আধুনিক লাইফস্টাইলের চাপে স্ট্রেসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে ধূমপান, মদ্যপানের নেশা যেমন বাড়ছে, তেমনই ক্রমশ বাড়ছে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সমস্যাও। আর সেই সমস্যায় লেসবিয়ান (সমকামী মহিলা), গে (সমকামী পুরুষ), বাইসেক্সুয়ালরা (উভকামী) বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির গবেষক গিলবার্ট গোনজালেস বলেন, “আমাদের গবেষণায় উঠে এসেছে, এলজিবি (লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল) প্রাপ্তবয়স্করা সমাজে সংখ্যালঘু হওয়ার স্ট্রেসে ভুগতে থাকেন। পারিবারিক ও সামাজিক দুই ক্ষেত্রেই একাকিত্বের কারণে অনিদ্রা, মানসিক ও শারীরিক সমস্যার শিকার হন তাঁরা। এর ফলেই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে।
নেশা
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে বাইসেক্সুয়াল পুরুষদের মধ্যে মদ্যপানের নেশায় আসক্ত হওয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি। গবেষণায় অংশগ্রহণকরীদের মধ্যে যেখানে ১০.৯ শতাংশ বাইসেক্সুয়াল পুরুষ মদ্যপানের নেশায় আসক্ত, সেখানে হেটেরোসেক্সুয়ালদের মধ্যে এই হিসেব বলছে ৫.৭ শতাংশ ও সমকামী মধ্যে ৫.১ শতাংশ।
ধূমপানের ক্ষেত্রে হিসেবটা একই রকম। বাইসেক্সুয়াল পুরুষদের মধ্যে যেখানে ৯.৩ শতাংশ ধূমপানের নেশায় আসক্ত, সেখানে হেটেরোসেক্সুয়াল ও গে-দের মধ্যে এই সংখ্যা ৬ ও ৬.২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাড়ছে কাজের চাপ, সন্তান চাইছেন না শহুরে মহিলারা
মহিলাদের মধ্যে হিসেবের এই পার্থক্য আরও প্রকট। বাইসেক্সুয়াল মহিলারা যেখানে ১১.৭ শতাংশ মদ্যপানের নেশায় আক্রান্ত, সেখানে লেসবিয়ান ও হেটেরোসেক্সুয়ালদের মধ্যে এই সংখ্যাটা ৮.৯ শতাংশ ও মাত্র ৪.৮ শতাংশ। আবার ধূমপানের নেশার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন লেসবিয়ান মহিলারা। তাদের মধ্যে ৫.২ শতাংশ ধূমপানের নেশায় আসক্ত, বাইসেক্সুয়ালরা ৪.২ শতাংশ ধূমপানের নেশায় আসক্ত ও হেটেরোসেক্সুয়ালরা ৩.৪ শতাংশ।
মানসিক সমস্যা
সাইকোলজিক্যাল স্ট্রেস বা মানসিক চাপে ভোগার সমস্যাও ক্ষেত্রেও গে ও হেটেরোসেক্সুয়াল পুরুষদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছেন বাইসেক্সুয়াল পুরুষরা। তাদের মধ্যে ৪০.১ শতাংশ মানসিক সমস্যায় ভোগেন। গে-রা ২৫.৯ শতাংশ অবসাদগ্রস্ত ও হেটেরোসেক্সুয়াল পুরুষদের মধ্যে ১৬.৯ শতাংশ অবসাদে ভুগছেন।
বাইসেক্সুয়াল মহিলাদের মধ্যে অবসাদে ভোগার প্রবণতা আরও বেশি। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যেখানে ৪৬.৪ শতাংশ মহিলা অবসাদগ্রস্ত, সেখানে লেসবিয়ানরা ২৮.৪ শতাংশ ও হেটেরোসেক্সুয়াল মহিলারা ২১.৯ শতাংশ নানা ভাবে মানিসক সমস্যার শিকার।
শারীরিক সমস্যা
এ ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে বাইসেক্সুয়াল ও লেসবিয়ান মহিলারা নানা রকম ক্রনিক শারীরিক সমস্যায় ভুগে থাকেন। হেটেরোসেক্সুয়ালরা শারীরিক ভাবে অনেকটাই সুস্থ।
মনোবিদরা মনে করেন সমকামী ও উভকামীদের সমাজ ‘প্রান্তিক’ হিসেবে চিহ্নিত করা, সমাজের কলঙ্ক হিসেবে নিজেদের দেখাই এর প্রধান কারণ।
জেএএমএ ইন্টানরাল মেডিসিন এই অনলাইন জার্নালে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy