একটা সময় ভেবেছিলেন খেলা ছেড়ে দেবেন। পরিবারের ছোট্ট মুদি দোকানে চলছিল না সংসার। তার উপর ক্রিকেট খেলার খরচ। কিন্তু সাগরের বাবা-মা ছেলের খেলাকে হারিয়ে যেতে দেননি। যার ফলও পেলেন হাতে নাতে। ছয় ছক্কা হাঁকিয়ে সেই কষ্টের জীবনকে যেন স্বীকৃতি দিলেন সাগর মিশ্রা। পশ্চিম রেলওয়ের হয়ে টাইম শিল্ডে খেলতে নেমেছিলেন তিনি। তারই দ্বিতীয় দিন এক ওভারে ছয় ছক্কা হাঁকিয়ে নজরে চলে এলেন তিনি।
ন’বছর আগে টিভি সেটের সামনে বসে যখন যুবরাজ সিংহকে দেখেছিলেন মুগ্ধ দৃষ্টিতে তখনই একটু একটু করে স্বপ্ন দেখার শুরু। না কখনও ভাবেননি যুবরাজের মতই এক ওভারে ছ’টি ছয় হাঁকিয়ে তিনিও চলে আসবেন খবরের শিরোনামে। কিন্তু এমনটাই হয়েছে। আরসিএফ-এর বিরুদ্ধে অফ স্পিনার তুষার কুমারের ওভারে ছয় ছক্কা হাঁকিয়ে টুর্নামেন্টের ইতিহাসেও রেকর্ড গড়ে ফেললেন তিনি। যদিও গত বছরই প্রথম শ্রেনীর ক্রিকেটে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে রেলের হয়ে ১১ বলে ন’টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন এই বাঁ হাতি। যদিও নিজেকে অল-রাউন্ডার হিসেবে ভাবতেই বেশি ভালবাসেন তিনি। বলেন, ‘‘আমি একজন অল-রাউন্ডার। পাঁচ-ছয়ে ব্যাট করি। আমার এখনও অনেক উন্নতি করতে হবে। যে সময় আমি ব্যাট করি তখন ফিল্ডাররা ছড়িয়ে পরে। আমাকে শিখতে হবে কী ভাবে সেই মাঠকে ফাঁকা করতে হয়।’’
কিন্তু এদিন চার নম্বরে ব্যাট করতে পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। বলেন, ‘‘আমি এদিন ওপরের দিকে ব্যাট করতে এসেছিলাম। ওদের বাঁহাতি স্পিনাররা দারুণ বল করছিল। যে কারণে আমাকে ওপরে ব্যাট করতে পাঠানো হয়েছিল। আমি আমার স্বাভাবিক খেলাটাই খেলেছিলাম। একটা খারাপ লাগা সেঞ্চুরিটা করতে পারলাম না।’’ শুধু তাই নয় এই ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের সময় তাঁর পায়ে টান ধরেছিল এতটাই যে ব্যাট করাই মুশকিল হয়ে পড়ছিল। পর পর পাঁচটি ছক্কা হাঁকানোর পর সেটা আরও বেড়ে যায়। মাঠে শুয়ে পড়েছিলাম। লেবু জল খেলে আবার ব্যাট করতে শুরু করি। কুমারে আমার পায়ে ছ’নম্বর বলটা রেখেছিল। সেটা মিড উইকেটের উপর দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠাতে পেড়েছিলাম।’’ ছয় ছক্কা হজম করে বোলারই পিঠ চাপড়ে দিয়েছিল সাগরের।
এখন ২৩ বছরের সাগরের আশা রেলওয়ের নির্বাচকরা তাঁর এই খেলা দেখে উদ্বুদ্ধ হবেন। আর তাঁকে রঞ্জি ট্রফিতে খেলার সুযোগ দেবেন। এই খেলাই যদি আইপিএল-এর দরজা খুলে দেয়। সেই স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছেন সাগর।
আরও খবর
আট বছর পর দলে ফিরলাম মনেই হচ্ছে না: পার্থিব
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy