Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিমায় বিদেশি লগ্নি বাড়াতে বিল শীঘ্রই

আর্থিক সংস্কারের পথে প্রথম পা ফেলছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির পরিমাণ ২৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৯ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংসদের চলতি অধিবেশনেই বিল আসছে। আজ বিমা আইন (সংশোধন) বিলে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রত্যাশিত ভাবেই এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্প মহল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০৩:৩৯
Share: Save:

আর্থিক সংস্কারের পথে প্রথম পা ফেলছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার।

বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির পরিমাণ ২৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৯ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংসদের চলতি অধিবেশনেই বিল আসছে। আজ বিমা আইন (সংশোধন) বিলে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রত্যাশিত ভাবেই এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্প মহল। রেল ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও খুব শীঘ্রই বিদেশি লগ্নির ছাড়পত্র দেওয়ার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হবে বলে আশা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির।

বিমা ক্ষেত্রের দরজা আরও খুললে এখনই দেশে ২০ থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকার বিদেশি লগ্নি আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বাজেট বক্তৃতাতেই বলেছিলেন, “বিমা সংস্থাগুলিতে পুঁজির অভাব রয়েছে। তাই আরও বিদেশি লগ্নি আসার অনুমতি দিতে হবে।” এ দেশে বিমা সংস্থাগুলি বড় শহরের গণ্ডি ছাড়িয়ে ছোট শহর বা গ্রামে তেমন ছড়াতে পারেনি। ফলে জীবন ও স্বাস্থ্য বিমার আওতায় থাকা মানুষের সংখ্যাও অনেক কম। ভারত এ বিষয়ে যথেষ্ট পিছিয়ে। বিমা সংস্থাগুলির পুঁজির অভাব কমলে আরও বেশি মানুষকে বিমার আওতায় আনা যাবে বলে আশা সংশ্লিষ্ট শিবিরের।

মনমোহন সরকারও বিমা ক্ষেত্রে ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি লগ্নির ছাড়পত্র দিতে চেয়েছিল। ২০০৮ সালে সংসদে এই বিল পেশ হয়। কিন্তু সে সময় বিজেপিই এই বিলের বিরোধিতা করেছিল। বিজেপি, বাম ও অন্য রাজনৈতিক দলগুলির বিরোধিতায় বিল পাশ হয়নি। এ বার বিজেপি সরকারই সেই বিল আনছে। লোকসভার বিল পাশ করানো নিয়ে চিন্তা না থাকলেও রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকা বিজেপির চিন্তার কারণ। তৃণমূল ও বামেরা এখনও বিলের বিরুদ্ধে। মোদী সরকারকে স্বস্তি দিয়ে কংগ্রেস এই বিলকে সমর্থন করার ইঙ্গিত দিয়েছে। লোকসভায় কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, “আমরা এনডিএ-র মতো বিরোধী আসনে একরকম, ক্ষমতায় থাকলে অন্য রকম অবস্থান নিই না। বিলের সব কিছু যদি সাধারণ মানুষের স্বার্থে হয়, তা হলে আমরা পাশে আছি।”

কংগ্রেস জানিয়েছে, বিলের পুরনো খসড়ায় নতুন কিছু সংশোধন হয়ে থাকলে, তা খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা ৪৯ শতাংশতেই বেঁধে রাখায় বিমা সংস্থার নিয়ন্ত্রণ ভারতীয় সংস্থার হাতেই থাকবে। বিদেশি লগ্নির জন্য অবশ্য অর্থ মন্ত্রকের অধীন বিদেশি লগ্নি উন্নয়ন পর্ষদ (এফআইপিবি)-র অনুমোদন নিতে হবে। বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির দরজা খুললে একই ভাবে পেনশনের ক্ষেত্রেও বিদেশি লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা বাড়বে। কারণ, পেনশন তহবিল পরিচালনা সংস্থাগুলিকেও বিমা সংস্থাগুলির হারেই বিদেশি লগ্নির অনুমোদন দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছিল। বণিকসভা ফিকি-র মতে, দেশের এখন বিদেশি লগ্নির প্রয়োজন। বিমা ও পেনশন ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির দরজা খুলে দেওয়ার এটাই সঠিক সময়। বিদেশি সংস্থাগুলি অনেক দিন ধরেই বিমায় লগ্নি করতে চাইছিল। কিন্তু ২৬ শতাংশের ঊর্ধ্বসীমার জন্য তা সম্ভব হচ্ছিল না।

২০০০ সালে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে বিমার ব্যবসায় নামার অনুমতি দেওয়া হলেও এখনও বাজারের ৭০ ভাগই জীবন বিমা নিগমের দখলে। এইচডিএফসি লাইফ ইনস্যুরেন্সের এমডি-সিইও অমিতাভ চৌধুরী বলেন, “এই সিদ্ধান্তে দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষকে বিমার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।”

বিমা ও পেনশন, দু’টিতেই সাধারণ মানুষ দীর্ঘ সময়ের জন্য লগ্নি করেন। সেই লগ্নির অর্থ পরিকাঠামো তৈরির কাজে লাগানো সম্ভব হয়। এর ফলে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে অর্থের অভাবও মিটবে বলে মনে করছেন সিআইআই-এর ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। সার্বিক ভাবে আর্থিক বৃদ্ধির হার বাড়াতেও তা সাহায্য করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

modi government new act FDI insurence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE