আট মাস পরে প্রকাশ্যে জয়ললিতা। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পদে ফের শপথ আজ। ছবি: এএফপি।
আট মাস আগে কেঁদেছিলেন। আজ আনন্দে উদ্বেল তাঁরা। ‘আগুনে পো়ড়া খাঁটি সোনা’ হয়ে তাঁদের নেত্রী ফিরছেন তামিলনাড়ুর কর্ণধারের আসনে। রাজ্য জুড়ে তাই আজ থেকেই উৎসবে মেতেছেন এডিএমকে সমর্থকেরা।
আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয়েছিল এডিএমকে নেত্রী জয়ললিতাকে। চোখের জলে ভেসে তাঁর দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছিলেন ভক্ত পনিরসেলভম। মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে নেত্রীর আসনে ফেরা ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা। আগামিকাল সেই দিন। বেলা এগারোটায় মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী প্রেক্ষাগৃহে ফের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন নেত্রী।
আজ খুব সকালেই জয়ললিতাকে এডিএমকে পরিষদীয় দলের নেত্রী নির্বাচনের কাজ সেরে ফেলেন বিধায়কেরা। ‘আম্মা’কে ফের দলনেত্রী করার প্রস্তাবটি তোলেন পনিরসেলভমই। বলেন, ‘‘আমাদের নেত্রী আগুনে পোড়া খাঁটি সোনা। তিনি সব সময়েই আমাদের সাধারণ সম্পাদক।’’ দলের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা হতেই রাজ্য জুড়ে শুরু হয় উল্লাস।
পরিষদীয় দলের বৈঠকের কিছু পরেই পরেই রাজ্যপাল কে রোসাইয়ার সঙ্গে দেখা করে নিজের মন্ত্রিসভার পদত্যাগের কথা জানিয়ে আসেন পনিরসেলভম। নিয়ম মেনে উপযুক্ত ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন রাজ্যপাল। তত ক্ষণে চেন্নাইয়ে আসতে শুরু করেছেন হাজার হাজার এডিএমকে সমর্থক। আট মাস পরে নেত্রীকে দেখতে পাওয়ার আশা আছে জেনে জয়ললিতার পোয়েজ গার্ডেন রোডের বাড়ির কাছে ভিড় বাড়তে থাকে।
বেলা দেড়টার সময়ে ‘রাহুকালম’ কেটে যাওয়ার পরে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার জন্য রওনা হয় জয়ললিতার কনভয়। সমর্থকদের বাজনা আর ফুলবৃষ্টির মধ্যে একটু একটু করে এগোতে থাকে গাড়ি। রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সমর্থকদের সামলাতে তখন হিমশিম খাচ্ছেন পুলিশ ও নেত্রীর গাড়িতে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা। পথে গণেশ মন্দিরে প্রার্থনা জানান নেত্রী। পরে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানান এডিএমকে-র প্রতিষ্ঠাতা এমজিআর-এর ছবিতেও।
রোসাইয়ার সঙ্গে দেখা করে জয়ললিতা বেরিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণ পরে রাজভবনের তরফে ঘোষণা করা হয়, এডিএমকে নেত্রীকে সরকার গঠন করতে বলেছেন রাজ্যপাল।
জয়ললিতার নেতৃত্বে ২৮ জনের মন্ত্রিসভা শপথ নেবে কাল। ‘আম্মা’র শপথের জন্য নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের চিপক ক্যাম্পাস। কাল সকালে জয়ললিতার শপথে বিস্ফোরণ হবে বলে চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনে একটি ফোন আসায় নিরাপত্তাবাহিনীর তৎপরতা বাড়ে। পরে অবশ্য জানা যায়, সেটি ভুয়ো ফোন।
রাজ্যের কর্ণধারের পদে নেত্রীর পঞ্চম অভিষেকের অপেক্ষায় এখন অধীর ভক্তকুল। বেআইনি সম্পত্তির মামলায় নেত্রী দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে যাঁরা আত্মহত্যা করার কথা ভাবছিলেন, তাঁদের আনন্দ আজ বাঁধনহারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy