—প্রতীকী চিত্র।
বাড়িতে সরস্বতী পুজো, কাজের চাপে সময় নেই বাজার করার। এমন পরিস্থিতি এখন ঘরে ঘরে। তবে তার সমাধানসূত্রও বেরিয়ে এসেছে। অতি সহজে মাউসের কয়েক ক্লিকেই ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে পুজোর যাবতীয় সামগ্রী। শুধু দিন কয়েক আগে নাম-ঠিকানা দিয়ে বুক করে ফেললেই হল।
পুজো মানে তো শুধু প্রতিমা, ফলমুল আর পুরোহিত ঠিক করাই নয়, থাকে আরও বহু কাজ। এক-এক পুজোর আলাদা আলাদা আচার। সেই অনুযায়ী পুরোহিতের থেকে দশকর্মার তালিকা নিয়ে দোকানে-দোকানে ঘুরে পরিমাণ মতো জিনিস কেনা রীতিমতো সময়সাপেক্ষ কাজ। কোথাও মিলবে কাগজের মালা তো অন্য এক প্রান্তে মিলবে কাঁচা দুধ, ঘি। ব্যস্ততার মধ্যে সেই ঝক্কি সামলানো সহজ নয় অধিকাংশের কাছেই। সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এ বার শুধু মোবাইল বা কম্পিউটরে ক্লিক করলেই হল। সব জিনিস পৌঁছে যাবে বাড়িতে।
বাড়ি বাড়ি পুজোর সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার একটি ওয়েবসাইটটি তৈরি করেছেন দক্ষিণ কলকাতার চার বাঙালি। অনলাইনে পুজোর জিনিসপত্র পৌঁছে দেওয়ার কয়েকটি ওয়েবসাইটের দেখা মিলছিল কিছু দিন ধরেই। তৈরি হয়েছিল কিছু অ্যাপও। কিন্তু বাঙালিদের সব দেবদেবীর আলাদা-আলাদা পুজোর উপাচার মিলত না সেখানে। যেমন দুর্গাপুজোর নীলপদ্ম, শনিপুজোর সাঁই গাছের কাঠ, গণেশ পুজোর হলুদ ফুল—এ বার সব রকম জিনিসের খোঁজ মিলছে ওই ওয়েবসাইটে। কোন দেবতার পুজো, সেই নাম দিয়ে সামগ্রী কিনলেই মিলে যাবে সমস্ত উপকরণ।
ইতিমধ্যে এই ওয়েবসাইটেই সরস্বতী পুজোর উপকরণ কিনে ফেলেছেন এ শহরের অনেকেই। পুজোর আগে দশকর্মা-সহ ফলফলাদি, সময়মতো সবই পৌঁছে যাচ্ছে বাড়িতে। যেমন দক্ষিণ কলকাতার শর্মী সিংহ জানালেন, ‘‘অফিস শেষে ভিড়ের মধ্যে ঘুরে ঘুরে বাজার করে দেখতাম, পুজোর দিনটাতেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। তার পরে আবার পুরোহিত বলতেন, এটা নেই, ওটা আনা হয়নি। ঠাকুরই রক্ষা করেছেন।’’ শুধু বাড়িতেই নয়, অনেক স্কুল-কলেজ থেকে ইতিমধ্যেই এই ওয়েবসাইটে অগ্রিম কেনাকাটা করা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন ওয়েবসাইটের এক কর্তা শৌর্য বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘খুবই সাড়া পড়ছে। অনেকেই কার্ড ব্যবহার করে কেনাকাটা করছেন এই ওয়েবসাইট থেকে।’’
সরস্বতী থেকে গণেশ, প্রত্যেক পুজোর নির্দিষ্ট প্যাকেজ রয়েছে। অর্ডার দিলে সঙ্গে মিলছে ফলমূল, মিষ্টিও। আবার বাঙালির পুজোর বক্সে যেমন পঞ্চশস্য, পঞ্চরত্ন, আসন, অঙ্গুরীয়, মধুপক্ষের বাটি, তিরকাঠি, হরতকি, মাশকড়াইয়ের মতো জিনিস রাখতেই হচ্ছে, তেমনই অবাঙালিরদের পুজোর বাক্সে থাকছে পাঁচ মেওয়া, রৌলি, মৌলি, লবঙ্গ, গিরীগোলা, মজিদের মতো প্রয়োজনীয় উপকরণ। বাঙালির পুজোবাক্সে হোমের উপকরণ-বেলকাঠ থাকছে, অবাঙালির প্যাকেজে থাকছে আমকাঠ।
পুজো-ওয়েবসাইটের কর্তারা জানাচ্ছেন, কিছু দিনেই আলপনা-রঙ্গোলির উপকরণ এবং পুজোর বাসনপত্রও মিলবে। এই সব জিনিসের পরিষেবার কর, জিএসটি-র হিসেবের জন্য একটু দেরি হচ্ছে এই কাজে। এমনকী, ধীরে ধীরে নানা দেশেই এই পরিষেবা ছড়িয়ে দেওয়া পরিকল্পনা করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy