যাযাবর বসতির বাসিন্দাদের সামনেই ঘর থেকে টেনে বার করা হয়েছিল বছর দশেকের মেয়েটিকে। ঝোপের আড়ালে নিয়ে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করল এক যুবক!
একরত্তি ওই বালিকার দাদার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগের এমনই বিচার হল ঝাড়খণ্ডের বোকারোর গোমিয়া ব্লকে গুলগুলিয়া যাযাবরদের জনবসতিতে। অনেকটা খাপ পঞ্চায়েতের আদলেই।
সালিশি সভা বসিয়ে ধর্ষণের ‘ফরমান’ দিয়েছিল সেখানকার গোষ্ঠী-প্রধান। তার হুমকিতে মেয়েটির মা, ভাইয়ের অসহায় আর্তি শুনেও কেউ বাধা দিতে এগোনোর সাহস পাননি।
ঝামেলা বাধে রবিবার রাতে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পড়শি বাড়ির হরিন্দর পাসি মত্ত অবস্থায় তার বৌয়ের শ্লীলতাহানি করেছে বলে চিৎকার জুড়ে দেয় নাকাবন্দি নামে এক যুবক। আশপাশের লোকজন সেই রাতে পরিস্থিতি সামাল দেন। কিন্তু সোমবার সেই খবর পৌঁছয় নাকাবন্দির শ্বশুর, গুলগুলিয়া বসতির গোষ্ঠী-প্রধান ঘোসাল পাসির কানে। কাল বিকেলে বসে সালিশি-সভা। ওই সভার প্রধান ছিল ঘোসালই।
পুলিশ জানায়, কারও কোনও কথা না-শুনেই ঘোসাল জানিয়ে দেয়, হরিন্দরের সাজা একটাই তার বোনকে ধর্ষণ করবে নাকাবন্দি! এ কথা শুনে সবাই থ’ হয়ে গেলেও, ভয়ে আপত্তি করতে পারেননি। গোষ্ঠী-প্রধান বলে দিয়েছিল, তার ফরমানের বিরোধিতা করলে অন্যদের একই শাস্তি হবে। সাজা বদলাতে ঘোসালের পায়ে পড়েন হরিন্দরের মা। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। এরপরই নাকাবন্দির স্ত্রী হরিন্দরদের ঘরে ঢুকে পড়ে। বাইরে সবার কথাবার্তা শুনে এক কোণে বসে আতঙ্কে ঠকঠক করে কাঁপছিল বছর দশেকের মেয়েটি। হিড়হিড় করে তাকে টেনে বের করে নিয়ে আসে ওই মহিলা। তারপর তার স্বামী নাকাবন্দির হাতে তুলে দেয়।
গুলগুলিয়া বসতির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দেয় মেয়েটি। তাকে টানতে টানতে বসতির পাশে একটি ঝোপের পিছনে নিয়ে যায় নাকাবন্দি। তার পর তাকে ধর্ষণ করে। অত্যাচারে বেহুঁশ হয়ে গিয়েছিল মেয়েটি। রক্তাক্ত অবস্থায় অনেক ক্ষণ সেখানেই পড়েছিল। স্থানীয় কয়েক জন তাকে উদ্ধার করে গোমিয়া থানায় নিয়ে যান।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথমে গোষ্ঠী-প্রধানের বিরুদ্ধে থানায় কেউ মুখ খুলতে চাননি। পরে তাঁরা তদন্তকারীদের সব কিছু জানান। মঙ্গলবার রাতেই নাকাবন্দি, হরিন্দরকে গ্রেফতার করা হয়। বেগতিক দেখে গা-ঢাকা দিয়েছিল ঘোসাল। আজ তাকে গ্রেফতার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy