ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা ঢেলে সাজতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সব রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে কী ভাবে ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থায় গতি আনা যায় তা নিয়ে কেন্দ্রকে নির্দিষ্ট প্রস্তাব দিতে বলেছে শীর্ষ আদালত।
দাগি সাংসদদের হটাতে সম্প্রতি উদ্যোগী হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই সাংসদদের বিরুদ্ধে চলা ফৌজদারি মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে আইন মন্ত্রক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এই প্রসঙ্গে রাজ্যসভায় একটি প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রাজনীতিকদের নামে থাকা এফআইআর হল মাথার উপর ঝুলে থাকা তলোয়ার। এর ফলে নেতাদের অস্বস্তির মুখেও পড়তে হয়।” তাই সেগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন মোদী। তাঁর মতে, কোনও নেতা দোষী প্রমাণিত হয়ে আসন ছাড়তে বাধ্য হলে রাজনৈতিক দলগুলির কাছেও বার্তা যাবে। ফলে আগামী পাঁচ বছরে সংসদকে অপরাধীমুক্ত করা সম্ভব হবে। পরে ওই পদ্ধতি বিধানসভা বা পুরসভাগুলির ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করা যেতে পারে।
এর পরে সাংসদদের বিরুদ্ধে মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য রোডম্যাপ তৈরির কাজে হাত দেয় আইন মন্ত্রক। কিন্তু ন্যাশনাল প্যান্থার্স পার্টির প্রধান ভীম সিংহের করা একটি মামলার শুনানিতে আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, কেবল একটি শ্রেণির মামলাকে গুরুত্ব দিলেই বিচারব্যবস্থায় গতি আসবে না। প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের মতে, সরকারের উচিত সার্বিক ভাবে বিচারব্যবস্থার পরিকাঠামো উন্নয়নে মন দেওয়া। কেননা নিম্ন আদালতগুলির পরিকাঠামো দুর্বল। সেগুলিতে উপযুক্ত সংখ্যক কর্মীও নেই। এই সমস্যার সমাধান হলে তবেই বিচারে গতি আসবে। প্রধান বিচারপতির আক্ষেপ, “আমার নিজেরই সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রধান বিচারপতি হিসেবে আরও আদালত তৈরি আমার পক্ষে সম্ভব নয়।” তাঁর মতে, “সুশাসনের জন্য দ্রুত ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। মামলা বছরের পর বছর ঝুলে থাকা গণতন্ত্রের পক্ষে আদৌ শুভ নয়।”
সাংসদদের চেয়ে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি ও মহিলাদের বিরুদ্ধে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন বলে আজ ইঙ্গিত দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বেঞ্চের এই ইঙ্গিত সাংসদদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে কেন্দ্রের উদ্যোগে কিছুটা হলেও জল ঢেলে দিল বলে মনে করছে আইন মন্ত্রকের একাংশ।
অ্যাটর্নি-জেনারেল মুকুল রোহতগিকে এই বিষয়ে কিছু নির্দিষ্ট নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ। কোর্টের বক্তব্য, “সব রাজ্যের মুখ্যসচিব ও আইনসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করুক কেন্দ্র। বিচারে গতি আনতে কোন পথে এগোনো হবে তা নিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy