খেতে কে না ভালবাসে? সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে রসনাতৃপ্তি শুধু আর খেয়ে আর খাইয়ে-র সুখে আটকে নেই। এখন খাবার দেখিয়েও সুখ। রান্না করে খাওয়ার আগে বা রেস্তোরাঁয় গিয়ে খাওয়ার আগে মোবাইল ক্যামেরায় ধরে রাখতেই হবে ধোঁয়া ওঠা সেই সুস্বাদু খাবারের ছবি। আর তারপর নিমেষে সে ছবি ইনস্টাগ্রাম পেজে। খাওয়া শেষ হতে হতেই হাজার ইউজার গুণমুগ্ধ সেই ছবিতে। তবেই খাবার ঠিক মতো হজম হবে!
হজম তো হয়ে গেল। কিন্তু এতে কি আশ মিটল? ইনস্টাগ্রামে যতই লোভনীয় খাবারের ছবি পোস্ট করবেন, যতই অন্যদের পোস্ট করা খাবারের ছবি দেখবেন ততই আরও বেশি ইচ্ছা জাগবে খাওয়ার, লোভে পড়ে খেতে খেতে হয়ে যেতে পারে ইটিং ডিজঅর্ডার পর্যন্ত। সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষকরা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব প্রসঙ্গে জানাচ্ছেন, অল্পবয়সীদের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া যে নেগেটিভ প্রভাব ফেলছে তার কারণে হওয়া হীনমন্যতা, অবসাদের মতোই ইটিং ডিজঅর্ডার একটা বড় সমস্যা। ক্রমাগত সেলেবদের পোস্ট করা ছবি দেখে হতে পারে অর্থোরেক্সিয়া নার্ভোসার মতো ইটিং ডিজঅর্ডার। এই ডিজঅর্ডার হল ‘অ্যান অবসেশন উইথ হেলদি ইটিং’, অর্থাত্ স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি।
যারা অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচেতন, তাদের মধ্যে হাই অর্থোরেক্সিয়া নার্ভোসা দেখা যায়। যার থেকে হয়ে যেতে পারে অ্যানোরেস্কিয়া নার্ভোসা। এই ডিজঅর্ডারের লক্ষণগুলো হল কৃশকায় চেহারা, সব সময় মোটা হয়ে যাওয়ার ভয় পাওয়া এবং রোগা থাকার প্রাণপণ চেষ্টা।
আরও পড়ুন: ফেসবুক নয়, ইনস্টাগ্রামই আসল ভিলেন, বলছে সমীক্ষা
গবেষকরা ৬৮০ জন সোশ্যাল মিডিয়ার ইউজারদের নিয়ে গবেষণা করেন। তাদের সোশ্যাল মিডিয়া ইউজ, খাদ্যাভ্যাস ও অর্থোরেক্সিয়া নার্ভোসার লক্ষণ রয়েছে কিনা পরীক্ষা করেন। যারা ইনস্টাগ্রামে খুব বেশি সক্রিয় তাদের মধ্যে অর্থোরেক্সিয়া নার্ভোসায় ভোগার প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু অন্য কোনও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের সঙ্গে এই সমস্যায় ভোগার সম্পর্ক দেখা যায় না। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪৯ শতাংশের অর্থোরেক্সিয়া নার্ভোসা সিম্পটম দেখা গিয়েছে। অথচ, সারা বিশ্বের এক শতাংশ মানুষও এই রোগে আক্রান্ত নন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy