Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সারদা-সহারা এক নয়: কেন্দ্র

সহারা ও সারদা এক নয়। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সহারা-কর্তার ছবি দেখিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অভিযোগ তুলেছেন, তার জবাবে এই দাবিই করছে কেন্দ্রীয় সরকার। মদন মিত্রকে গ্রেফতারের পরে সুব্রত রায়ের সঙ্গে মোদীর ছবি দেখিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে পাল্টা আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি হাতে সংসদেও বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সাংসদরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫৫
Share: Save:

সহারা ও সারদা এক নয়। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সহারা-কর্তার ছবি দেখিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অভিযোগ তুলেছেন, তার জবাবে এই দাবিই করছে কেন্দ্রীয় সরকার।

মদন মিত্রকে গ্রেফতারের পরে সুব্রত রায়ের সঙ্গে মোদীর ছবি দেখিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে পাল্টা আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি হাতে সংসদেও বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সাংসদরা। তৃণমূলের যুক্তি, লগ্নিকারীদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় সহারা-কর্তা এখন জেলে। তাঁর সঙ্গে মোদীর ছবি রয়েছে। সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে মদন মিত্রর একমঞ্চে ছবি থাকার কারণ দেখিয়ে যদি রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা যায়, তা হলে প্রধানমন্ত্রীকেও গ্রেফতার করা উচিত।

তবে মমতার যুক্তি খারিজ করে কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রকের কর্তাদের ব্যাখ্যা, সহারা-র সঙ্গে সারদা-র তুলনা হয় না। কারণ সারদার মতো সহারা কোনও পঞ্জি প্রকল্প চালাচ্ছিল না। পঞ্জি প্রকল্পে নতুন লগ্নিকারীদের থেকে টাকা নিয়ে পুরনো লগ্নিকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়। কিন্তু সহারা গোষ্ঠী লগ্নিকারীদের অর্থে ব্যবসা করেছে। সম্পত্তি কিনেছে। তাই সহারা গোষ্ঠীর মোট সম্পত্তির পরিমাণ লগ্নিকারীদের পাওনার থেকে তিন গুণ বেশি। সহারা কোনও চিট ফান্ডও চালায়নি। একই ভাবে সুদীপ্ত সেনের সঙ্গেও সুব্রত রায়ের তুলনা হয় না। কারণ সুদীপ্ত সেনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মামলা করা হয়েছে। সুব্রত রায় তিহাড় সংশোধনাগারে আটক। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা হয়নি। কোনও আদালতে তিনি দোষী সাব্যস্তও হননি। সহারা গোষ্ঠীর কোনও সংস্থার বিরুদ্ধেও ফৌজদারি মামলা নেই।

সংসদীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু বলেন, “মদন মিত্রকে সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে একমঞ্চে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার জন্য গ্রেফতার করা হয়নি। তাঁকে সুদীপ্ত সেনের অর্থে ভাগ বসানোর জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। তৃণমূল নেতাদের এটা বুঝতে হবে। কোনও এক জন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। সেই ছবি নিয়ে এসে হইচই করাটা সস্তার রাজনীতি।”

কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি, সারদার বিরুদ্ধে লগ্নিকারীরাই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সহারার ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। কোনও সরকারি সংস্থাও সহারার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি। সহারার ব্যবসার উপর কোন সংস্থার নিয়ন্ত্রণ থাকবে, সেবি বা কোম্পানি নিবন্ধক, মূলত সেই বিষয়েই সেবি-র সঙ্গে বিবাদ। তার জেরেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা গড়িয়েছে। সারদার বিরুদ্ধে লগ্নিকারীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছিলেন। বহু লগ্নিকারী সর্বস্বান্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সহারার ক্ষেত্রে তা হয়নি। এখন সুব্রত রায় তিহাড় থেকেই সহারার সম্পত্তি বিক্রি করে জামিনের অর্থ ও আদালতের নির্দেশ মেনে লগ্নিকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই পরিস্থিতিতেও সহারার লগ্নিকারীরা রাস্তায় নামেননি।

বিজেপি নেতৃত্বের যুক্তি, সহারা-কর্তার সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর ছবি দেখিয়ে তৃণমূল মোদীকে গ্রেফতার করার দাবি করছে, অথচ সুব্রত রায়ের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর শাহরুখ খানের ছবি রয়েছে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়েরও ছবি রয়েছে। মমতার যুক্তি মানলে তাঁদেরও গ্রেফতার করতে হয়। তৃণমূলে অভিযোগ, সহারার অর্থলগ্নি সংস্থার দফতরে তল্লাশি করে একটি লাল ডায়েরি পাওয়া গিয়েছে। সেই ডায়েরিতে বিজেপি নেতাদের নাম রয়েছে। বিজেপির পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ বলেন, “আসলে মমতা ভয় পাচ্ছেন, মদন মিত্র মুখ খুললে ঝোলা থেকে আরও বেড়াল বেরিয়ে পড়বে। তাই এই সব ছবি, ডায়েরি দেখিয়ে কাল্পনিক প্রচারে নেমেছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

saradha scam sahara scam centre
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE