Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চিনকে ঠেকাতে নজর নেপালেই

সম্প্রতি বিমস্টেক রাষ্ট্রগোষ্ঠীর বিদেশমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দিতে কাঠমান্ডু গিয়ে নেপালকে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বড় রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন সুষমা স্বরাজ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১৬
Share: Save:

ডোকলাম নিয়ে চিনের সঙ্গে দ্বৈরথ দু’মাস ছাড়িয়ে গিয়েছে। ভারতের আশঙ্কা, এরপর ভারত-চিন-নেপাল সীমান্তে কালাপানি এলাকাতেও নাক গলানো শুরু করবে বেজিং। এই পরিস্থিতিতে আগামী সপ্তাহে ভারত সফরে আসছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা। আসন্ন সফরে কাঠমান্ডুর মন জয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে সাউথ ব্লক।

সম্প্রতি বিমস্টেক রাষ্ট্রগোষ্ঠীর বিদেশমন্ত্রী সম্মেলনে যোগ দিতে কাঠমান্ডু গিয়ে নেপালকে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বড় রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন সুষমা স্বরাজ। বিদেশ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘পরিকাঠামো, এলপিজি সরবরাহ, জলবিদ্যুৎ, শিল্প এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো হবে।’’ মেচি নদীর উপর সেতু তৈরির বিষয়ে মউ সই হবে। ভারতের ‘ন্যাশনাল হাইওয়ে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন’ নেপালের ভদ্রপুর থেকে বিহারের গলগলিয়া পর্যন্ত সেতু বানানোর প্রস্তাব দিয়েছে। খরচ হবে ১৪০ কোটি টাকা। ৫৬০০ মেগাওয়াটের পঞ্চেশ্বর বিদ্যুৎ প্রকল্পটিকে আরও বড় করা নিয়েও কথা হবে দেউবার আসন্ন সফরে। ভারত-নেপাল সীমান্তে মহাকালী নদীতে ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে একটি বাঁধ তৈরি করবে ভারত।

কেন এত আয়োজন?

আরও পড়ুন: পাঁচতারা হোটেল, অবৈধ সুযোগ-সুবিধা কেন? মন্ত্রীদের ধমক মোদীর

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, কিছু দিন ধরেই নেপালে চিনের প্রভাব-বৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা বেড়েছে সাউথ ব্লকের। দু’দেশের মধ্যে যৌথ সামরিক মহড়া, ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্পে চিন-নেপাল সহযোগিতা, দরপত্র না ডেকেই চিনা সংস্থাকে নেপালের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বরাত দিয়ে দেওয়া দিল্লির উদ্বেগ বাড়িয়েছে। নেপালের নয়া সংবিধান তৈরির পরে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশীয় সম্প্রদায়ের বিক্ষোভের ফলেও তিক্ত হয়েছিল ভারত-নেপাল সম্পর্ক। ডোকলাম নিয়ে চিনের সঙ্গে টানাপড়েনের মধ্যে নেপালকেও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত চিনের অন্যতম শীর্ষ কূটনীতিক ডোকলাম পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন নেপালি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে। কাঠমান্ডুকে চিন বোঝাচ্ছে, ভারত অন্য দেশের সার্বভৌমত্বে নাক গলাচ্ছে। লিপুলেখ ও ঝিংসাং চুলি, এই দু’টি এলাকায় নেপাল, চিন ও ভারতের সীমান্ত মিলেছে। এর মধ্যে লিপুলেখ নিয়ে কাঠমান্ডুর অস্বস্তি রয়েছে। সেখানকার কালাপানি এলাকাকে ভারত-নেপাল দু’দেশই নিজেদের বলে দাবি করে।

২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদীর চিন সফরে স্থির হয় নয়াদিল্লি বেজিং-এর সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াবে এই লিপুলেখ গিরিপথ দিয়েই। তখন নেপালের পার্লামেন্টে দাবি ওঠে, ভারত ও চিন তাদের বিবৃতি থেকে লিপুলেখের উল্লেখ পরিহার করুক। এটা আন্তর্জাতিক আইনের বিরোধী।

চিন চেষ্টা করে গিয়েছে লিপুলেখ নিয়ে দায় দিল্লির কাঁধে চাপিয়ে সে দেশে ভারত-বিরোধী মনোভাবে উস্কানি দেওয়ার। এখন ডোকলামে ভারতের ভূমিকাকে তুলে ধরে ত্রাসের সঞ্চার করা হচ্ছে কাঠমান্ডুতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE