ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো খেলা মানে ফুটবলপ্রেমীরা কী কী আশা করতে পারেন? দুর্দান্ত একটা গোল দেখব। পায়ের কিছু স্টেপওভার দেখতে পাব। স্পটজাম্প করে হেড তো নিশ্চয়ই থাকবে। নাকলবল ফ্রি-কিকে চোখ ধাঁধানো গোল। সব শেষে সেই ‘ইনক্রেডিবল’ সেলিব্রেশন যা এখন কোবি ব্রায়ান্ট থেকে ক্রিস গেইল, সবাই নকল করেন।
ইউরোর প্রথম দু’ম্যাচে রোনাল্ডোর খেলা বলতে সুযোগের পর সুযোগ নষ্ট। ড্রিবল করতে গিয়ে আটকে যাওয়া। ফ্রি-কিক গোলকিপারের হাতে মারা। তবে শেষ গ্রুপ ম্যাচে হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে রোনাল্ডোর দু’গোল যেন গোটা ছবিটাই পাল্টে দেয়। শনিবার রাতে ক্রোয়েশিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে শেষ ষোলোয় নামার আগে তাই পর্তুগাল ভক্তরাও আশায় ছিলেন হয়তো রোনাল্ডো-ম্যাজিকের আর এক রাতের সাক্ষী থাকবে ফুটবলবিশ্ব।
কিন্তু হাঙ্গেরির রাস্তায় হাঁটল না ক্রোয়েশিয়া। হাই ডিফেন্সিভ লাইন নিয়ে রোনাল্ডোকে আটকাতে পারেনি হাঙ্গেরি। তাই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে এ দিন ক্রোয়েশিয়া ৪-৫-১ ফর্মেশনে দল সাজিয়ে নেয়। অর্থাৎ পাঁচ জন মিডফিল্ডার নিয়ে ব্লক করে দেওয়া। যাতে মাঝমাঠেই রোনাল্ডো আটকে যান। আর হলও ঠিক সেটাই।
পর্তুগালের অর্ধেক মুভ ক্রোয়েশিয়ার মাঝমাঠে এসেই আটকে যায়। নানির সঙ্গে ডাবল স্ট্রাইকারে শুরু করলেও উইংয়েই বেশিরভাগ খেলেন রোনাল্ডো। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার মাঝমাঠ তাঁকে বলের ধারেকাছে আসতে দেয়নি। প্রতিটা বলের জন্য মডরিচ-রাকিটিচরা লড়াই করেন। রোনাল্ডোর সঙ্গে গোমেস, নানিদের কোনও কম্বিনেশনও তৈরি করতে দেয়নি ক্রোয়েশিয়া মাঝমাঠ। চোরলুকা-ভিদার সেন্টার ব্যাক জুটিও আঁটসাট ছিল। বল এলেই ক্লিয়ার করে দিচ্ছিলেন তাঁরা। নো-ননসেন্স ডিফেন্স বলতে যা বোঝায়। ক্রোয়েশিয়া জানত, রোনাল্ডোকে বেশি বল ধরতে দিলেই বিপদ। যত কম বলের পজেশন পাবেন রোনাল্ডো ততটাই হতাশ হয়ে পড়বেন।
এক দু’বার বল ধরে নিজের থেকেই মুভ তৈরি করতে চেয়েছিলেন রোনাল্ডো। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার ডিপ ডিফেন্স পার করতে পারেননি। শটও নিতে পারেননি গোলে। প্রথমার্ধে পর্তুগালের সুযোগ বলতে পেপের হেড। কিন্তু রোনাল্ডো নিষ্প্রভ থাকলেও, জ্বলে উঠলেন রেনাতো সাঞ্চেজ। দ্বিতীয়ার্ধে সাঞ্চেজ নামার পর থেকেই পর্তুগাল আক্রমণ যেন নতুন প্রাণ পায়। সাঞ্চেজের সবচেয়ে বড় গুণ অসাধারণ পাস দেওয়ার ক্ষমতা। সেটাই ধরা পড়ল। প্রতিটা পাসই নিঁখুত। নানিকে আরও ম্যাচের মধ্যে আনেন সাঞ্চেজ। লং বল দিয়ে প্রতিআক্রমণও তৈরি করেন। কিন্তু রোনাল্ডো সেই অদৃশ্যই ছিলেন। যাঁর ফার্স্ট-টাচও এ দিন ঠিকঠাক কাজ করছিল না। বল ঠিকমতো রিসিভ করতে পারছিলেন না। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে গোল এল না। ম্যাচ গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। এবং অতিরিক্ত সময়েই গোল করে পর্তুগালকে বাঁচালেন কোয়ারেসমা। কোয়ার্টারে উঠলেও পর্তুগালের সমস্যাগুলো রয়েই গেল। কারণ, রোনাল্ডো যদি কোয়ার্টারেও এ রকম পারফরম্যান্স দেন, তা হলে হয়তো পর্তুগালকে ছিটকে যেতে হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy