Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সীমান্ত দ্বন্দ্বের চেনা পথে ভারত-চিন

বিপুল চিনা বিনিয়োগের প্রত্যাশা ভেঙে গিয়েছে আগেই। চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং ভারত ছেড়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দ্বন্দ্বের চেনা পথে ফিরল ভারত-চিন কূটনীতি। লাদাখে চিনা অনুপ্রবেশ ও সীমান্ত সমস্যা নিয়ে চিনফিংয়ের সফরের সময়েও চলেছে কড়া দরকষাকষি। এই বিষয়ে নরেন্দ্র মোদী চিনকে কড়া বার্তা দিয়েছেন বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২৮
Share: Save:

বিপুল চিনা বিনিয়োগের প্রত্যাশা ভেঙে গিয়েছে আগেই। চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং ভারত ছেড়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দ্বন্দ্বের চেনা পথে ফিরল ভারত-চিন কূটনীতি।

লাদাখে চিনা অনুপ্রবেশ ও সীমান্ত সমস্যা নিয়ে চিনফিংয়ের সফরের সময়েও চলেছে কড়া দরকষাকষি। এই বিষয়ে নরেন্দ্র মোদী চিনকে কড়া বার্তা দিয়েছেন বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর। চিনফিং আসার চার দিন আগে লাদাখের চুমারে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় এলাকায় ঢোকে ৪০০ চিনা সেনা। মোদীর কড়া বার্তার কয়েক ঘণ্টা পরেই চিনা এলাকায় ফিরে যায় তারা। কিন্তু আজ ফের অন্য দিক দিয়ে চুমারে অনুপ্রবেশ করেছে ৫০ জন চিনা সেনা। লাদাখের ডেমচক এলাকাতেও ভারতীয় এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে চিনারা।

বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, মোদীর কড়া বার্তাতেই এই বিষয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট। বিষয়টির উপরে নজর রাখছে নয়াদিল্লি। সমস্যা দ্রুত মেটানো যাবে বলেই আশা সরকারের।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তারা জানাচ্ছেন, চিনফিংয়ের সফরের আগে চুমারে চিনা অনুপ্রবেশ নতুন নয়। ২০১৩-এর এপ্রিল মাসে ভারত সফরে আসেন চিনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াং। সফরের ঠিক আগেই লাদাখের ডেপসাং এলাকায় অনুপ্রবেশ করে চিনা সেনা। সেই ছক মেনেই চিনফিংয়ের সফরের আগেও অনুপ্রবেশ করেছে তারা। চিন-ভারত শীর্ষ স্তরের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে দিল্লিকে চাপ দেওয়াই এই ধরনের অনুপ্রবেশের উদ্দেশ্য।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, লাদাখের চুমারে কৌশলগত দিক থেকে কিছুটা সুবিধেজনক অবস্থানে রয়েছে ভারত। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার উপরে ওই এলাকায় ভারতের দিক থেকে সীমান্তে পৌঁছনো অপেক্ষাকৃত সহজ। সেখানে বাঙ্কার থেকে চিনা সেনার গতিবিধির উপরে আড়িপাতার কাজ করে ভারতীয় সেনা। ফলে, অনুপ্রবেশের জন্য বার বার ওই এলাকাকেই বেছে নিচ্ছে চিন। শীর্ষ স্তরের আলোচনায় দিল্লিকে চাপ দিয়ে ওই এলাকায় ভারতীয় সেনার বাঙ্কারগুলি সরাতে চায় বেজিং।

চিনফিংয়ের সফরের আগে অনুপ্রবেশে মোতায়েন চিনা সেনার সংখ্যা কিছুটা বিস্মিত করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে। মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, “আগেও অনুপ্রবেশ হয়েছে। কিন্তু এ বার প্রায় ৪০০ সেনা মোতায়েন করেছিল চিন। এই বিষয়টি আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে।” পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতও প্রায় দেড় হাজার সেনা মোতায়েন করেছে বলে খবর।

দ্বিপাক্ষিক অন্য ক্ষেত্রেও বিশেষ এগোয়নি কাজ। অরুণাচল প্রদেশকে ‘বিতর্কিত এলাকা’ মনে করে বেজিং। তাই ওই রাজ্যের বাসিন্দাদের ‘স্টেপলড ভিসা’ দেয় তারা। এ নিয়ে বহু বার প্রতিবাদ জানিয়েছে নয়াদিল্লি। চিনফিংয়ের সফরের সময়েও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু চিন তাদের অবস্থান বদলাতে রাজি হয়নি। ফলে চিনা পেশাদারদের জন্য ভিসার কড়াকড়ি শিথিল করতে রাজি হয়নি মোদী সরকার।

চিনফিংয়ের সফরে কাজের কাজ কতটা হল তা নিয়ে মোদী সরকারের ভাবনাচিন্তা করা উচিত বলে ধারণা অনেক শিবিরের। প্রাক্তন বিদেশসচিব কানোয়াল সিব্বলের বক্তব্য, “সীমান্ত সমস্যাকে বাদ দিয়ে ভারত-চিন সম্পর্ককে ভাবা অসম্ভব। জাপান ও ভিয়েতনামের ক্ষেত্রে এলাকা নিয়ে বিবাদকে সম্পর্কের মূল ভিত্তি মনে করে চিন। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে সীমান্ত সমস্যাকে সম্পর্কের অন্য ক্ষেত্রগুলি থেকে আলাদা করে দেখতে চেয়েছিল বেজিং।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE