রেশন কার্ড থেকে ভোটার কার্ড থেকে পাসপোর্ট, সবই এখন দেদার নকল হচ্ছে। এই অবস্থায় ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’ বা পুলিশি যাচাইয়ের চিরাচরিত প্রক্রিয়া ছাড়াই পাসপোর্ট দেওয়ার নতুন ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে পড়ছে। প্রশ্নটা নিরাপত্তার। প্রশ্নটা সুযোগসন্ধানীদের সামনে অনায়াসে সীমান্ত পেরোনোর দরজা হাট করে খুলে দেওয়া নিয়েও।
এত দিন পুলিশ আগে তদন্ত করে দেখত, আবেদনকারীর নথিপত্রে সব তথ্য ঠিক আছে কি না। তিনি ভারতীয় নাগরিক কি না। পুলিশ সন্তোষজনক রিপোর্ট দিলে তবেই পাসপোর্ট পেতেন আবেদনকারী। সেই ন্যূনতম পুলিশি ছাঁকনিটাই তুলে নেওয়া হচ্ছে। বিদেশ মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত, প্রথম বার পাসপোর্টের জন্য আবেদন করলে পুলিশি রিপোর্ট ছাড়াই তাড়াতাড়ি পাসপোর্ট দিয়ে দেওয়া হবে। আবেদনের সঙ্গে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড দিলে এবং তার সঙ্গে নির্দিষ্ট বয়ানের একটি ‘এফিডেভিট’ বা হলফনামা জমা দিলেই
মিলবে পাসপোর্ট।
পুলিশ ভেরিফিকেশন কি উঠেই যাচ্ছে? বিদেশ মন্ত্রক জানাচ্ছে, পুলিশি তদন্ত হবেই। তবে সেটা আবেদনকারী পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে। আসলে পাসপোর্টের চাহিদা ক্রমশই বাড়ছে। এই মুহূর্তে ভারতের প্রায় সাড়ে ছ’কোটি মানুষের হাতে পাসপোর্ট রয়েছে। শুধু ২০১৫ সালে পাসপোর্ট দেওয়া হয়েছে এক কোটির বেশি। জরুরি কারণে অনেকেরই তাড়াতাড়ি পাসপোর্টের দরকার হয়। কিন্তু পুলিশি যাচাইয়ে সময় লাগে অনেক। তাই এই নতুন ব্যবস্থা।
যাঁরা সুরক্ষার প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের বক্তব্য, ভোটার কার্ড থেকে বহু নথি জাল হচ্ছে। এমনকী সীমান্ত টপকে এ দেশে ঢুকে ঘুষ দিয়ে সহজেই পাওয়া যাচ্ছে সেই সব নথি। এই ভাবে বাঁকা পথে নথি বানিয়ে পাসপোর্ট হাতিয়ে কেউ দুষ্কর্ম করে বিদেশে পালালে সেটা রুখবে কে?
রিজিওনাল পাসপোর্ট অফিসার গীতিকা শ্রীবাস্তবের আশ্বাস, পাসপোর্ট দেওয়ার পরে পুলিশি তদন্তে যদি দেখা যায় আবেদনকারী ভারতীয় নন, তা হলে সেই পাসপোর্ট বাতিল করে দেওয়া হবে। তখন বিশ্বের যে-কোনও বিমানবন্দরে গেলেই সফরকারী ধরা পড়ে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy