ইন্ডিয়ান সুপার লিগে দুই প্রধানকে এ বছরই খেলাতে মরিয়া সংগঠকরা কলকাতার বাইরের মাঠে গিয়ে খেলার প্রস্তাব দিল।
ইস্টবেঙ্গলের কাছে জানতে চাওয়া হল, শিলিগুড়িতে তাঁরা আইএসএলের ম্যাচ খেলতে রাজি কি না? দ্বিতীয় পছন্দের জন্য কল্যাণীর নামও বলা হয়েছে বলে খবর। আর মোহনবাগানকে প্রস্তাব দেওয়া হল, দূর্গাপুর স্টেডিয়ামে খেলতে রাজি কি না?
আইএসএল সংগঠক আইএমজি আরের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে এই প্রস্তাব আসার পরই কলকাতার দুই প্রধানের কর্তারাই তা পত্রপাঠ নাকচ করে দিয়েছেন বলে খবর। দুই ক্লাবই মুম্বইয়ের রিল্যায়ান্স কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, খেলতে হলে কলকাতাতেই খেলবেন। তাদের যুক্তি, এক) টুর্নামেন্টের আকর্ষণ বাড়াতে আইএসএলের প্রয়োজন তাদের। তাদের শর্ত মেনেই খেলাতে হবে। দুই) আতলেতিকো দে কলকাতার মতো তিন বছরের ফ্যাঞ্চাইজি ক্লাব নয় দুই প্রধান। একশো বছরের ঐতিহ্য আছে। এটিকে কলকাতায় খেলবে আর দুই প্রধান বাইরের মাঠে খেলতে যাবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না।
অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে দুই ক্লাবের ব্যালান্স শিট, অ্যাকাডেমির অবস্থা, রেজিস্ট্রেশন, অনুশীলনের মাঠ-সহ নানা তথ্য চেয়ে নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। সেগুলো হাতে পেয়ে খুশি নীতা অম্বানীর কোম্পানি। কিন্তু ঝামেলা বেধেছে মাঠ আর দশ কোটি টাকার ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি দেওয়া নিয়ে। যেহেতু গোপনে কাথাবার্তা চলছে তাই প্রকাশ্যে তা নিয়ে কিছু বলতে নারাজ দুই প্রধানের কর্তারাই। তবে ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বুধবার বিকেলে বলে দিলেন, ‘‘আইএসএলে খেললে আমরা কলকাতাতেই খেলব। বাইরে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। সদস্য-সমর্থকরাও তাই চায়।’’ আর মোহনবাগান অর্থসচিব দেবাশিস দত্তর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘কোনও লিখিত প্রস্তাব আসেনি। আর এটিকের মালিক তো আনন্দবাজারেই বলেছেন আমাদের সঙ্গে তাঁর কোনও বিরোধ নেই। ফলে অন্য সব কিছু ঠিক হলে মাঠ নিয়ে কোনও সমস্যা হবে বলে মনে হয় না।’’
কিন্তু ঘটনা হল, ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে আইএসএলের যা চুক্তি আছে তাতে আতলেতিকো দে কলকাতার মালিক রাজি না হলে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের যুবভারতী বা রবীন্দ্রসরোবরে খেলা কঠিন। কারণ চুক্তিতে আছে, এক শহরের একটা টিমই খেলবে। সমস্যা আছে অন্য জায়গাতেও। একই স্টেডিয়ামে তিনটি দলের খেলা হলে স্পনসরদের বিপণন (ব্র্যান্ডিং) সমস্যা হবে মনে করছেন সংগঠকরা। মুখে কিছু না বললেও শোনা যাচ্ছে এটিকে কর্তারা সেই যুক্তি নাকি খাড়া করছেন সংগঠকদের কাছে। পাল্টা প্রস্তাব দিচ্ছেন ক্লাব কর্তারাও। এক মোহনবাগান কর্তা বললেন, ‘‘সাইড লাইনের পাশের ইলেকট্রনিক বোর্ডের মতো জিনিস বিপণনের জন্য ব্যবহার করলেই সমস্যা মিটে যাবে।’’ এক লাল-হলুদ কর্তার জেহাদি মন্তব্য, ‘‘তিন বছরে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা তো ১২০ কোটি টাকা ক্ষতি করেছে বলে শুনেছি। ওদের স্পনসররা তা হলে কী ব্র্যান্ডিং করল? ও সব বাজে যুক্তি।’’
দুই প্রধানের এই সিদ্ধান্তের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তাদের ক্লাবের প্রাক্তন তারকা ফুটবলাররাও। মোহনবাগানের ঘরের ছেলে সুব্রত ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘এর চেয়ে আইএসএল না খেলাই ভাল।’’ আর ইস্টবেঙ্গলের ঘরের ছেলে ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘এটিকে-র ক’জন সমর্থক আছে? দুই প্রধান না খেললে কিন্তু আইএসএলের ভবিষ্যৎ একদম অন্ধকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy