Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

প্রেমিকার চড়ে ভাঙল বিয়ে, ভাইয়ের গলায় মালা কনের

প্রেমের জেরে বিবাহ-বিভ্রাট! শেষমেশ অবশ্য মধুরেণ সমাপয়েৎ। তবে মাঝখানের ঘটনাক্রমের জেরে পাল্টে গিয়েছেন বরবাবাজি। আগে কনের সঙ্গে মণ্ডপে বসছিলেন দাদা। মাঝখানে কেমন যেন সব গণ্ডগোল হয়ে গেল। তার পরই কনে বেঁকে বসলেন, এ বিয়ে করবেন না।

অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য।

অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য।

সংবাদ সংস্থা
হরিদ্বার শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:২১
Share: Save:

প্রেমের জেরে বিবাহ-বিভ্রাট! শেষমেশ অবশ্য মধুরেণ সমাপয়েৎ।

তবে মাঝখানের ঘটনাক্রমের জেরে পাল্টে গিয়েছেন বরবাবাজি। আগে কনের সঙ্গে মণ্ডপে বসছিলেন দাদা। মাঝখানে কেমন যেন সব গণ্ডগোল হয়ে গেল। তার পরই কনে বেঁকে বসলেন, এ বিয়ে করবেন না। এখন উপায়? শেষমেশ সেই পাত্রের ছোট ভাইয়ের সঙ্গেই বিয়ে হল কনের। রীতিমতো নিয়ম-নীতি মেনে। ঠিক যেমনটা হওয়ার কথা ছিল। হরিদ্বারের আভদিপুরহাল গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার। তবে নাম-গোত্র প্রকাশ করতে রাজি হননি দু’পক্ষের কেউই।

কিন্তু পাত্র বদলে গেল কেন?

এর পিছনের কাহিনি মনে করতে গিয়ে এখনও শিউরে উঠছেন আত্মীয়-পরিজন। বিয়ে মিটলেও বিভ্রাটের ঘোর কাটেনি তাঁদের। অথচ সকাল থেকে সব ঠিকঠাকই চলছিল। বিয়েও শুরু হয়েছিল নিয়ম মেনে। মাল্যদান-পর্ব শুরু হয় হয়। এমন সময়ই ‘তিনি’ রণমূর্তিতে ঢুকলেন বিবাহ-আসরে। তিনি মানে বরের প্রাক্তন প্রেমিকা। অন্তত তেমনই দাবি করেন ওই মহিলা। ঢুকেই প্রথমে বরকে সপাটে চার-পাঁচটা বিরাশি সিক্কার থাপ্পড়। আশপাশ থেকে রে রে করে ছুটে আসেন পরিজনেরা। নিরস্ত করার চেষ্টা করেন মহিলাকে। কিন্তু প্রবল ক্ষোভে তখনও তিনি ফুটছেন। থামায় কার সাধ্য? চড়-চাপড়ের দমক কমলে প্রাক্তন প্রেমিকার হুঙ্কার, ভুলেও যেন অন্য মহিলাকে বিয়ে করার কথা না ভাবেন ‘সৎ-পাত্র’। কারণ মহিলার দাবি, তাঁর সঙ্গে আগেই আইনি বিয়ে সেরেছেন ওই তরুণ। অতএব আর কাউকে বিয়ে করার প্রশ্নই ওঠে না। এর পরও যদি তিনি বিয়ে করলে তাঁকে পুলিশে দেবেন, শাসানি দিয়ে বিয়ের আসর থেকে বেরিয়ে যান ওই মহিলা।

মালা হাতে বরবাবাজি তখন থরথর করে কাঁপছেন। মুখ কাঁচুমাঁচু। আত্মীয়-পরিজনের চোখেমুখে তীব্র উদ্বেগ, হতাশা। ঠিক তারই মধ্যে দ্বিতীয় তোপটি দাগলেন লেহঙ্গা-চোলিতে দাঁড়িয়ে থাকা কনে। এক মহিলাকে যিনি এ ভাবে ঠকান, তাঁকে কিছুতেই বিয়ে করবেন না, ঘোষণা করলেন জোর গলায়। শুনে তো বরের পরিজনদের আত্মারাম খাঁচাছাড়া। মানসম্মান গোটাটাই প্রায় গঙ্গার জলে মিশে গিয়েছে। এখন কনে যদি বিয়ে করবেন না বলে বেঁকে বসেন, তা হলে তো বাকি যে টুকু সম্মান রয়েছে, তা-ও আর থাকবে না। এমনটা তো হতে দেওয়া যায় না। এ দিকে কনের পরিবার তাঁর সিদ্ধান্তে সমর্থন জানাচ্ছে। তা হলে উপায়?

বরপক্ষ শেষমেশ দৌড় দিলেন পঞ্চায়েতের কাছে। কী ভাবে সম্মান বাঁচে, তার নিদান দিক পঞ্চায়েত, পায়ে পড়লেন সকলে। সমাধানও মিলল। বিয়ে হবে। তবে পাত্রটি বদলানো দরকার। দাদার জায়গায় বরং পাত্রের পিঁড়িতে বসুক ছোট ভাই। বাকিটা একই থাক। একই রকম রোশনাই, খাওয়া-দাওয়া, আনন্দ-উৎসব। পঞ্চায়েতের নিদান মনে ধরল কনে ও তাঁর পরিবারের। আর নতুন পাত্র? তাঁর দিকে আর তাকানোর সাহস করেননি কেউ। হবু বৌদি কি না এখন তাঁর স্ত্রী।

প্রজাপতির নির্বন্ধ একেই বলে বোধহয়! বিভ্রাট-পর্বের পর শান্তিতে বিয়ে মিটে যাওয়ায় এমনটাই হয়তো মনে মনে ভাবছেন পরিজনেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE