Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মহিলার হাড় নিশ্চিত, এ বার ডিএনএ পরীক্ষা

শিনাকেই যে খুন করে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল মুম্বই শহর থেকে বেশ কিছুটা দূরে পেন তহসিলের জঙ্গলে, ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে তা। বৃহস্পতিবার এ কথা জানালেন মুম্বই পুলিশের কর্তারাই।

সুনন্দ ঘোষ
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৪:০২
Share: Save:

শিনাকেই যে খুন করে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল মুম্বই শহর থেকে বেশ কিছুটা দূরে পেন তহসিলের জঙ্গলে, ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে তা। বৃহস্পতিবার এ কথা জানালেন মুম্বই পুলিশের কর্তারাই।

জঙ্গল খুঁড়ে যে কয়েকটা হাড়গোড় পাওয়া গিয়েছে, তা যে এক মহিলার, সে বিষয়ে নিশ্চিত ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। সেই মহিলার বয়স যে ৩০ বছরের মধ্যে, তা-ও জানতে পেরেছে পুলিশ। ফলে, দুইয়ে দুইয়ে চার করেই ওই হাড় যে আদতে শিনা বোড়ার, সে সম্পর্কে অনেকটা নিশ্চিত তারা। মুম্বই পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘শিনাকে যে খুন করে ওখানে পুঁতে দেওয়া হয়, তার প্রামান্য নথি হিসেবে বিশেষজ্ঞদের এই রিপোর্ট আদালতে আমাদের সাহায্য করবে।’’

সেন্ট্রাল মুম্বইয়ের নায়ার হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগকে ওই হাড় পরীক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে রিপোর্ট এসেছে পুলিশের কাছে। অ্যানাটমি বিভাগের বিশেষজ্ঞদের মতে, মানব দেহের খুলি, চোয়ালের হাড়, পেলভিস, বুকের কাছে স্টারনাম-এলাকার হাড় দেখে তা পুরুষ না মহিলার, তা প্রায় নিশ্চিত করেই বোঝা সম্ভব। দেহের অন্য অংশের হাড় থেকে অনুমান করা গেলেও নিশ্চিত হওয়া অসম্ভব। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রায় নিশ্চিত করেই জানানো হয়েছে, উদ্ধার হওয়া হাড় একজন মহিলার। ফলে সে ক্ষেত্রে দেহের ওই সব অংশের হাড় যে পাওয়া গিয়েছে, তা অনুমান করা যায়।

বয়স জানা যায় হাত-পায়ের হাড় থেকে। তবে সঠিক বয়স বলা সম্ভব নয়। বয়সের একটি রেঞ্জ বলা যায় মাত্র। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘ধরুন হাড়ের গড়ন দেখে বলা সম্ভব যে তা ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে কোনও মহিলার।’’ এ ছাড়াও দেহের যে অংশের হাড় পাওয়া গিয়েছে, সেই অংশে আগে কোনও বড়সড় আঘাত ছিল কি না, কখনও ভেঙেছিল কি না, তা-ও বলা সম্ভব। তবে, তাঁকে খুন করা হয়ে থাকলে বা সেই খুনের সময়ে তিনি প্রতিরোধ করেছিলেন কি না, তা শুধু হাড় দেখে বলা যায় না।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরবর্তী ধাপ ডিএনএ পরীক্ষা। মাটি খুঁড়ে পাওয়া শিনার দু’টি দাঁত ও দু’টি হাড় পাঠানো হয়েছে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য। সেখান থেকেই ডিএনএ-র নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এ বার সেই ডিএনএ-র সঙ্গে ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায় এবং প্রয়োজনে অধুনা কলকাতা নিবাসী, শিনার পিতা বলে পরিচয় দেওয়া সিদ্ধার্থ দাসের ডিএনএ-ও মিলছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।

তবে, মুম্বই পুলিশ বুধবার রাতে কলকাতার দুর্গানগরে সিদ্ধার্থবাবুর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করলেও ডিএনএ পরীক্ষার কথা এখনই কিছু বলেনি। পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘ইন্দ্রাণী যদি সিদ্ধার্থ-র পিতৃত্ব মেনে না নেন, সম্ভবত তখনই সিদ্ধার্থের দেহের কোনও নমুনা সংগ্রহ করার কথা ভাবা হবে।’’

এখন প্রশ্ন উঠেছে, তিন বছরের পুরনো হাড় থেকে কি ডিএনএ নমুনা পাওয়া সম্ভব? চিকিৎসকদের কথায়, ‘‘মাটির তলায় চাপা অবস্থায় থাকলে এব‌ং সেই মাটি একেবারে শুকনো না হলে, তা থেকে ডিএনএ-র নমুনা পাওয়া সম্ভব।’’ তবে পুলিশের তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। শিনার দাঁত থেকে অনায়াসেই ডিএনএ নমুনা পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE