Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চোটের কাঁটা সরিয়ে স্টেফির রেকর্ড ভাঙতে তৈরি সেরিনা উইলিয়ামস

মাসখানেক আগেই উইম্বলডনে যে শিখর ছুঁয়েছিলেন অলিম্পিক্সে তার ধারে-কাছে তাঁকে পাওয়া যায়নি। চারটে অলিম্পিক্স সোনাজয়ীর দাপট ছিল না রিওয়। চলতি মাসের শেষে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে নামার আগে তাই তাঁকে কতটা ফর্মে দেখা যাবে তাঁর ভক্তদের মধ্যেই সে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু তিনি— সেরিনা উইলিয়ামস সে সব পাত্তা দিলে তো!

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৬ ০৩:২৫
Share: Save:

মাসখানেক আগেই উইম্বলডনে যে শিখর ছুঁয়েছিলেন অলিম্পিক্সে তার ধারে-কাছে তাঁকে পাওয়া যায়নি। চারটে অলিম্পিক্স সোনাজয়ীর দাপট ছিল না রিওয়। চলতি মাসের শেষে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে নামার আগে তাই তাঁকে কতটা ফর্মে দেখা যাবে তাঁর ভক্তদের মধ্যেই সে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কিন্তু তিনি— সেরিনা উইলিয়ামস সে সব পাত্তা দিলে তো!

স্টেফি গ্রাফের ওপেন যুগের ২২ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড এ বার টপকে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ সেরিনার সামনে। সাত নম্বর যুক্তরাষ্ট্র ওপেন জিতলেই যেটা হাতের মুঠোয় চলে আসবে। চোট-আঘাতে খুব ভাল প্রস্তুতি নিতে না পারার কাঁটাও রয়েছে। সে সব পাশে সরিয়ে দিয়েই ৩৪ বছরের মার্কিন তারকা বলে দিচ্ছেন, ‘‘উইম্বলডনের পর থেকে খুব বেশি কোর্টে নামতে পারিনি। প্র্যাকটিসও করতে পারিনি সে ভাবে। তবে এখন ফিটনেসটা অনেক ভাল মনে হচ্ছে। প্রতিটা দিন যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটা আরও উন্নত হবে আশা করছি।’’

উইম্বলডনের ফাইনাল খেলে ওঠার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেরিনা কাঁধে যন্ত্রণা টের পান। সেটা এতটাই যে এক সময় মার্কিন তারকার মনে হচ্ছিল, ‘‘কাঁধের এই অবস্থা নিয়ে কী করে জিতলাম নিজেরই অবাক লাগছিল।’’ চোটটা আরও ভোগায় সেরিনাকে। রজার্স কাপ আর ওয়েস্টার্ন অ্যান্ড সাউদার্ন ওপেন থেকে নাম তুলে নিতে হয়েছিল যে জন্য। সঙ্গে অলিম্পিক্স থেকে তৃতীয় রাউন্ডে ছিটকে যাওয়াও রয়েছে। ‘‘আমি যতটা সম্ভব চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেটা যথেষ্ট ছিল না। অলিম্পিক্সেই যেমন ম্যাচে নামার আগে মাত্র দু’দিন প্র্যাকটিস করতে পেরেছি। যেটা একেবারেই আদর্শ প্রস্তুতি নয়, তবে আমার এর চেয়ে বেশি কিছু করা সম্ভব ছিল না,’’ বলেছেন তিনি।

রিওর কোর্টেও সেরিনার খেলা দেখে ভক্তদের অনেকেরই সেটা মনে হয়েছে। বিশ্বের ২০ নম্বর এলিনা সিতোলিনার কাছে স্ট্রেট সেটে হেরে যান সেরিনা। যাঁকে মাস দু’য়েক আগেই ফরাসি ওপেনে ৬-১, ৬-১ উড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সেই খারাপ সময়টা কতটা কাঠিয়ে উঠতে পারবেন মার্কিন চ্যাম্পিয়ন? যাঁর সামনে শুধু স্টেফির রেকর্ড ছাপিয়ে যাওয়াই নয়, সঙ্গে সাত নম্বর যুক্তরাষ্ট্র ওপেন জিতে ক্রিস এভার্টকে টপকে যাওয়া আর দীর্ঘ দিন বিশ্বর‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান ধরে রাখার চ্যালেঞ্জও কিন্তু অপেক্ষা করছে বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামে।

গত সপ্তাহে সিনসিনাটি ওপেনেই সেরিনার এক নম্বরের সিংহাসন হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, যা তিনি টানা ১৮৩ সপ্তাহ ধরে রেখেছেন। বিশ্বের দু’নম্বর জার্মানির অ্যাঞ্জেলিক কের্বারের কাছে। সেরিনা টুর্নামেন্টে নামার আগে প্র্যাকটিস করতে নেমে চোট নিয়ে অস্বস্তি হওয়ায় নাম তুলে নেন। কের্বারের সামনে তাই সুযোগ ছিল টুর্নামেন্ট জিতলেই সেরিনাকে সরিয়ে এক নম্বরে উঠে আসার। কিন্তু সে যাত্রা মার্কিন কিংবদন্তির সিংহাসন কোনও ক্রমে রক্ষা পেয়ে যায় ফাইনালে কের্বার হেরে যাওয়ায়। ক্যারোলিনা পিসকোভার কাছে। শুধু ফিটনেসের সঙ্গে লড়াইয়েই নয়, ২৩ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে কঠিন ড্রয়ের বাধাও টপকাতে হবে সেরিনাকে। যেখানে সেমিফাইনালে মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা তাঁর দিদি ভেনাস উইলিয়ামসের।

তার আগেই অবশ্য কঠিন একটা চ্যালেঞ্জ থাকছে। সেটা প্রথম রাউন্ডেই। রাশিয়ার একাতেরিনা মাকারোভার। রিওয় ডাবলসে সোনাজয়ী মাকারোভার দুরন্ত ফর্মের পাশাপাশি সেরিনার জন্য কাঁটা হয়ে ওঠার রেকর্ডও রয়েছে। ২০১২ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে তিনি সেরিনাকে প্রি-কোয়ার্টারে ছিটকে দিয়েছিলেন। সেরিনা অবশ্য বলছেন, ‘‘কঠিন ম্যাচ তো সবই। মাকারোভা খুব ভাল প্লেয়ার। আমাকে জিততে গেলে সে দিন সেরাটা খেলতে হবে আমি জানি। সবচেয়ে বড় কথা ও খুব ভাল ফাইটার। কখনও লড়াই ছাড়ে না।’’

প্রথম রাউন্ডের প্রতিদ্বন্দ্বীর আরও একটা ব্যাপারও সেরিনার নজরে রয়েছে। সেটা হল বেশি উইনার মারার সুযোগ দেন না রাশিয়ার তরুণী। ‘‘আপনার হয়তো মনে হবে না দেখে যে ও সুপার কুইক। কিন্তু প্রচুর বল ও কোর্টের ওপার থেকে ফেরত পাঠায়। যেটা দারুণ ব্যাপার।’’

তবে চোট বা মাকারোভার মতো যত কঠিনই প্রতিপক্ষ হোক সেরিনা উইলিয়ামস যে কোনও অবস্থাতেই দমবার পাত্রী নন সেটা তাঁর পরের মন্তব্যেই পরিষ্কার। নিজের বিখ্যাত আত্মবিশ্বাসের ঝলক দেখিয়ে সেরিনা বলে দেন, ‘‘উইম্বলডনে এ বার কিন্ত আমার সার্ভিস বেশ ভাল হয়েছিল। আমার মনে হয়েছিল নিজের ইচ্ছে মতো এস সার্ভিসটা মারতে পারছি। তাই কয়েক মাস আগে যদি পারি তা হলে এখন না পারার কোনও কারণ নেই। দেখা যাক কী হয়।’’

সেট না খুইয়ে মূলপর্বে মিনেনি

অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে পারেননি। ফরাসি ওপেনে ছিটকে যান কোয়ালিফায়ারের দ্বিতীয় রাউন্ডে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের যোগ্যতা অর্জন পর্বে সে সব হারের ছায়া পড়তে দিলেন না সাকেত মিনেনি। ভারতের ডেভিসকাপার তৃতীয় রাউন্ডের বাধা টপকে মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা পেয়ে গেলেন। সার্বিয়ান প্রতিদ্বন্দ্বীকে ৬-৩, ৬-০ হারিয়ে। তিনটে রাউন্ডেই কোনও সেট খোয়াননি মিনেনি। সোমদেব দেববর্মন আর য়ুকি ভামব্রির পর তৃতীয় ভারতীয় পুরুষ প্লেয়ার হিসেবে গ্র্যান্ড স্ল্যাম সিঙ্গলসের মূলপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেন তিনি। তবে মূলপর্বে কঠিন ড্রয়ের সামনে বিশ্বের ১৪৩ নম্বর সাকেত। তাঁকে প্রথম রাউন্ডে লড়তে হবে বিশ্বের ৪৮ নম্বর জিরি ভ্যাসেলির বিরুদ্ধে। চেক প্রজাতন্ত্রের প্লেয়ারকে হারাতে পারলে দ্বিতীয় রাউন্ডে বিশ্বের এক নম্বর নোভাক জকোভিচের চ্যালেঞ্জ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

serena williams
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE