Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দলের চাপে জবাব নিমরাজি বরুণের, আরও ঝাঁঝ দিদির

দলের চাপে কংগ্রেসের গাঁধীদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে হল বিজেপির গাঁধীকে। দুই গাঁধী পরিবারের চাপানউতোর তাতে উস্কে উঠল আরও। বিজেপি বুঝতে পারছিল, বরুণ গাঁধী জবাব না দিলে একতরফা আক্রমণ চলবে। বাড়বে তীব্রতা। সে কারণে দলের চাপেই আজ প্রিয়ঙ্কার আক্রমণের জবাবে মুখ খোলেন বরুণ। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মেনকা-পুত্রের উদ্দেশে আরও ঝাঁঝালো আক্রমণ শানান সনিয়া-কন্যা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৪ ০৪:১৮
Share: Save:

দলের চাপে কংগ্রেসের গাঁধীদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে হল বিজেপির গাঁধীকে। দুই গাঁধী পরিবারের চাপানউতোর তাতে উস্কে উঠল আরও। বিজেপি বুঝতে পারছিল, বরুণ গাঁধী জবাব না দিলে একতরফা আক্রমণ চলবে। বাড়বে তীব্রতা। সে কারণে দলের চাপেই আজ প্রিয়ঙ্কার আক্রমণের জবাবে মুখ খোলেন বরুণ। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মেনকা-পুত্রের উদ্দেশে আরও ঝাঁঝালো আক্রমণ শানান সনিয়া-কন্যা।

কংগ্রেসে গাঁধী পরিবার শেষ কথা হলেও বিজেপিতে বরুণের সেই গুরুত্ব নেই। এ বারের ভোটে নরেন্দ্র মোদীই তাদের একমাত্র মুখ। অথচ রাহুল গাঁধী ও প্রিয়ঙ্কারা বরুণ গাঁধীকে আক্রমণ করে কৌশলে প্রচারের মুখ ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তারা চাইছে, ভোটটা যেন কোনও ভাবেই গাঁধী বনাম গাঁধীর লড়াইয়ে পরিণত না হয়। এই পরিস্থিতিতে বরুণকে চাপ দিয়েই দিদির বিরুদ্ধে মুখ খুলিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। নিমরাজি বরুণ জানিয়েছেন, তিনি আদৌ পথভ্রষ্ট নন। এবং নরেন্দ্র মোদীই দেশকে শক্তিশালী সরকার দিতে পারেন বলে তিনি মনে করেন। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফের বরুণের বিরুদ্ধে সরব হন প্রিয়ঙ্কা। তবে এ বারও পারিবারিক সম্পর্ককে রেয়াত করেননি তিনি। তাঁর কথায়, “এটা কোনও পারিবারিক চা-চক্র নয়, আদর্শের লড়াই। দেশের সামাজিক ও ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামোকেই ধ্বংস করতে উদ্যত কোনও গোষ্ঠীতে নাম লেখালে সন্তানকেও ক্ষমা করব না।”

নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থানে অনড় থাকলেও প্রিয়ঙ্ক-বরুণ কেউই কারও নাম করেননি। বিজেপির প্রয়াত নেতা প্রমোদ মহাজন এক সময় বরুণকে বিজেপিতে নিয়ে এসেছিলেন কংগ্রেসের গাঁধী পরিবারের বিরুদ্ধে টক্কর দেওয়ার জন্য। কিন্তু বরুণ সে সময়ই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, পারিবারিক আক্রমণ তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। প্রিয়ঙ্কা এ বারের নির্বাচনে ভাইকে বিপথগামী বলে আক্রমণ করার পরেও এই ক’দিন চুপ থেকেছেন বরুণ। ফলে তাঁর মা জবাব দিলেও বরুণ তাঁর দাদা রাহুল বা দিদি প্রিয়ঙ্কার বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি।

বরুণ এ দিন মুখ খুললেন বটে, তবে তাঁর এত দিনের অবস্থান মেনেই মনে করিয়ে দিয়েছেন, গত এক দশকে কোনও পরিবারের সদস্য বা রাজনৈতিক দলের নেতা কারও ক্ষেত্রে তিনি শিষ্টাচারের লক্ষ্মণরেখা অতিক্রম করেননি। রাজনীতির মান খাটো করে ব্যক্তিগত আক্রমণের পরিবর্তে বেকারি, দুর্নীতি, দারিদ্র, অশিক্ষার মতো প্রসঙ্গ নিয়েই সরব হওয়া উচিত। প্রিয়ঙ্কার অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে এক বারও তাঁর নাম না করে বরুণ শুধু সতর্ক করে দিয়েছেন, তাঁর নীরবতাকে দুর্বলতা মনে করার কোনও কারণ নেই।

বিজেপি সূত্রের মতে, মেনকা গাঁধীর সঙ্গে সনিয়ার সম্পর্কে তিক্ততা থাকলেও বরুণের সঙ্গে রাহুল, বিশেষ করে প্রিয়ঙ্কার সম্পর্ক বরাবরই ভাল। নিয়মিত যোগাযোগও রয়েছে তাঁদের মধ্যে। সনিয়াও স্নেহ করেন বরুণকে। ক’দিন আগে বরুণও অমেঠীতে রাহুলের কাজের প্রশস্তি করেন। বিজেপি কিন্তু ভোটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্কের এই বাঁধনকে ভাল লক্ষণ বলে মনে করেন না। সে কারণেই বরুণকে উস্কে দিয়ে বিতর্কটাকে রাজনৈতিক মাত্রায় বেঁধে রাখতে চেয়েছেন তাঁরা। আদর্শের প্রশ্নে বরুণ-প্রিয়ঙ্কার তরজায় হয়েছেও সেটাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

barun gandhi priyanka vadra loksabha election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE