আদিবাসী মেলায় তিরন্দাজি, কবাডি, নাচ গানের প্রতিযোগিতা ছেড়ে দর্শকরা ভিড় জমিয়েছেন মেলার শেষ প্রান্তের ঘেরা জায়গাটায়। ৫০ মিটার মতো লম্বা একটা মাঠের চারপাশে বেড়া। তার বাইরে ভিড় উপচে পড়েছে। ১৮ জোড়া প্রতিযোগীও তৈরি। রেফারির বাঁশি বাজতেই শুরু হল হাততালির ঝড়। পাকুড়ের লিট্টিপাড়ার ডুমারিয়া গ্রামের আদিবাসী মেলা। আর এ বার সেখানকার অভিনব ‘আইটেম’, চুম্বন প্রতিযোগিতা। তিন দিনের মেলার সেরা আকর্ষণ। তবে তাকে ঘিরে দানা বেঁধেছে বিতর্কও।
মেলার মূল উদ্যোক্তা লিট্টিপাড়ার জেএমএম বিধায়ক সাইমন মারান্ডি জানান, ‘‘ভেবেছিলাম কেউই শেষ পর্যন্ত এই ‘চুম্বন প্রতিযোগিতা’ অংশ নেবেন না। তাই মেলার লিফলেটে এই প্রতিযোগিতার উল্লেখ করা হয়নি। গত কাল বিকেলে মেলায় মুখে মুখে এই প্রতিযোগিতার কথা প্রচার করা হয়। দেখা গেল ১৮ জোড়া প্রতিযোগী নাম লিখিয়েছেন।’’ প্রতিযোগিতার শর্ত ছিল একটাই, নারী-পুরুষের এই জোড়কে স্বামী-স্ত্রী হতে হবে। একই সঙ্গে চুম্বনরত অবস্থায় তাঁদের স্টার্টিং লাইন থেকে ফিনিশিং লাইনে পৌঁছতে হবে। যাঁরা আগে পৌঁছবেন তাঁরাই বিজয়ী হবেন। প্রথম পুরস্কার ৯০০ টাকা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার যথাক্রমে ৭০০ ও ৫০০ টাকা।
গত কাল রাত আটটা নাগাদ মেলায় চুম্বন প্রতিযোগিতা শুরু হতেই হাততালির সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় দর্শকদের ভিডিও রেকর্ডিংও। দর্শকরা হাততালি দিয়ে প্রতিযোগীদের উৎসাহ দিতে থাকেন। প্রাথমিক জড়তা দ্রুত কাটিয়ে চুম্বনরত অবস্থায় তাঁরা এগোতে থাকেন ফিনিশিং লাইনের দিকে। প্রতিযোগিতার শেষে এক প্রতিযোগী লক্ষ্মণ মারান্ডি বলেন, ‘‘প্রথমে একটু লজ্জা লাগছিল। কিন্তু এটাকে খেলা হিসেবে নেওয়ার পরে জড়তা কেটে গেল।’’
ডুমারিয়া ও আশপাশের গ্রামের ১৮ জন আদিবাসী দম্পতি যে এমন স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এগিয়ে আসবেন তা ভাবতে পারেননি সাইমনও। তিনি জানান, শুধু নব বিবাহিত আদিবাসী দম্পতিই নয়, প্রৌঢ় দম্পতিরাও এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
তবে এই প্রতিযোগিতা ঘিরে বির্তক শুরু হয়েছে। পাকুরের জেলা বিজেপি সম্পাদক দেবীধান টু়ডু বলেন, ‘‘এই ধরনের প্রতিযোগিতা আদিবাসী সংস্কৃতির বিরোধী। ওই বিধায়ক তাঁর এলাকায় আদিবাসীদের নূন্যতম পরিষেবাটুকুও দিতে পারেননি। সে দিক থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই এখন চমক দেওয়ার চেষ্টা করছেন।’’ যদিও সাইমন মারান্ডি এই বিতর্ক উড়িয়ে দিয়েছেন, ‘‘এই প্রতিযোগিতা আদিবাসীদের দাম্পত্য বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy