বন্যার জলে আটকে পড়া গাড়ি উদ্ধারের চেষ্টা করছেন স্থানীয়রা। রবিবার মণিপুরের থৌবালে। ছবি: এএফপি।
ধসে বিধ্বস্ত জৌমল গ্রামে উদ্ধার কাজ চালাতে হেলিকপ্টারে নিয়ে যাওয়া হল বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ানদের।
মণিপুরের অবস্থা এখনও শোচনীয়। আজ বৃষ্টি কমলেও রাজ্যের প্রায় সব নদী বিপদসীমার কাছাকাছি বইছে। তিন দিনে একের পর এক ছোট সেতু ভেসে বা ভেঙে গিয়েছে। বড় সেতুগুলি কতক্ষণ প্রবল জলের তোড় সহ্য করতে পারবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। একাধিক বাঁধে ফাটল ধরেছে। আতঙ্কে দলে-দলে মানুষ ঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন।
থৌবাল জেলা ও মায়ানমার সীমান্তের অনেক গ্রাম রাজ্যের অন্য অংশের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, বৃষ্টি কমায় নদীগুলির জল আর বাড়ছে না। অনেক রাস্তা থেকে জল সরে গিয়েছে।
অসম রাইফেল্স সূত্রে জানানো হয়েছে, গত কাল জৌমালে মৃতের সংখ্যা ৪ জন। আরও ৮ জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ধসে চাপা পড়েছিল ২১টি বাড়ি। গভীর রাতে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার ৬ জনকে অসম রাইফেল্স শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ দিন তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।
থৌবালে হেইরকের উপরে সেতু ভেঙেছে। তাই ওই জেলার সঙ্গে রাজ্যের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। লাংমেইডং গ্রামে এক ব্যক্তি ভেসে গিয়েছেন। সরকারি তরফে জানানো হয়েছে, থৌবাল, চান্ডেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা সম্ভব হয়নি। খেংজোই মহকুমায় জৌমলের ধস ছাড়াও হোল্লেংজাং, ওয়াং ও টুইটুং গ্রামের অনেক অংশ ধসে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। চান্ডেল সদর থেকে রওনা হওয়া রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী টেংনাউপালের কাছে ধসের জন্য এগোতে পারেনি। পরে আকাশপথে একটি দলকে জৌমলে পাঠানো হয়।
বন্যার জেরে বিপজ্জনক অবস্থায় ঝুলছে রেললাইন। রবিবার রাজস্থানের সিরোহি জেলার ধনেরায়। ছবি: পিটিআই।
ইম্ফল থেকে মোরে যাওয়ার রাস্তায় বোংগিয়াং ও লোকচাওয়ের মধ্যবর্তী অংশে জাতীয় সড়কে একাধিক অংশে ধস নেমেছে। ইম্ফলের কাসোম খুল্লেনে ধসের জেরে ভূমিকম্পের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বলে স্থানীয় মানুষ জানান। সেখানে কমিউনিটি হলের মেঝে ও দেওয়াল ফেটে গিয়েছে।
এমন বিপর্যয় রাজ্যে আগে কখনও দেখা যায়নি। ত্রাণ শিবির তৈরি, ধসে আটক মানুষদের উদ্ধার, মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন মানুষের কাছে খাবার পৌছনো, বিদ্যুৎ সংযোগ ঠিক করা, পানীয় জল সরবরাহের লাইন মেরামত, সড়ক সংস্কার নিয়ে হিমশিম হচ্ছে রাজ্য সরকার।
গত রাতে মিনাল নদীর উপরে থাকা লোহার সেতু ভেঙে পড়ে। ফলে মায়ানমার থেকে নির্মাণ সামগ্রী আনার পথও বন্ধ। মণিপুর সরকার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলির মানুষকে সাহায্য করার জন্য মায়ানমার সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে। সীমান্তের অতিরিক্ত জেলাশাসকরাও মায়ানমার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy