জম্মু-কাশ্মীরে নিজেদের দলের মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য তৎপর হল বিজেপি। এর জন্য দর কষাকষিও শুরু করে দিয়েছে তারা। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, নির্দল ও ছোট দলগুলি তাদের সঙ্গেই রয়েছে। তাই দর কষাকষিতে তাঁরাই এগিয়ে।
কাল ফল প্রকাশের পর থেকেই পিডিপি ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের (এনসি) সঙ্গে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর দল। দুই দলের কাছে শর্ত একটাই, মুখ্যমন্ত্রী হবে বিজেপির। এমনকী যদি আধাআধি করেও দুই দলের মুখ্যমন্ত্রী হয়, তা হলে প্রথম দাবিদার হবে বিজেপি।
দলীয় সূত্রে খবর, নির্দল ও ছোট দলগুলিকে সঙ্গে নিলে বিজেপি-জোটের সংখ্যা তিরিশের কোঠা ছাড়িয়ে যায়। যা পিডিপির থেকে বেশি। এই জোট জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়ার দাবি জানাবে রাজ্যপালের কাছে।
আজ সকালে এই বিষয়ে কৌশল স্থির করার জন্য নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের উপস্থিতিতে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠক হয়। সেখানে স্থির হয়, যে কোনও মূল্যে জম্মু-কাশ্মীরে সরকার গড়বে বিজেপি। এবং চেষ্টা করা হবে, অন্তত প্রথম মুখ্যমন্ত্রী যেন বিজেপিরই হন। তার জন্য অরুণ জেটলিকে জম্মুতে পাঠানো হচ্ছে দলের মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রার্থী স্থির করার জন্য। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে আপাতত এগিয়ে রয়েছেন জিতেন্দ্র সিংহ ও নির্মল সিংহ।
দলের বক্তব্য, ভোটের আগেই বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করে লড়েছিলেন সাজ্জাদ লোন। তাঁর দল পিপলস কনফারেন্সের দুই বিধায়ক ও আর এক নির্দল বিধায়ক আগে থেকেই বিজেপির সঙ্গে আছেন। বিজেপির এক জন বিদ্রোহী প্রার্থী জিতেছেন। তিনিও সঙ্গে রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে এক জন ছাড়া সকলেই বিজেপির সঙ্গে থাকতে রাজি। সিপিএমের মহম্মদ ইউসুফ তারিগামিও পাশে থাকবেন বলে আশা বিজেপির। জম্মু-কাশ্মীরের ভারপ্রাপ্ত নেতা রাম মাধবের মতে, “যদি শুধু উন্নয়নের নিরিখে একটি ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচি গড়া যায়, তা হলে সকলে সঙ্গে আসতে পারেন। রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে কেউ পিছিয়ে আসবেন না।”
বিজেপি নেতৃত্বের মতে, যাঁরাই সরকার গড়ার চেষ্টা করুন, এই নির্দল ও ছোট দল ছাড়া সম্ভব নয়। ফলে তাঁরাই যদি বিজেপির সঙ্গে চলে আসে, তা হলে বাকিদের সরকার গড়ার রাস্তাও বন্ধ।
এখন প্রশ্ন, পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি না এনসি নেতা ওমর আবদুল্লা কার সঙ্গে মিলে সরকার গড়বে বিজেপি?
ওমর আজ মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। জানিয়েছেন, সরকার গড়ার দৌড়ে তিনি নেই। দিল্লি হয়ে তিনি লন্ডনে যাচ্ছেন। কিন্তু বিজেপি বলছে, তিনি যেখানেই থাকুন, আলোচনা ঠিক দিকেই এগোচ্ছে। ওমরের সঙ্গে জোট বাঁধলে সুবিধা হল, বিজেপি অনায়াসে মুখ্যমন্ত্রী পদ দাবি করতে পারবে। পিডিপির মতো অতটা কট্টর নয় আবদুল্লা পরিবার। বিজেপি এখন সরকার গড়ে জম্মুর বাইরে উপত্যকাতেও নিজেদের শক্তি বাড়াতে চায়। কিন্তু মুফতি পরিবার বিজেপির সেই চেষ্টা সফল হতে দেবে না। ২০০৮ সালে পিডিপি অমরনাথের জন্য জমি দেওয়ার বিরোধিতা করে কংগ্রেসের থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছিল। বিজেপি উপত্যকায় শক্তি বাড়াতে চাইলে পিডিপি সেই রূপ ফের ধারণ করতে পারে। এই আশঙ্কায় আধাআধি মুখ্যমন্ত্রিত্বের সমীকরণে প্রথমে পিডিপি-র কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করতে চাইছে না বিজেপি। পাছে নিজেদের মুখ্যমন্ত্রীর মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে সমর্থন তুলে নেয় পিডিপি! বিজেপির এক নেতার কথায়, “এই দর কষাকষি আরও কিছু দিন চলবে। তার পরেই ছবিটা স্পষ্ট হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy