সংসদ অচল। জমি আইন সংশোধনের প্রশ্নে সরকার এমনিতেই পিছনের দিকে হাঁটছে! কিন্তু মোদী সরকারকে এর পরেও রেহাই দিতে নারাজ বিরোধীরা। বরং জমি আইন সংশোধন বিল নিয়ে তাঁদের আপত্তি ও দাবির বিষয়গুলি গুছিয়ে নিতে আজ এনসিপি নেতা শরদ পওয়ারের বাড়িতে বৈঠক করল কংগ্রেস, সিপিএম, তৃণমূল, সংযুক্ত জনতা দল-সহ প্রধান বিরোধী দলগুলি। শুধু তাই নয়, সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে সেই বৈঠকে উপস্থিত রইল বন্ধু দল নবীন পট্টনায়কের বিজেডি, এমনকী এনডিএর শরিক শিবসেনাও! রাজনৈতিক সূত্রের খবর, কংগ্রেস নেতৃত্ব চাইছেন, মোদী সরকারের বিলটির বিরুদ্ধে সংসদে একটি যৌথ প্রস্তাব আনতে। এ ব্যাপারে অ-বিজেপি দলগুলিকে একজোট করার লক্ষ্যেই কৌশলে শরদ পওয়ারকে সামনে রাখা হয়েছে।
জমি আইন সংশোধন বিল খতিয়ে দেখতে গত অধিবেশনে সংসদীয় যৌথ কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই কমিটির রিপোর্ট ৩ অগস্ট সংসদে পেশ হওয়ার কথা। সেই রিপোর্টে সুনির্দিষ্ট ভাবে বিরোধীরা কী মত পেশ করবেন তা নিয়ে আজ আলোচনা হয় পওয়ারের বাড়িতে। বৈঠকের পরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘শিল্প করিডর, গ্রামীণ পরিকাঠামো, সরকারি-বেসরকারি যৌথ প্রকল্প, আবাসন ও প্রতিরক্ষা কারখানা তৈরি— এই পাঁচটি ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণের এক্তিয়ার সরকার নিজের হাতে রাখতে চেয়েছে, বিরোধী দলগুলি প্রত্যেকেই তার বিরুদ্ধে মত জানাবে। তা ছাড়া, কংগ্রেসের দাবি হল, সরকার জমি অধিগ্রহণ করলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে বাজার দরের চার গুণ দাম ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে। সে জমি গ্রামেই হোক বা শহরে।
এর পাশাপাশি কংগ্রেস বর্তমান জমি আইনটিই বলবত রাখার দাবি জানাবে। অন্য দিকে সিপিএমের দাবি, সরকার বেসরকারি শিল্প সংস্থার জন্য জমি অধিগ্রহণ করে দিলে ওই শিল্পের মুনাফার অংশ কৃষকদের দিতে হবে।
বৈঠকে তৃণমূলের তরফে ছিলেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বৈঠকে জানান, সংশোধন বিলটি যাতে সরকার প্রত্যাহার করে নেয়, সেই মর্মেই সরকার ও যৌথ কমিটির কাছে দলীয় তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছে। একই ভাবে বিলটি প্রত্যাহারের দাবিতে চিঠি দিয়েছে বিজু জনতা দলও।
প্রশ্ন হল, বিরোধী দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে কী বলল শিবসেনা? যৌথ কমিটিতেই বা কি মত জানাবে তারা? কংগ্রেস নেতাদের দাবি, শিবসেনা তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন।
আর শিবসেনার সূত্রে বলা হচ্ছে, সংশোধনী বিলটি সম্পর্কে বিভিন্ন মহলের আপত্তি সরকারের গোচরে রয়েছে। তার ভিত্তিতে সরকার নিজে থেকেই মত বদলায় কি না, তা দেখার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তারা। এমনিতেই তামাম বিরোধী দল বিলের বিরুদ্ধে যৌথ প্রস্তাব আনলে সেটা যথেষ্ট চিন্তার কারণ বিজেপির। তায় শরিক শিবসেনাও যেন বেঁকে বসার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে সমানে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আগামী রদবদল তাদের পছন্দ না হলে, তার ফলও ভুগতে হতে পারে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে। সব মিলিয়ে জমি আইন নিয়ে অশনিসংকেতই দেখছে সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy