সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকে স্মৃতি ইরানি। নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
স্কুলে ভর্তির ইন্টারভিউ চলছে। টেবিলে এ পারে শিক্ষিকারা। আর ও পারে বসে স্বয়ং কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী। অভিভাবকের চেয়ারে!
টিভি-সিরিয়ালের পর্দা কাঁপানোর পর রাজনীতির মঞ্চেও তিনি সাফল্যের মুখ দেখেছেন। যদিও পরীক্ষা থামেনি। মন্ত্রী হওয়ার পরও দুই মেয়েকে দিল্লির স্কুলে ভর্তি করাতে গিয়ে শিক্ষিকাদের চোখা চোখা প্রশ্নবাণের সম্মুখীন হতে হয়েছে স্মৃতি ইরানিকে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। দেশের মন্ত্রী বলে কোনও ছাড় পাননি। যাঁর মন্ত্রকের মধ্যেই আবার রয়েছে শিক্ষা দফতরও। বরং আর পাঁচটা সাধারণ মা-বাবার মতো তাঁকেও মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করতে গিয়ে ভয়াবহ দুঃস্বপ্নের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।
মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে দিল্লিই স্মৃতির ঠিকানা। প্রথম প্রথম মুম্বই থেকে যাতায়াত করতেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে হাতে গোনা কয়েকটা দিন মুম্বইয়ে থাকতে পারতেন। মেয়েদের সঙ্গে সময় কাটানো হত না বললেই চলে। এ দিকে, এক জনের বয়স ১৩। আর এক জনের ১১। বললেন, “সব দিক সামলানো আমার পক্ষে খুব কষ্টকর হয়ে উঠেছিল। তাই মেয়েদের কেমন লাগবে না ভেবেই ওদের দিল্লি আসতে হবে জানিয়ে দিই। ওরাও মুখ বুজে মেনে নিয়েছিল।”
এ দিকে দিল্লি একেবারে অজানা শহর। স্মৃতি জানান, এর আগে কখনও দিল্লিতে এ ভাবে পরিবার নিয়ে থাকেননি। রাজধানী আসার পর প্রথম কাজটাই ছিল, স্কুলের ইন্টারভিউ বোর্ডের মুখোমুখি হওয়া। হাসতে হাসতেই বললেন, “প্রথম মা-বাবাকে সেঁকা হল। তার পর বাচ্চাদের সেঁকা হবে।”
তবে একই সঙ্গে স্মৃতি এটাও জানিয়েছেন, এই সেঁকা পর্ব নিয়ে তাঁর বিন্দুমাত্র আপত্তি ছিল না। অনেকেই খানিক বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্ন করেছেন, দেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীকেও পরীক্ষা দিতে হয়েছে? তা-ও আবার মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করাতে গিয়ে!
স্মৃতির কথায় অবশ্য, “মন্ত্রী বলেই আলাদা সুযোগ-সুবিধা নেওয়া বা পাওয়া উচিত নয়। এটা নেহাতই একটা চাকরি, দায়িত্ব। কোনও অধিকার নয় যার বলে বিশেষ সুবিধা ভোগ করব। তাই বরকে নিয়ে ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলাম।”
শুধু তা-ই নয়, মন্ত্রী হওয়ার পরও তিনি শিক্ষিকা-অভিভাবক প্রত্যেকটা মিটিং-এ যোগ দিয়েছেন। বললেন, “কখনও কিন্তু একগাদা পুলিশ নিয়ে যাইনি।”
তবে ওই ইন্টারভিউকে যতই দুঃস্বপ্ন বলে আখ্যা দিন না কেন স্মৃতি, শিক্ষা দফতরের মন্ত্রীর আগমনে শিক্ষিকাদের যে কী অবস্থা হয়েছিল, সে উত্তর এখনও অজানাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy