Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

অরবিন্দকে ঠেকাতে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন অমিত

যে অরবিন্দ কেজরীবাল এক সময় বিজেপির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছিলেন, এ বারে তাঁর অস্তিত্ব খর্ব করতেই ঘুঁটি সাজাচ্ছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। গত ফেব্রুয়ারিতে ৪৯ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন কেজরীবাল। তার পর দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন। এর মেয়াদ শেষের আগেই সরকার গড়ার চেষ্টায় মাঠে নেমেছিল বিজেপি। কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির (আপ) অনেক বিধায়কই ভোটে যেতে রাজি নন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৪ ০৩:০৫
Share: Save:

যে অরবিন্দ কেজরীবাল এক সময় বিজেপির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছিলেন, এ বারে তাঁর অস্তিত্ব খর্ব করতেই ঘুঁটি সাজাচ্ছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

গত ফেব্রুয়ারিতে ৪৯ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন কেজরীবাল। তার পর দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন। এর মেয়াদ শেষের আগেই সরকার গড়ার চেষ্টায় মাঠে নেমেছিল বিজেপি। কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির (আপ) অনেক বিধায়কই ভোটে যেতে রাজি নন। এই বিধায়কদের সমর্থনে সরকার গড়তে চেয়েছিল বিজেপির একাংশ। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী জোড়াতালি দিয়ে সরকার গড়ার থেকে নতুন করে ভোটে যাওয়ারই পক্ষপাতী। সঙ্ঘ নেতৃত্বও তাই চান। তাই অমিত শাহ চান, দিল্লিতে নতুন করে নির্বাচন হলে কেজরীবালের শক্তি একেবারে খর্ব করে দিতে। তাতে কংগ্রেস যদি প্রধান বিরোধী দল হয়ে ওঠে, তাতেও তাঁদের কোনও আপত্তি নেই।

শাহের ঘনিষ্ঠ এক নেতা বলেন, কেজরীবাল যে ‘স্তরের’ রাজনীতি করেন, তাতে পাল্লা দেওয়া বিজেপি বা কংগ্রেস-কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। এখন অন্য দলের বিধায়কদের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়লে রোজ হইচই করবেন কেজরীবাল। আপ নেতা ইতিমধ্যেই বিজেপির বিরুদ্ধে বিধায়ক পিছু কুড়ি কোটি টাকা খরচের অভিযোগ তুলেছেন। বিজেপি তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছে। কিন্তু এর পরে অন্য দলের সমর্থনে সরকার গড়লেও আপ প্রধান বিরোধী দল হিসেবে থেকে যাবে বিধানসভায়।

তাই বিজেপি সভাপতি মনে করছেন, ভোটে গিয়ে আপের শক্তি ক্ষয় করাই এখন সঠিক কৌশল। লোকসভা ভোটে দিল্লিতে একটিও আসন পায়নি আপ। শুধু পঞ্জাবে চারটি আসন পেয়েছে। দিল্লিে ত৭টি আসনই জিতেছে বিজেপি। আপ-এর আগের মতো দাপট আর নেই। তাই এই সময়েই তাদের নিশ্চিহ্ন করার রণকৌশল নিতে চান অমিত শাহ।

দাপট যে আর আগের মতো নেই, তা বুঝতে পারছেন আপ নেতারাও। তাই হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, জম্মু ও কাশ্মীর এবং ঝাড়খণ্ড বিধানসভার ভোটে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেজরীবাল। ২১ অগস্ট পঞ্জাব বিধানসভার দু’টি আসনে উপনির্বাচন। সেখানে অবশ্য লড়াই করবে আপ।

বিজেপি সূত্রের মতে, আগেই আপ-এর থেকে মধ্যবিত্তের মোহভঙ্গ হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে এর প্রতিফলন ঘটেছে। কিন্তু নিম্নবিত্ত, বিশেষ করে বিভিন্ন রাজ্য থেকে যাঁরা দিল্লিতে রোজগারের জন্য এসেছেন, তাঁদের মধ্যে কেজরীবালের জনভিত্তি রয়েছে। তা মোকাবিলার জন্য দিল্লি বিজেপির নতুন সভাপতি সতীশ উপাধ্যায়কে অমিত শাহ নির্দেশ দিয়েছেন। তাই সতীশ নিজের টিমে পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাখণ্ডের প্রতিনিধিদের রাখতে চাইছেন। সতীশ জানান, “এই বিষয় নিয়ে বিজেপি সভাপতির সঙ্গে আমার আলোচনা হয়েছে। খুব শীঘ্রই দলের সাংগঠনিক কাঠামোয় বদল করা হবে।” যখন পূর্বাঞ্চলের মানুষরা নিজেদের রাজ্যে যান, তখনই দিল্লিতে ভোট চায় বিজেপি। তত দিন সংগঠনকে একটু গুছিয়ে নিতে চাইছে তারা।

আপ নেতা মণীশ সিসৌদিয়া অবশ্য বলেছেন, “আমরা ভোটের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু বিজেপি ভোটে যেতে চায় কি না, সেটা আগে ঠিক করুক। ক্ষমতা তো এখন ওদের হাতে। ভোট ঘোষণা হচ্ছে না কেন?”

এই প্রস্তুতিপর্ব চলতে চলতেই অগষ্টের পরে দিল্লিতে আবার রাষ্ট্রপতি শাসনের মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arvind kejriwal amit shah bjp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE