ হওয়ার পর কুইন্স পার্ক ওভালে কপিলদেব, বলবিন্দর সিংহ সাঁধু, বেঙ্কটরাঘবনদের হাত থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বাঁচিয়েছিলেন ল্যারি গোমস ও ক্লাইভ লয়েড। ২৩৭-এর অসাধারণ পার্টনারশিপ গড়ে। শনিবার ইশান্ত শর্মা, মহম্মদ শামি, রবিচন্দ্রন অশ্বিনদের হাত থেকে দলকে বাঁচাতে পারল না তেমন কোনও পার্টনারশিপ। চলতি সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯৬-এ অল আউট হয়ে বেহাল দশা জ্যাসন হোল্ডারের দলের।
দশ বছর আগে যে সাবাইনা পার্কে ছ’উইকেট নিয়ে সেই মাঠে স্পিনারদের বরাবরের অস্বস্তি কাটিয়েছিলেন অনিল কুম্বলে, সেখানেই আবার একই কাণ্ড ঘটালেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। অ্যান্টিগার পর এখানেও তাঁর ঘূর্ণির ম্যাজিক চলছে। যার ফলে টেস্টের শুরু থেকেই ব্যাকফুটে ক্যারিবিয়ানরা।
ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে কখনও পরপর দুটো টেস্ট জেতেনি ভারত। কিন্তু শনিবার প্রথম দিনই অশ্বিনের দাপটই ইঙ্গিত দিয়ে রাখল, এ বার বোধহয় সেটা আর হচ্ছে না। অশ্বিনের পাঁচ এবং ইশান্ত ও শামির জোড়া শিকারের ধাক্কায় ধস নামল ক্যারিবিয়ান ইনিংসে। সারা ইনিংসে জারমেইন ব্ল্যাকউডের ৬২-ই সবচেয়ে বড় স্কোর। স্থানীয় তারকা মার্লন স্যামুয়েলসও চেনা উইকেটে দাঁড়াতে পারলেন না। ৩৭ করেই ফেরৎ গেলেন অশ্বিনের ঘূর্ণিতে।
তিন ওভারের মধ্যে দুই উইকেট ফেলে দিয়ে ইশান্ত শর্মা শনিবার সাবাইনা পার্কে যে ভাবে শুরু করেছিলেন, তা সবুজ, আর্দ্র উইকেটে বোধহয় হওয়ারই ছিল। এর পর ছ’নম্বর ওভারে মহম্মদ শামিও খাতা খোলেন। আর আর্দ্রতা কাটতেই আক্রমণ শুরু করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। লাঞ্চেই ৮৮-৪-এর চাপ নিয়ে ড্রেসিং রুমে যায় তারা। পরের তিন ঘন্টায় আরও বড় ধস।
ইশান্তের বুক সমান উচ্চতার বল ব্যাট দিয়ে নামাতে গিয়ে ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে চেতেশ্বর পুজারাকে ক্যাচ দিলেন ক্রেগ ব্রেথওয়েট। দিল্লির পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে স্লিপে বিরাট কোহালিকে ক্যাচ দিয়ে বেরিয়ে যান ড্যারেন ব্র্যাভো। রাজেন্দ্র চন্দ্রিকাও মহম্মদ শামির বল অনর্থক খেলতে গিয়ে গালিতে কে এল রাহুলকে ক্যাচ দিয়ে বেরিয়ে যান। লাঞ্চের আগের ওভারেই জারমেইন ব্ল্যাকউডকে এলবিডব্লিউ-এর ফাঁদে ফেলেন অশ্বিন। ডরউইচ, বিশু ও হোল্ডারও তাঁরই শিকার।
চন্দ্রিকা যে ভাবে হাত হেলিয়ে-দুলিয়ে ব্যাট করতে নেমেছিলেন, তিনি ফিরে যাওয়ার সময় শামির সেই ভঙ্গি নকল করা দেখেই আন্দাজ করা গেল, তাঁরা কতটা তেতে রয়েছেন। চোট পাওয়া মুরলী বিজয়ের জায়গায় এগারো মাস পর টেস্ট খেলতে নামা কে এল রাহুলই শিখরের সঙ্গে ওপেন করলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy