Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

খেললাম তো আমরাই, দাবি এলকো সতৌরির

সম্মানের ডার্বি হেরে ভরা চৈত্র মাসেই কি আই লিগ অভিযানে সর্বনাশ দেখে ফেলল ইস্টবেঙ্গল! ম্যাচ শেষে মেহতাব-ডুডুরা যখন ‘জেতা ম্যাচ’ মাঠে ফেলে রেখে একে একে ড্রেসিংরুমে ঢুকছিলেন দেখে মনে হচ্ছিল শবদেহ বহনকারী যাত্রী। টিমের সঙ্গে জড়িত এক সদস্য দরজার বাইরে হতাশায় বলেই বসলেন, “চ্যাম্পিয়নশিপের আশা শেষ! সামনে তিনটে অ্যাওয়ে ম্যাচ।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৫ ০২:৪৭
Share: Save:

সম্মানের ডার্বি হেরে ভরা চৈত্র মাসেই কি আই লিগ অভিযানে সর্বনাশ দেখে ফেলল ইস্টবেঙ্গল!

ম্যাচ শেষে মেহতাব-ডুডুরা যখন ‘জেতা ম্যাচ’ মাঠে ফেলে রেখে একে একে ড্রেসিংরুমে ঢুকছিলেন দেখে মনে হচ্ছিল শবদেহ বহনকারী যাত্রী। টিমের সঙ্গে জড়িত এক সদস্য দরজার বাইরে হতাশায় বলেই বসলেন, “চ্যাম্পিয়নশিপের আশা শেষ! সামনে তিনটে অ্যাওয়ে ম্যাচ। জানি না কী হবে!” রবিবারই রয়্যাল ওয়াহিংডো খেলতে শিলং যাচ্ছে টিম।

কোচ এলকো সতৌরি অবশ্য ভাঙলেও মচকাচ্ছেন না। বললেন, “খেললাম তো আমরাই। ম্যাচের শুরু আর শেষের মিনিটে পরিস্থিতি অনেক সময় নিয়ন্ত্রণে থাকে না। সেকেন্ড হাফে গোলটা ওই সময়েই খেলাম। তবে লম্বা লিগে কখন কী হয় কে বলতে পারে! ইউরোপে লিগের মাঝে ছয়-আট পয়েন্ট ব্যবধানে থেকেও তো অনেক টিম চ্যাম্পিয়ন হয়।” লাল হলুদ কোচ এ কথা বললেও পয়েন্ট টেবল বলছে, চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াই বেশ কঠিনই র‌্যান্টিদের কাছে। এক নম্বর বাগানের চেয়ে আট পয়েন্টে পিছিয়ে ছয় নম্বরে থাকা ইস্টবেঙ্গল।

ডাচ কোচের মন্তব্য শুনে সমর্থকরা উদ্দীপ্ত হতে পারেন। কিন্তু টিমেরই কেউ কেউ বাড়ি ফেরার সময় সতৌরির মন্তব্যের পাল্টা বলে গেলেন, “আই লিগ তো ইউরোপে হয় না। এই হারের পরেও লিগ জয়ের আশা করাটা খুব কঠিন।”

সতৌরিও আশার পাশাপাশি এ দিন আবার এমন সব আশঙ্কার কথা শোনালেন যা চমকে ওঠার মতোই। “টিমে এমন কোনও নেতা নেই যে বাকিদের তাতিয়ে তুলবে। শেষ কুড়ি মিনিটে যা করতে বলেছিলাম তা করেনি ছেলেরা।”

সারদা কাণ্ডে জামিন পাওয়ার পর এ দিনই মাঠে প্রিয় দলের খেলা দেখতে এসেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার। ম্যাচের আগে ফুটবলারদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। কিন্তু একগুচ্ছ সুযোগ নষ্ট করে যে ম্যাচ চার গোলে জেতার কথা সেই ম্যাচ হেরে হতাশার চাদরে মুড়ে বাড়ি ফিরল লাল-হলুদ ব্রিগেড। মাঠ ফেরত হতাশ লাল-হলুদ সমর্থকদের কেউ কেউ কর্তাদের দিকে আঙুল তুলে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে গেলেন, “মার্কি ফুটবলার বার্তোস আর সুসাককে বেছে আনল কারা?” এ দিন বলবন্তের গোলের সময় ধারেকাছে ছিলেন না স্টপার সুসাক।

প্রশ্ন উঠছে এলকোর রণকৌশল নিয়েও। তিনি যখন ডার্বিতে কিপার পরিবর্তন করলেনই তা হলে সেই শুভাশিস রায়চৌধুরীকে আগের স্পোর্টিং ক্লুব ম্যাচে খেলিয়ে তাঁকে বড় ম্যাচের আবহে অন্তর্ভুক্ত করলেন না কেন? তা ছাড়া বাগানের লং বল রুখতে কিপার পরিবর্তন করছেন তা আগাম বলে বিপক্ষকে নিজের রক্ষণের নড়বড়ে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করতে গেলেনই বা কেন? ক্লাব কর্তাদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, টিমে লোবোর মতো বল প্লেয়ার থাকা সত্ত্বেও কেন রফিক ডার্বি ম্যাচেও ৪-৪-২ ডায়মন্ডে ? বাগানের নড়বড়ে বাঁ-দিককে নিশানা বানাতে কেন শুরুতেই তুলুঙ্গার বদলে বলজিত্‌ নয়? টিমের টেকনিক্যাল ম্যানেজারের ভূমিকা ঠিক কী? তিনি কি কোচের সঙ্গে এ সব আলোচনা করেন না? টিম সূত্রে খবর, এ দিন ঘাম-রক্ত ঝরিয়ে সনিকে বোতলবন্দি করে রাখা খাবরাকেও কোচ নাকি তুলে নিতে চাইছিলেন। এলকো আবার যা শুনে বলে গেলেন, “সমর্থকদের মতো মিডিয়ার প্রশ্ন না করাই ভাল।”

আসলে বড় ম্যাচ নিয়ে লক্ষ লক্ষ সমর্থকের আবেগ আর আই লিগে কলকাতার অন্য কোনও দলকে পঞ্চম বা ষষ্ঠ স্থানে রাখা যে এক জিনিস নয় তা এলকো হয়তো এখনও বুঝতে পারছেন না। তাই এখনও বলতে পারছেন, “অনেক বার তো এমনও হয়েছে, লিগের মাঝপথে যারা শীর্ষে থাকে তারা শেষমেশ ট্রফি পায় না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE