Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ওয়ার্ন-পন্টিংয়ের দাপটে প্রথম ম্যাচে হার সচিনদের

ওপেন করতে নামছে সেই জুটি। সচিন তেন্ডুলকর-বীরেন্দ্র সহবাগ। উল্টো দিক থেকে বল হাতে দৌড় শুরু করেছেন ওয়াসিম আক্রম, অ্যালান ডোনাল্ড। সহবাগের (২২ বলে ৫৫) দুরন্ত ইনিংসের পর চার নম্বরে ব্যাট করতে নামলেন কে? নামটা ব্রায়ান চার্লস লারা। কিংবদন্তি সিরিজের প্রথম ম্যাচে প্রথম ব্যাট করে সচিনের দল এসে থামল ২০ ওভারে ১৪০ রানে। সহবাগের পরে সর্বোচ্চ রান সচিনেরই (২৭ বলে ২৬)।

সচিন-ওয়ার্ন যুদ্ধের আবহে জমজমাট নিউ ইয়র্কের সিটি ফিল্ড স্টেডিয়াম। ছবি: এএফপি

সচিন-ওয়ার্ন যুদ্ধের আবহে জমজমাট নিউ ইয়র্কের সিটি ফিল্ড স্টেডিয়াম। ছবি: এএফপি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:০৭
Share: Save:

ওপেন করতে নামছে সেই জুটি। সচিন তেন্ডুলকর-বীরেন্দ্র সহবাগ।

উল্টো দিক থেকে বল হাতে দৌড় শুরু করেছেন ওয়াসিম আক্রম, অ্যালান ডোনাল্ড।

সহবাগের (২২ বলে ৫৫) দুরন্ত ইনিংসের পর চার নম্বরে ব্যাট করতে নামলেন কে? নামটা ব্রায়ান চার্লস লারা।

কিংবদন্তি সিরিজের প্রথম ম্যাচে প্রথম ব্যাট করে সচিনের দল এসে থামল ২০ ওভারে ১৪০ রানে। সহবাগের পরে সর্বোচ্চ রান সচিনেরই (২৭ বলে ২৬)। কিন্তু কিংবদন্তি সিরিজের প্রথম ইনিংসে নায়ক কিন্তু এঁরা কেউ নন। নায়কের নাম শেন কিথ ওয়ার্ন। সচিন এবং লারা দু’জনকেই তুলে নিয়ে। নিলেন তিন উইকেট।

শেষ পর্যন্ত রান তাড়া করতে নেমে ১৭.২ ওভারেই জিতল ওয়ার্নের দল ১৪১-৪ তুলে। সর্বোচ্চ রান রিকি পন্টিংয়ের (অপরাজিত ৪৮)।

বাইশ গজের নাটক শুরু হওয়ার আগে থেকে অবশ্য মাঠের বাইরের নাটকের কমতি ছিল না।

টিম বাছার লটারি হওয়ার আগে থেকেই টেনশনে ছিলেন তিনি। কী জানি কী হবে।

শোয়েব আখতার আগেই আব্দার জানিয়ে রেখেছিলেন— ‘‘সচিন, প্লিজ আমাকে তোমার দলে নিও।’’ শেষ পর্যন্ত শোয়েবের চাহিদা অবশ্য পূরণ হয়েছে। সচিন তেন্ডুলকরের দলেই সুযোগ পেয়েছেন শোয়েব।

কিন্তু সচিনের দলেই কেন? কেন প্রতিদ্বন্দ্বী শেন ওয়ার্নের টিমে নয়?

জবাবটা শোয়েব আখতার দিয়েছেন শনিবার অলস্টারস টি- টোয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচ শুরুর আগে। রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস বলেছেন, ‘‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ আমি সচিনের দলে খেলছি। আর সচিন আমার দলে। ওর বিরুদ্ধে অনেক বল করেছি। গত ১৫ বছর ধরে করেছি। আর করতে চাই না। তাই চেয়েছিলাম সচিনের দলে থাকতে।’’


চেনা মেজাজে সচিন (উপরে)। আরও এক শিকার। লক্ষ্মণকে ফিরিয়ে উৎসব ওয়ার্নের। ছবি: রয়টার্স।

শোয়েবের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। স্বপ্নপূরণ হচ্ছে নিউ ইয়র্কবাসীদেরও। যারা কিংবদন্তিদের আবার একবার ব্যাট-বল হাতে নামতে দেখবেন। যাঁদের অবশ্যই এক জন শোয়েব আখতার। এবং অবসর নেওয়ার পরেও যিনি সচিন-আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। সচিন নিয়ে বলতে গিয়ে শোয়েব বলছেন, ‘‘সচিন একটা বিধ্বংসী শক্তি। ক্রিকেট ইতিহাসে ও সর্বকালের সেরা প্লেয়ার। তার উপর আর ভারত-পাকিস্তানের মতো কিছু একটা লড়াই হোক, চাইনি। এই সিরিজটা আমি উপভোগ করতে চাই। আর তার জন্য সচিনের দলে থাকাটাই সবচেয়ে ভাল উপায়।’’

সচিনের বিরুদ্ধে সব সময় বল করে এসেছেন। কিন্তু সচিনের অধিনায়কত্বটা কোনও দিন দেখেননি। বলছিলেন, ‘‘অধিনায়ক সচিনকে দেখিনি কোনও দিন। এ বার দেখতে চাই ও কী রকম স্ট্র্যাটেজি করে আমার বোলিংয়ের সময়। আমার কী চাই, সেটাও আমি সচিনকে গিয়ে বলব।’’ এর পর হাসতে হাসতে শোয়েবের ফুটনোট, ‘‘আমি জানি, সবাই দেখতে চায় সচিনের বিরুদ্ধে আমি কী রকম বল করি। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কী, সচিনকে বল করতে করতে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।’’

শোয়েব ক্লান্ত হতে পারেন, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রবাসীর জন্য যে ক্রিকেটের মেনু সাজানো হয়েছে, তা চাখতে চাখতে তাদের ক্লান্ত হওয়ার কোনও কারণ নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই অভিনব সিরিজের মাধ্যমে অনেক কিছুই নতুন ঘটছে। যেমন এই প্রথম কোনও ক্রিকেটার (সচিন তেন্ডুলকর এবং শেন ওয়ার্ন) নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের বেল বাজিয়ে দিনের সূচনা করলেন। শুক্রবার যেখানে আরও হাজির ছিলেন ওয়াসিম আক্রম এবং ম্যাথু হেডেন।

এই অভিনব তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়ে সচিন আগে বলেছিলেন, ‘‘আমরা শুধু একটা প্রাক্তনদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট করতে চাইনি, আমরা চেয়েছি যুক্তরাষ্ট্রেও ক্রিকেটটার প্রচার করতে। বিশ্বকাপকে আরও আকর্ষণীয় করতে গেলে আমাদের আরও বেশি টিম দরকার।’’

অবিশ্বাস্য এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টে প্রথম বল পড়ার আগে অবশ্য মাঠের বাইরে নানা মজার ঘটনার কোলাজ উঠে আসছে। যেমন দিন দু’য়েক আগে সচিন টুইট করেছিলেন, ‘‘অ্যালান ডোনাল্ড ওর পাসপোর্টটা হারিয়ে ফেলেছে। কেউ পেলে দয়া করে ফেরত দিয়ে যাবেন।’’ আবার জানা যাচ্ছে, গ্লেন ম্যাকগ্রার লাগেজ বিমান কোম্পানির সৌজন্যে নিউ ইয়র্ক এসে পৌঁছয়নি। দু’দিন ধরে নিজের জিনিসপত্র ছাড়াই চলতে হচ্ছে ম্যাকগ্রাকে।

লটারির মাধ্যমে দুটো টিম বাছার সময় যখন দেখা যাচ্ছিল সচিনের দলে একের পর এক নাম উঠছে সৌরভ, সহবাগ, লক্ষ্মণের নাম উঠছে, তখন সচিন মন্তব্য করেন, ‘‘আরে এটা তো দেখছি ভারতীয় টিম হয়ে যাচ্ছে।’’ সচিন’স ব্লাস্টার্সে যদি ভারতীয় ক্রিকেটের ছায়া থাকে, তা হলে উল্টো দিকে ওয়ার্ন’স ওয়ারিয়র্স টিমে দেখা যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের প্রাধান্য। যেমন ওয়ার্নের সঙ্গে রয়েছেন হেডেন, পন্টিং, সাইমন্ডসরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE