আক্রমণই আত্মরক্ষার সেরা অস্ত্র।
আজ এই কৌশল নিয়েই সংসদের বাজেট অধিবেশনের ইনিংস শুরু করল তৃণমূল। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, তাপস পালকে নিয়ে সংসদে আক্রমণের মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা ছিল তৃণমূল নেতৃত্বের। তাই সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে প্রবল আক্রমণ শানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিপিএম এবং বিজেপি তাপস পালকে নিয়ে প্রথম দিনেই তৃণমূলকে জাতীয় স্তরে কোণঠাসা করবে বলেই মনে করেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু বাস্তবে তাপস পালের নামই উচ্চারিত হয়নি সংসদের দু’টি কক্ষে।
তবে পূর্ব পরিকল্পনা মতো মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছেন তৃণমূলের সাংসদেরা। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আজ উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর জায়গায় লোকসভায় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কল্যাণবাবু নিজে তো বটেই, কাকলি ঘোষদস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুলতান আহমেদ, শতাব্দী রায়ের মতো সাংসদেরা ওয়েলে এসে তুমুল স্লোগান দিয়েছেন। অন্য দিকে রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন তাঁর বক্তব্যে মূল্যবৃদ্ধি এবং সাধারণ মানুষের দুর্দশা নিয়ে সরব হয়েছেন। সেখানে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির জবাবের সময় ডেরেক এবং জেটলি বাদানুবাদে জড়িয়েও পড়েন। এর পরে কক্ষত্যাগ করেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদেরা।
অন্যদিকে আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে রাজ্যের কাছে তাপস পাল কাণ্ডের রিপোর্টের জন্য তাগাদা পাঠানো হয়েছে। গত সপ্তাহেই এই রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও পদক্ষেপই করেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। আজ তাই ফের চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্র। তবে সরকারি স্তরে বিষয়টি নিয়ে সক্রিয়তা থাকলেও প্রশ্ন উঠেছে কেন তাপস পাল নিয়ে আজ রা কাড়ল না বিজেপি অথবা সিপিএম? রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, বিজেপি-র পক্ষ থেকে আজ এই আলোচনা তোলার সুযোগ বা পন্থাই ছিল না। গোটা বিরোধী পক্ষ এককাট্টা হয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। আর সিপিএম সাংসদ সেলিমের মতে, “আজ আগে থেকেই স্থির ছিল মূল্যবদ্ধি নিয়ে আলোচনা হবে। এই জাতীয় সমস্যার বিষয়টিকে সরিয়ে দিয়ে যদি আমরা তাপস পালের মন্তব্য নিয়ে চর্চা শুরু করতাম তা হলে তা বেসুরো লাগত। সংসদীয় রাজনীতিতে আমাদের বিচ্ছিন্ন করা সহজ হত।”
তবে আজ তোলা হয়নি বলে যে বিষয়টি নিয়ে ভবিষ্যতেও বামেরা নিশ্চুপ থাকবে, এমনটা নয়। বাম সূত্রের বক্তব্য, তাদের আসল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হল তাপস পালের বিষয়টিকে কিছুটা কৌশলের সঙ্গে জিইয়ে রাখা। আজ কলকাতায় এমনতিই তাপসের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া নিয়ে হইচই চলছে। ফলে তাপস বিতর্ক আজ পুরোদস্তুর চালু। যখন থিতিয়ে যাবে তখন আবার সংসদে বিষয়টিকে সামনে নিয়ে আসার কথা ভাবছেন বাম নেতৃত্ব। তবে অবশ্যই এই অল্প কয়েক জন সাংসদের দ্বারা যে সেটা সম্ভব হবে না, তা জানে সিপিএম। তাই অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও ঘরোয়া ভাবে সমর্থন জোগাড়ের চেষ্টা চলছে।
আজ সংসদ শুরু হওয়ার পরই কেন্দ্র বিরোধী স্লোগানে মুখর হয় তৃণমূল। বার বার অধিবেশন মুলতুবি হয়। সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের আলোচনা হলেও কৌশল নিয়ে দু’দল এক মত হতে পারেনি। রাজ্যসভায় কেন্দ্রকে মূল্যবৃদ্ধি ও রেলের ভাড়া বাড়ানো নিয়ে আক্রমণ করেন ডেরেক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy