শিবসেনার সঙ্গে মিলে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ার সম্ভাবনা এখন প্রবল। তার আগে নিতিন গডকড়ীকে মুখ্যমন্ত্রীর দৌড় থেকে পিছু হটতে বাধ্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
লোকসভা ভোটের পরে মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় বিজয়ের কৃতিত্ব বিজেপি মোদীকেই দিচ্ছে। মোদীও তা পরোক্ষে কবুল করছেন। গত কাল সিয়াচেনে গিয়েও মোদী জয়ের কৃতিত্ব নিয়েছেন। জয়ের খুশিতে সব মন্ত্রীকে নৈশভোজ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামিকাল সাংবাদিকদের মুখোমুখিও হবেন। পরশু এনডিএ-র সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা। দুই রাজ্য জয়ের পরে মোদী বুঝিয়ে দিতে চান, কেন্দ্র হোক বা বিজেপি শাসিত রাজ্য, সর্বত্রই মূল কর্ণধার তিনি।
দলীয় সূত্রে খবর, দেবেন্দ্র ফডণবীসের নাম মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য বিজেপির অন্দরে নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তার পরে নিতিন গডকড়ী যে ভাবে নিজের শক্তি প্রদর্শন করতে শুরু করেছিলেন, সেটি আদৌ ভাল চোখে দেখেননি মোদী। বিজেপির এক নেতার মতে, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেও এ বারে পুরোদস্তুর নিজের নিয়ন্ত্রণ রাখতে চান প্রধানমন্ত্রী। মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিংহ চৌহান ও রাজস্থানের বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আদৌ মধুর নয় মোদীর। লোকসভা ভোটের আগে শিবরাজকে তো মোদীর বিকল্প মুখ হিসেবেই তুলে ধরেছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণীরা। আর এখন বসুন্ধরার সঙ্গেও অল্পবিস্তর সংঘাত বাধতে শুরু করেছে মোদীর।
এই অবস্থায় মোদীও মধ্যপ্রদেশে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও রাজস্থানের ওম মাথুরের মতো নেতার গুরুত্ব বাড়াচ্ছেন। এই দুই নেতাকেই হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রে ভোটের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাই গডকড়ীর মতো হেভিওয়েট নেতাকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী করে সে রাজ্যে আর একটি ক্ষমতাকেন্দ্র তৈরি করতে চান না প্রধানমন্ত্রী।
গডকড়ীর শক্তি প্রদর্শন যে মোদী পছন্দ করেননি তা জানতে পারেন সঙ্ঘ নেতারা। গত কাল দীপাবলির দিনে দেবেন্দ্র ফডণবীস পৌঁছে যান গডকড়ীর বাড়িতে। গডকড়ীও সুর নরম করে দেবেন্দ্রর উপর আস্থা দেখান। এর পিছনে সঙ্ঘের প্রভাবই কাজ করেছে বলে দলীয় সূত্রে খবর।
আগামী সোমবার রাজনাথ সিংহ ও জগৎপ্রকাশ নাড্ডা মুম্বই গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন। তার পর রাজ্যপাল বিজেপিকে সরকার গড়ার আমন্ত্রণ জানাবেন। আগামী বুধবারের মধ্যে নতুন সরকার শপথ নেবে মহারাষ্ট্রে। তার মধ্যে শিবসেনার সঙ্গেও সমঝোতা চূড়ান্ত করে ফেলতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু শিবসেনার সঙ্গে সমঝোতার সময়েও মোদী নিজের শর্ত মানাতে বাধ্য করছেন উদ্ধব ঠাকরেকে।
উদ্ধবকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শিবসেনা সরকারে থাকলেও কথায় কথায় মোদীকে যেন আক্রমণ করা না হয়। শিবসেনার প্রস্তাব মতো কেন্দ্রে তাদের দলের আর এক জনকে মন্ত্রক দেওয়ার কথা বিবেচনা করা হলেও রাজ্যে আদৌ বেশি গুরুত্ব পাবে না তারা। বিজেপি যে মহারাষ্ট্রে এখন ‘বড় দাদা’, সেটা স্বীকার করে নিতে হবে উদ্ধবকে। উদ্ধবও বুঝছেন, বিজেপির শর্ত না মানলে মুম্বই পুরসভা থেকে কেন্দ্রে মন্ত্রিত্ব- সব খোয়াতে হবে।
তাই এখন বিজেপির সঙ্গে সমঝোতায় আসতে হচ্ছে উদ্ধবকে। বিজেপির এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, উদ্ধব চাইলেও মোদী এখনও পর্যন্ত দেখা করেননি। রবিবার এনডিএ-র বৈঠকেও আপাতত কেবল সাংসদদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উদ্ধব সাংসদ নন। তাই তিনি আমন্ত্রিত নন।
তবে দলীয় সূত্রে খবর, বিজেপিকে বার্তা দিতে দলীয় সাংসদদের নৈশভোজে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন শিবসেনা প্রধান।
আগামিকাল মোদী এক হাসপাতাল উদ্বোধন করতে মুম্বই যাচ্ছেন। তখন তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন উদ্ধব। এক বিজেপি নেতার কথায়, “যদিও বিষয়টি নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর উপরে। বিজেপিতে মোদীই এখন শেষ কথা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy