বাবা-মেয়ের উপর হামলা করল দুষ্কৃতীরা। দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আজ সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দ্বারভাঙা শহরের জনাকীর্ণ রাস্তায়। ঘটনার পরে স্থানীয় মানুষ দুই দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে। তাদের মারধর করে শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি মোটর বাইক ও দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে।
জখম ছাত্রী ও তার বাবার নাম ভাবনা এবং অরুণ কুমার। ভাবনা দ্বারভাঙা ডেন্টাল কলেজের চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রী। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অরুণ কুমার একটি বিমা কোম্পানিতে চাকরি করেন। বছর পাঁচেক আগে মেয়ে ভাবনাকে তিনি পটনায় পাঠিয়েছিলেন মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য। জয়েন্টের পরীক্ষার পরে ভাবনা দ্বারভাঙার ডেন্টাল কলেজে সুযোগ পান। ভাবনা পটনায় পরীক্ষার প্রস্তুতির সময়ে যেখানে থাকতেন সেখানে গাড়ি চালাত সুরজ কুমার নামে এক যুবক। তার বাড়ি দানাপুরে। তখন থেকেই সুরজ উত্ত্যক্ত করত ভাবনাকে। কিন্তু দ্বারভাঙার ওই কলেজে পড়তে চলে আসায় বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।
কিন্তু বছর খানেক আগে ফের সমস্যা শুরু হয়। গত এক বছর ধরে সুরজ কুমার তার তিন বন্ধুকে নিয়ে দানাপুর থেকে দ্বারভাঙার নিমচৌক এলাকায় থাকতে শুরু করে। চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ঘর ভাড়া নেয় তারা। গত এক বছর ধরে ফের ভাবনাকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে সুরজ। বাড়ি থেকে বাইরে বেরলেই ভাবনার পিছনে লাগত তারা। এই কারণে কয়েক মাস ধরে বাবা অরুণ কুমার বাইকে করে মেয়েকে কলেজে ছাড়তে যেতেন।
আজ সকালে বাইকে মেয়েকে চাপিয়ে বেরিয়েছিলেন অরুণ কুমার। নিমচৌক মোড়ের মাথায় তাঁকে বাইক নিয়ে আটকায় সুরজ। ভাবনাকে জোর করে নামিয়ে নিয়ে যেতে চায় সে। তাকে বিয়ে করবে বলে সে জানায়। ভাবনা প্রতিবাদ করে। এর পরেই আচমকা পিস্তল বের করে ভাবনাকে লক্ষ করে পরপর দু’টি গুলি করে সুরজ। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে ভাবনা। অরুণ কুমার চিৎকার করলে তাঁকেও গুলি করে সুরজ। গুলির আওয়াজে পথচলতি মানুষজন ছুটে আসেন। পালানোর চেষ্টা করে সুরজরা। তবে তাদের ধরে ফেলে জনতা। শুরু হয় মারধর। খবর পেয়ে স্থানীয় কাদিরগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। ডিএসপি দিলনওয়াজ আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা তদন্ত শুরু করেছি। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতার করা হবে।’’
দিন চারেক আগে বক্সার জেলায় ইভটিজিংয়ের ঘটনার প্রতিবাদ করায় মেয়ের বাবাকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। দ্বারভাঙার ঘটনার পরে, এই দু’টি ঘটনাকে তুলে ধরে আন্দোলনে নেমে পড়েছে বিরোধীরা। বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, মহিলা সুরক্ষার অবস্থা কী তা দু’টি ঘটনা প্রমাণ করছে। গত তিন বছরে পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপ হয়েছে। এই তো জঙ্গলরাজের শুরু। উল্লেখ্য, গত কালই গাঁধী ময়দানের সভায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার দাবি করেন, মেয়েদের
উপর আক্রমণ জনিত অপরাধের সংখ্যা কমছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy