Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আশঙ্কা সত্যি করে সেই ব্রাউনের হাতে উইম্বলডন স্বপ্ন শেষ নাদালের

বিপদের গন্ধটা কি তিনি চব্বিশ ঘণ্টা আগেই পেয়েছিলেন? দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রতিপক্ষের নাম ডাস্টিন ব্রাউন জানতে পেরেই রাফায়েল নাদাল বলেছিলেন, ‘‘খুব বিপজ্জনক ম্যাচ হতে চলেছে। ও যে কখন কী করে দেবে কেউ জানে না। খুব অন্য ধরনের টেনিস খেলে।

বৃহস্পতিবারের চমক। নাদাল-পতন।

বৃহস্পতিবারের চমক। নাদাল-পতন।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩৫
Share: Save:

বিপদের গন্ধটা কি তিনি চব্বিশ ঘণ্টা আগেই পেয়েছিলেন?

দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রতিপক্ষের নাম ডাস্টিন ব্রাউন জানতে পেরেই রাফায়েল নাদাল বলেছিলেন, ‘‘খুব বিপজ্জনক ম্যাচ হতে চলেছে। ও যে কখন কী করে দেবে কেউ জানে না। খুব অন্য ধরনের টেনিস খেলে। গত বছর হ্যাল-এ আমাকে হারিয়েছে। ম্যাচ কোন দিকে গড়াবে বলা কঠিন। তবে এ বার আমি ওর জন্য তৈরি থাকার চেষ্টা করব।’’ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় রাউন্ডে কিন্তু ব্রাউন নামক ঝড়ের মোকাবিলায় একদম অসহায় দেখাল বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বরকে। এ বারের উইম্বলডনের সবচেয়ে বড় অঘটনটা ঘটিয়ে যাঁকে ছিটকে দিলেন তিরিশ বছরের জার্মান তরুণ ডাস্টিন ব্রাউন।

ফরাসি ওপেনের রাজপাট খোয়ানোর পর উইম্বলডনের ঘাস থেকেও উৎপাটিত হলেন দু’বারের চ্যাম্পিয়ন রাফায়েল নাদাল। হারলেন ৫-৭, ৬-৩, ৪-৬, ৪-৬। বিশ্বের ১০২ নম্বরের কাছে নতজানু হয়ে কোর্ট ছাড়লেন চোদ্দো গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক।

ম্যাচের শুরু থেকেই কোর্টে নাদালকে কোণঠাসা করে ফেলেছিলেন দৈত্যাকার ব্রাউন। তাঁর বিদ্যুৎগতির নড়াচড়া আর শক্তিশালী সার্ভ সামলাতে হিমশিম খাওয়া নাদালকে রীতিমতো অসহায় দেখায়। বস্তুত যে নাদালকে বিশ্ব চেনে, তাঁর চেয়ে অনেক বেশি ক্লান্ত আর গুটিয়ে থাকা এক প্লেয়ারকে আজ দেখা গেল কোর্টে। ব্রাউন ঠিক যতটা আগ্রাসী আর আক্রমণাত্মক খেললেন, ততটাই যেন আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগলেন নাদাল। সবচেয়ে বড় কথা, বড় পয়েন্টগুলোয় মরিয়া লড়াইটাই দেখা গেল না তাঁর কাছে।

নাদাল-বধের পর উচ্ছ্বসিত ব্রাউন বলেন, ‘‘উইম্বলডনের সেন্টার কোর্টে যে কখনও খেলব সেটাই ভাবিনি। ভেবেছিলাম আজ নেমে গুটিয়ে যাব। কিন্তু খেলতে গিয়ে মনে হল এটা খুব চেনা জায়গা।’’ তিনি যে জেতার ছক কষেই নেমেছিলেন, বুঝিয়ে ব্রাউন বলেন, ‘‘আমার আজ একটাই প্ল্যান ছিল। দারুণ টেনিস খেলা। তাই রাত ন’টার পরেও খেলা গড়াবে, সেই চিন্তা মনেও আনিনি।’’ অন্য দিকে, নাদালের ভবিষ্যৎ নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এর পর যুক্তরাষ্ট্রের হার্ড কোর্টে আর কি তিনি সুবিধা করতে পারবেন? তাঁর পায়ে যে ধরনের চোট তাতে হার্ড কোর্টে তো গত বছর খেলেনইনি। এ বছরও সেই রাস্তায় হাঁটেন কি না, সেটাই দেখার।

এ দিন আবার অল ইংল্যান্ড ক্লাবে এসেছিলেন যুবরাজ চার্লসের স্ত্রী, ডাচেস অব কর্নওয়াল ক্যামিলা। সকালে স্প্যানিশ তারকার সঙ্গে দেখা করে বলেন, তিনি নাদালের টেনিসের মহাভক্ত। সঙ্গে তাঁর সাফল্য কামনা করে বলেন, ‘‘আশা করি এ বার তুমিই জিতবে।’’ কথা মুখ থেকে খসতে যা দেরি! সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্র হয়ে যায়, ইংল্যান্ডের হবু রানি ঘরের ছেলে অ্যান্ডি মারের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বীকে সমর্থন করছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম খবরটা প্রায় লুফে নিয়ে বলা শুরু করে, এটা মারের প্রতি চরম অবিচার হল। ক্যামিলা এমন কথা বললেন কী করে!

মারে দ্বিতীয় রাউন্ডে কোর্টে নেমে দাপটে নেদারল্যান্ডসের রবি হাসকে ৬-১, ৬-১, ৬-৪ চূর্ণ করেন। এব‌ং জেতার পর নিজের কব্জি থেকে খুলে ঘামমাখা সোয়েটব্যান্ড ছুড়ে দেন রয়্যাল বক্সে। পরে নাদাল হারায় কোয়ার্টার ফাইনালে মারে-নাদাল যুদ্ধের সম্ভাবনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়। ক্যামিলার মন্তব্য নিয়ে উত্তাপও কমে।

এ দিকে দর্শকাসনে যতই ইংল্যান্ডের হবু রানি থাকুন, রজার ফেডেরার কেন ঘাসের রাজা, সেটা এ দিন আবার কোর্টের উল্টো প্রান্ত থেকে দেখলেন স্যাম কোয়েরি। দ্বিতীয় সেটে দু’পায়ের ফাঁক দিয়ে যে ফোরহ্যান্ড লবটা মেরে ৫-২ করলেন, সেটাকে এখনই টুর্নামেন্টের সেরা শট বলা শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রথম সেটের গোড়ায় কোয়েরির সার্ভ নিয়ে যৎকিঞ্চিৎ সমস্যায় পড়া বাদ দিলে সাত বারের চ্যাম্পিয়ন ফেডেরার এ দিন খেললেন একেবারে স্ব-মহিমায়। জিতলেন ৬-৪, ৬-২, ৬-২।

ছবি: এএফপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE