Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বাবরি-মামলায় দলেই ক্ষোভ মোদীকে ঘিরে

বাবরি-মামলায় লালকৃষ্ণ আডবাণীরা রেহাই না পাওয়ার পর লালু প্রসাদ বলেছিলেন, নিজের অধীনে থাকা সিবিআইকে দিয়ে রাষ্ট্রপতি পদের দৌড় থেকে প্রবীণ নেতাকে সরানোর ষড়যন্ত্র করলেন নরেন্দ্র মোদী।

লালকৃষ্ণ আডবাণী

লালকৃষ্ণ আডবাণী

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৫৩
Share: Save:

বাবরি-মামলায় লালকৃষ্ণ আডবাণীরা রেহাই না পাওয়ার পর লালু প্রসাদ বলেছিলেন, নিজের অধীনে থাকা সিবিআইকে দিয়ে রাষ্ট্রপতি পদের দৌড় থেকে প্রবীণ নেতাকে সরানোর ষড়যন্ত্র করলেন নরেন্দ্র মোদী। আজ মামলায় অভিযুক্ত আর এক বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ার বললেন, ‘‘হতে পারে, লালু ঠিক বলছেন।’’

কাটিয়ারকে নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের উদ্বেগ নেই। কিন্তু তাঁরা বুঝতে পারছেন, অসন্তোষ জমছে। সুপ্রিম কোর্টের গত কালের রায়ের পর বিজেপির অনেকের মনেই প্রশ্ন, চাইলে কি নব্বই ছুঁইছুঁই নেতাদের আদালতের চক্কর কাটা থেকে বাঁচাতে পারতেন না প্রধানমন্ত্রী? আডবাণী-ঘনিষ্ঠ নেতারাও বলছেন, প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রীকে রাইসিনার দৌড় থেকে সরানোটাই মোদীর লক্ষ্য। বরং আগামী অন্তত দু’বছর ধরে আদালতের শুনানিকে ঘিরে ধাপে ধাপে হিন্দুত্বের যে হাওয়া উঠবে, পরের লোকসভা ভোটে তারই ফলভোগ করতে চান মোদী। অথচ হেনস্থা পোহাতে হবে আডবাণীদের।

মোদীর প্রতি এই নেতাদের অনাস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, গত কাল রাতে আডবাণীর বাড়িতে গিয়ে মুরলীমনোহর জোশী বলে এসেছেন, তিনি নিজস্ব কৌঁসুলি নিয়োগ করবেন। বস্তুত, বাবরি মামলায় অভিযুক্ত বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আজই আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জোশী। অনেকেই তলে তলে বলছেন, বিরোধীরা আখছার অভিযোগ করেন তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অপব্যবহার হচ্ছে। হতে পারে, বাবরি মামলা নিয়ে সিবিআইয়ের আজকের অবস্থান ইউপিএ জমানার থেকে আলাদা নয়। তবু পথ খোঁজা যেত। এখন কংগ্রেসের নেতারাও ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, আডবাণীদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ফায়দা তুলতে চাইছেন মোদী। যে কারণে বিরোধিতার মাত্রা তীব্র করেনি সনিয়া-রাহুলের দলও।

আরও পড়ুন: দলেই ক্ষোভ মোদীকে ঘিরে

গত কাল রাতেই পরিস্থিতি সামাল দিতে শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মোদী। সভাপতি অমিত শাহ অভিযুক্ত সব নেতাদের জনে-জনে ফোন করে বলেন, দল তাঁদের পাশে আছে। বিজেপির এক নেতার কথায়, দল এখনই রামমন্দির নিয়ে উগ্র হিন্দুত্বের পথে হাঁটতে চাইছে না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আগামী দু’বছর পর্যন্ত মামলা গড়ালে লোকসভা পর্যন্ত এমনিতেই ধাপে ধাপে হাওয়া উঠবে। যে কারণে উমা ভারতীর আজকের অযোধ্যা সফর বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দল চাইছে, আদালতের মাধ্যমেই নিষ্কলঙ্ক হয়ে ফিরে আসুন নেতারা।

বিজেপি নেতৃত্বের অবশ্য যুক্তি, আদালতে ষড়যন্ত্রের মামলা ধোপে টিকবে না। কারণ, রাজ্যপাল হওয়ার সুবাদে কল্যাণ সিংহ রেহাই পেয়েছেন। ষড়যন্ত্র মামলায় এক জন অভিযুক্তকে জেরা করা না গেলে বাকিরাও রেহাই পাবেন। এই কারণেই আদালতের নাগালের বাইরে রাখতে রাজ্যপাল হিসেবে কল্যাণের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। আর অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের পৃথক মামলার শুনানি এখনই হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে ২০১৯-এর আগে নরম হিন্দুত্ব আর উন্নয়নের মোড়কেই বাজিমাত করতে চান মোদী। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, দলের নেতারা নির্দোষ। আদালতই অবস্থান বদলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE