Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
বিহার

বিরোধী ভোটে ভাঙন ধরাতে অস্ত্র জয়প্রকাশ

বিহার ভোটের ঠিক আগে কৌশলে জয়প্রকাশ নারায়ণকে নির্বাচনী ময়দানে ব্যবহার করতে নামলেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ। বিহারের রাজনীতিতে বরাবরই জয়প্রকাশের গুরুত্ব রয়েছে।

জয়প্রকাশ নারায়ণ

জয়প্রকাশ নারায়ণ

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৫ ০২:৪৮
Share: Save:

বিহার ভোটের ঠিক আগে কৌশলে জয়প্রকাশ নারায়ণকে নির্বাচনী ময়দানে ব্যবহার করতে নামলেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ।

বিহারের রাজনীতিতে বরাবরই জয়প্রকাশের গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষত জরুরি অবস্থা ও ইন্দিরা গাঁধীর বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময়ে জয়প্রকাশকে সামনে রেখেই জোট বেঁধেছিলেন বিরোধীরা। তৎকালীন জনতা পার্টির অন্তর্গত বিভিন্ন শক্তি আজ পরস্পর-বিরোধী শিবিরে। ইন্দিরার বউমা সনিয়ার কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন লালু প্রসাদ-নীতীশ কুমারেরা। তাঁদের প্রতিপক্ষ প্রাক্তন রাজনৈতিক সহযোগীদের দল বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে জয়প্রকাশকে সামনে রেখে বিরোধী জোটের ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। তাদের দাবি, কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জয়প্রকাশকে অপমান করছেন লালু-নীতীশেরা।

ভোটের সময় জয়প্রকাশকে এই নিয়ে সাড়ম্বর আয়োজনে যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে, সে জন্য আগেভাগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে দিয়ে তাঁর জন্মদিবস পালনের ঘোষণা করে ফেলেছেন নরেন্দ্র মোদী। বিহারের প্রথম দফায় ভোট শুরু হচ্ছে ১২ অক্টোবর। তার এক দিন আগেই জয়প্রকাশের জন্মবার্ষিকী। আর সেই দিনই মূল অনুষ্ঠানটি হচ্ছে দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে। দিনটিকে ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ হিসেবেও ঘোষণা করা হবে। দিল্লির মূল অনুষ্ঠানটিতে হাজির থাকতে পারেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

কিন্তু নিয়মমাফিক শুধু রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানেই এটিকে সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে না। গোটা দেশেই এই উৎসব ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে বিহারেও এই প্রচার অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারে। কিন্তু বিহার ভোটের দিকে তাকিয়ে এই কাজ করা হচ্ছে বলে আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগও কেউ করতে পারবেন না। অমিত শাহ বিজেপির সব মুখ্যমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁদের রাজ্যে জয়প্রকাশের জন্মতিথি ঘটা করে পালন করতে। এবং সেই উৎসবকে জেলা স্তর পর্যন্ত পৌঁছে দিতে। দলের সব সাংসদকেও চিঠি লেখা হয়েছে এই অনুষ্ঠানে সামিল হওয়ার জন্য। বিভিন্ন জায়গায় প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। সেখানে বলা হবে, কী ভাবে গণতন্ত্র রক্ষায় জয়প্রকাশ আন্দোলন করেছেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। আর সেই কংগ্রেসের সঙ্গেই এখন জোট বেঁধেছেন লালু-নীতীশ।

শুধু তাই নয়, জরুরি অবস্থার সময়ে মিসায় বন্দিদেরও সম্মান জানানো হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের মতে, ‘‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সব চেয়ে বড় আন্দোলন যিনি করেছিলেন, তাঁর নাম জয়প্রকাশ নারায়ণই। দেশে তিনিই গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন।’’ বিহারে জয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মভিটে ছাপরা জেলায় সিতাবদিয়ারায় একটি জাতীয় স্মারকও তৈরি করা হবে। কেন্দ্র একটি লোকনায়ক খাদি সংবর্ধনা কেন্দ্রও গড়বে সেখানে। আশপাশের গ্রামের মহিলাদের দিয়ে জাতীয় পতাকা তৈরি করানো হবে। বিহারে ভোটে কোনও তাসই অধরা রাখতে চাইছেন না বিজেপি নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE