Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নেই প্রচার, ফাঁকা মাঠেই চলছে জাতীয় টেবিল টেনিসের আসর

জাতীয় স্তরের টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা চলছে দুর্গাপুরের সিধু কানহু স্টেডিয়ামে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে এসেছেন প্রতিযোগীরা। এই প্রতিযোগিতায় জাতীয় স্তরে নিজেদের র্যাঙ্কিং উন্নত করার সুযোগ থাকায় প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। কিন্তু দর্শক প্রায় নেই বললেই চলে। স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও যাতাযাতের অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভিন রাজ্য থেকে আসা প্রতিযোগী ও তাদের অভিভাবকেরা।

ফাঁকা স্টেডিয়ামেই চলছে খেলা। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।

ফাঁকা স্টেডিয়ামেই চলছে খেলা। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:১৯
Share: Save:

জাতীয় স্তরের টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা চলছে দুর্গাপুরের সিধু কানহু স্টেডিয়ামে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে এসেছেন প্রতিযোগীরা। এই প্রতিযোগিতায় জাতীয় স্তরে নিজেদের র‌্যাঙ্কিং উন্নত করার সুযোগ থাকায় প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। কিন্তু দর্শক প্রায় নেই বললেই চলে। স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও যাতাযাতের অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভিন রাজ্য থেকে আসা প্রতিযোগী ও তাদের অভিভাবকেরা।

প্রতিযোগিতাটি শুরু হয়েছে মঙ্গলবার। চলবে রবিবার পর্যন্ত। উদ্যোক্তা বর্ধমান জেলা টেবিল টেনিস সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম দু’দিন ক্যাডেট (অনূর্ধ্ব-১২) ও সাব জুনিয়র, পরের তিন দিন জুনিয়র ও ইয়ুথ এবং শেষ দু’দিন ইয়ুথ বিভাগের জন্য নির্দিষ্ট রয়েছে। যোগ দিয়েছেন প্রায় ৫০০ প্রতিযোগী। শহরের বিভিন্ন হোটেলে থাকছেন প্রতিযোগী ও তাঁদের অভিভাবকেরা। অভিযোগ, খেলা শেষে রাতে ফেরার সময় মিলছে না পর‌্যাপ্ত যানবাহন। ফলে বাধ্য হয়ে চড়া ভাড়া দিয়ে অটো করে হোটেলে ফিরছেন প্রতিযোগী ও অভিভাবকেরা।

মুম্বইয়ের থেকে আসা এক প্রতিযোগীর অভিভাবক পি হেলেঙ্গাদির ক্ষোভ, “মঙ্গলবার রাতে হোটেলে ফেরার সময় বেশ সমস্যায় পড়েছিলাম। তখন অসহায় বোধ করছিলাম।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিযোগী বলেন, “এর আগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় খেলতে গিয়েছি। দুর্গাপুরের স্টেডিয়ামটি ভালো। কিন্তু যাতায়াতের সমস্যা রয়েছে।” হোটেলে ফেরার জন্য উদ্যোক্তারা গাড়ির ব্যবস্থা না করার জন্যই এই সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অভিভাবকেরা। স্টেডিয়াম শীততাপ নিয়ন্ত্রিত না হওয়ার জন্য খেলতে সমস্যা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিযোগী ক্ষোভ, “স্টেডিয়াম চত্বরের ভিতরে পুরসভার বর্জ্য ফেলার গাড়ি রাখা হয়েছে। খেলার দিনগুলিতে ওই গাড়িগুলি না থাকলেই ভালো হতো।”

এর আগে বীরভূমের বোলপুরে চার বার এই প্রতিযোগিতা আয়োজিত হলেও দুর্গাপুরে হচ্ছে এই প্রথম বার। কিন্তু প্রতিযোগিতা ঘিরে কোনও তাপ-উত্তাপ নেই শহরে। আলাদা করে কোনও প্রচার নেই বললেই চলে। অথচ, দুুর্গাপুরে বেশ কয়েকটি টেবিল টেনিস প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। যে সিধো কানহো স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতাটি চলছে সেখানেই নিয়মিত টেবিল টেনিসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়াও শহরের বেশ কয়েকটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে টেবিল টেনিসের চল রয়েছে। কিন্তু প্রতিযোগিতার প্রথম দিন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের কিছু ছাত্রছাত্রী খেলা দেখতে এলেও বাকি দু’দিন স্টেডিয়াম ছিল কার্যত ফাঁকা। শহরের অনেক ক্রীড়াপ্রেমীই জানিয়েছেন, এই টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতার কথা তাঁরা জানেন না। স্টেডিয়ামের ভিতরে নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর বড় বড় পাখা লাগানো হলেও দুপুরের দিকে গরম বাড়ছে। সেই কারণেও স্টেডিয়াম ফাঁকা থাকছে বলে মত অনেকের।

গত বছর এই স্টেডিয়ামেই অনূর্ধ্ব ১৩ ও অনূর্ধ্ব ১৫ পর‌্যায়ের জাতীয় সাব জুনিয়র র‌্যাঙ্কিং ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা হয়েছিল। সেই প্রতিযোগিতায় প্রাথমিক রাউন্ডের খেলা শেষ হতে প্রায় ভোর হয়ে যেত। চূড়ান্ত পর্বের খেলা শেষ হতেও রাত ১০টা বেজে যেত। সেই সময়েও হোটেলে ফিরতে যানবাহনের অভাবে চরম বেকায়দায় পড়তেন প্রতিযোগী ও তাঁদের অভিভাবকেরা। অনেকে স্টেডিয়ামের ভিতরেই রাত কাটাতে বাধ্য হতেন। এ বার অবশ্য সব প্রতিযোগীই হোটেলে ফিরতে পারছেন। উদ্যোক্তারা জানান, টেবিল টেনিস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার পরিদর্শক পি গণেশন পরিকাঠামো দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে আয়োজনে যে কিছু ক্রটি থেকে গিয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তাঁদের দাবি, প্রথম দিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে প্রতিযোগিতা শেষ হতে দেরি হয়েছিল। তাই হোটেলে ফিরতে কেউ কেউ সমস্যায় পড়েছিলেন। তবে স্বেচ্ছাসেবকরা সহযোগিতা করেছেন। দ্বিতীয় দিন থেকে অবশ্য রাত ন’টার আগেই প্রতিযোগিতা শেষ হয়ে যাচ্ছে। রাজ্য টেবিল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেবীপ্রসাদ বসু বলেন, “ছোটখাটো দু’একটা সমস্যা থাকতে পারে। তবে কলকাতার বাইরে এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন করার চেষ্টা প্রশংসনীয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE