Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পেটপুজোতেও থিমের চমক শহর জুড়ে

ইতিমধ্যেই বিতর্ক জমেছে বেশ। বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ বাঙালির নিন্দায় একজোট। ধর্মে মন না দিয়ে দুর্গাপুজোয় ভোজেই মন অধিকাংশ শহরবাসীর। এ নিন্দায় যে কান যাবে না বিশেষ এবং পুজো যে সেই কাটবে রসনাবিলাসেই, তা দিব্যি বোঝা যায় এ শহরের রেস্তোরাঁর মহলের প্রস্তুতি দেখে।

সুচন্দ্রা ঘটক, তিয়াষ মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:০৩
Share: Save:

যে যা বলুক ভাই, উৎসবে বাঙালির চব্য-চষ্য চাই!

ইতিমধ্যেই বিতর্ক জমেছে বেশ। বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ বাঙালির নিন্দায় একজোট। ধর্মে মন না দিয়ে দুর্গাপুজোয় ভোজেই মন অধিকাংশ শহরবাসীর। এ নিন্দায় যে কান যাবে না বিশেষ এবং পুজো যে সেই কাটবে রসনাবিলাসেই, তা দিব্যি বোঝা যায় এ শহরের রেস্তোরাঁর মহলের প্রস্তুতি দেখে। বাঙালি দুর্গাপুজোয় যে শুধু নিজেদের রান্নায় থামে না, বরং নিন্দকদের প্রদেশের আমিষ-নিরামিষেও নজর থাকে বেশ। আরাধ্য আর আহার্যের মধ্যে বিশেষ দূরত্বও থাকে না মাঝেমাঝে।

তেমনটা হয়েছে এ বারও। কোনও মণ্ডপ দর্শনের আগে ঘুরে আসা যায় ছ’ফুট উচ্চতার চকলেট-দেবীর আরাধনা দেখতে। বিমানবন্দরের কাছে হোটেল হলিডে ইন-এ ৬০০ কিলোগ্রাম চকলেট দিয়ে সেখানার প্রেস্টি শেফ বানিয়েছেন এই নতুন রূপের প্রতিমা। দক্ষিণ কলকাতার সপ্তপদীতে আবার পেটপুজো পর্ব শুরুর আগে আমন্ত্রণ জানাবেন জীবন্ত মা দুগ্গা স্বয়ং!

নানা রাজ্যের বিরিয়ানি বিলাসে এমনিতেই এ রাজ্য প্রথম সারিতে। উৎসব-পার্বণ যেন একেবারেই ফিকে তা ছাড়া। ফলে লোকে যে যা-ই বলুক, এ পুজোতেও পেটপুজো জমতে পারে ঔউধ ১৫৯০-এর রান বিরিয়ানি, কিমা কলেজি, মুর্গ ইরানির মতো ‘পুজোয় নিষিদ্ধ’ নানা পদে। উত্তর ভারতীয় মটন শাহি স্ট্যু, আফগানি চাপলি কবাব চেখে দেখা যায় পার্ক স্ট্রিটের জিটি রুটেও। উত্তর ভারতের রকমারি পরোটা খাইয়ে ইতিমধ্যেই নাম করেছে ‘পরহাঠেওয়ালি গলি’। এ পুজোয় সেখানে নিয়মিত রান্নার পাশে থাকছে বাঙালি ভোগে টুইস্ট। কখনও হট বেজিল চিলি, কখনও চটপটা টিক্কা মসালার মেজাজে চেটেপুটে খাওয়া যাবে খিচুড়ি। আর নানা প্রদেশের আমিষ রান্না নিয়ে এক ছাদের তলায় বসতে হলে চলে যাওয়া যায় চার্নকসেও। হায়দরাবাদি নিজাম-এ মুর্গ, উত্তরের জিরা মুর্গ টিক্কা, বাঙালি কাঁচা লঙ্কা ইলিশ ভাপা একই সঙ্গে তৈরি থাকছে সেখানে।

তবে পাঁচ-সাত পদের খাঁটি বাঙালি ভোজ ছাড়া এখনও দুর্গাপুজো জমে না অনেকের। ফলে তার ব্যবস্থাও চলছে জোরকদমে, যাতে নিয়ম মেনে কিছু কিছু বাঙালি রান্না অন্তত চেখে দেখার সুযোগ থাকে এই সময়টায়। পুজো স্পেশ্যাল মেনুতে তাই বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় এ-পার বাংলার পাশাপাশি ও-পারের নানা অঞ্চলের রসনাও জায়গা করে নিচ্ছে। তাজ বেঙ্গলের সোনারগাঁও-এ যেমন থাকছে পাবনার মুর্গি, ৬ বালিগঞ্জ প্লেসের নানা শাখায় থাকছে ও-পারের নাম করা চিংড়ি ভুনা। এ পারের চিংড়ির মালাইকাড়ি আর ও-পারের মেজাজে ইলিশ ভাপা দিয়ে দুই বাংলার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখছে হোটেল হিন্দুস্থান ইন্টারন্যাশনালের মতো পাঁচ তারা থেকে শুরু করে বৈদিক ভিলেজ, ওহ্! ক্যালকাটা, মার্কোপোলো, গেটওয়ে হোটেলের মতো অতি পরিচিত সব নামও। এক্কেবারে অন্য পথে হাঁটা রেস্তোরাঁ-দলও এ সময়টায় পুজোর মেজাজ আনতে রাখছে বাঙালিয়ানার ছোঁয়া। যেমন করেছে মধ্য কলকাতার মাংকি বার। রোজের পরিচিত রকমারির সঙ্গে সেখানে থাকছে ভুনা খিচুড়ি, ফিশ কচুরির ফিশ থালা, চিকেন থালা।

পুজোর আহ্লাদে অন্য রকম সাজও আছে, যা এ-পার, ও-পারের তকমার বাইরে। কিন্তু সে রসনা কলকাতার অতি আপন। পুরনো পার্ক স্ট্রিটের স্টেক-চিলি ফিশ-লিভার ফ্রাইয়ের স্বাদ নিতে চলে যাওয়া যায় ‘চ্যাপ্টার টু’-তে কিংবা শহরের অতি আপন চিনা মেজাজের জাম্বো প্রন-সি ফুড মেফুন খেতে পা রাখা যায় চাউম্যানের কোনও এক শাখায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Theme restaurant Food Menu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE