Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সরকারে মতভেদের মধ্যেই আইএস নিষিদ্ধ হল ভারতে

সরাসরি এ দেশের মাটিতে কোনও জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর প্রমাণ নেই। সংগঠনের প্রভাবও সীমিত। তবুও কোনও ঝুঁকি না নিয়ে আজ ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ সংগঠনের তকমা দিল নয়াদিল্লি। এ দেশে ওই জঙ্গি সংগঠনের উপস্থিতির দু’টি প্রমাণ রয়েছে কেন্দ্রের হাতে। মহারাষ্ট্রের কয়েক জন যুবক আইএসে যোগ দিতে ইরাকে পাড়ি দিয়েছিল। আর সাইবার জগতে ওই সংগঠনের ভাবধারা প্রচারের অভিযোগে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার হয়েছেন কলকাতার যুবক মেহদি মসরুর বিশ্বাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫৩
Share: Save:

সরাসরি এ দেশের মাটিতে কোনও জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর প্রমাণ নেই। সংগঠনের প্রভাবও সীমিত। তবুও কোনও ঝুঁকি না নিয়ে আজ ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ সংগঠনের তকমা দিল নয়াদিল্লি।

এ দেশে ওই জঙ্গি সংগঠনের উপস্থিতির দু’টি প্রমাণ রয়েছে কেন্দ্রের হাতে। মহারাষ্ট্রের কয়েক জন যুবক আইএসে যোগ দিতে ইরাকে পাড়ি দিয়েছিল। আর সাইবার জগতে ওই সংগঠনের ভাবধারা প্রচারের অভিযোগে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার হয়েছেন কলকাতার যুবক মেহদি মসরুর বিশ্বাস। এ ছাড়া কাশ্মীরে দু’একটি বিক্ষোভে বিক্ষিপ্ত ভাবে দেখা গিয়েছে আইএসের ব্যানার। যদিও কাশ্মীরে আইএসের উপস্থিতি মানতে রাজি নয় ওমর আবদুল্লা সরকার। দেশে এখন পর্যন্ত সংগঠনের প্রামাণ্য প্রভাব বলতে এটুকুই।

তবু কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে আজ ওই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আজ লোকসভায় তিনি জানান, “ওই সংগঠনটি ইরাক ও সিরিয়া-সহ অন্যান্য দেশে যে সব কাজকর্ম করছে তা আমরা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখেছি। তার পরেই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ওই সংগঠনকে ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”

বিষয়টি নিয়ে মতভেদ ছিল সরকারের মধ্যে। এখনই আইএসকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে আপত্তি ছিল বিদেশ মন্ত্রকের একাংশের। কারণ, এখনও ইরাকে আইএসের হাতে আটক ৩৯ জন ভারতীয় শ্রমিকের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাঁদের উদ্ধার করতে নানা মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে আইএসের সঙ্গেই দর কষাকষি করতে হচ্ছে দিল্লিকে। এই পরিস্থিতিতে ওই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে দর কষাকষি করতে অসুবিধে হবে বলে জানানো হয় বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। কিন্তু বেঙ্গালুরু থেকে মেহদি মসরুর বিশ্বাসের গ্রেফতারির পরে আর ঝুঁকি নিতে চায়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ওই শ্রমিকদের উদ্ধারের মতো বিষয়টি সমস্যায় পড়বে কিনা তা নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই মন্তব্য করতে চাননি বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সৈয়দ আকবরউদ্দিন। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারা ওই আশঙ্কা মানতে রাজি নন। মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, “রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ যদি কোনও সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তা হলে সদস্য দেশগুলির ক্ষেত্রেও সেই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হয়। সে দিক থেকে দেখলে নিরাপত্তা পরিষদ আইএসকে নিষিদ্ধ করার পর থেকেই ওই সংগঠন ভারতে নিষিদ্ধ।”

কিন্তু এই ব্যাখ্যা মানতে রাজি নয় সরকারের অন্য একটি অংশ। তাদের মতে, নিরাপত্তা পরিষদ কোনও সংগঠনকে নিষিদ্ধ করলে সব সদস্য দেশ সেই নিষেধাজ্ঞা নাও মানতে পারে। যেমন নিরাপত্তা পরিষদ জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদকে নিষিদ্ধ সংগঠন ঘোষণা করলেও প্রথমে পাকিস্তান তা মানতে চায়নি। আজ সাইবার সন্ত্রাস রুখতে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কৈখালির বিমাননগরের বাসিন্দা মেহদি বিশ্বাসের বাবা মেকাইল ও মা মমতাজ বিশ্বাস গত কাল বিকেলে বেঙ্গালুরু গিয়েছেন বলে আজ জানিয়েছেন তাঁদের প্রতিবেশীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pakistan terrorist attack iais banned in india isis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE