নতুন করে অশান্তি না হলেও আজ সারা দিন থমথমে ছিল উত্তরপ্রদেশের সহারনপুর। কার্ফু রয়েছে ছ’টি এলাকায়। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, হিংসা ছড়ানোর দায়ে ধৃত ৩৮ জন।
ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপি ঘটনার দায় অখিলেশ সরকারের উপর চাপিয়েছে। কাল সহারনপুরের কুতুবশের এলাকায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে তিন জনের মৃত্যু হয়। আহত কমপক্ষে কুড়ি। সেই ঘটনার পরেই কিছু এলাকায় কার্ফু জারি হয়। একটি জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে কাল ভোরে গোলমাল শুরু বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এই ঝামেলা আগে আদালতেও গড়িয়েছে। সম্প্রতি একটি গোষ্ঠীর পক্ষে নিম্ন আদালত রায় দেওয়ায় অপর গোষ্ঠী ইলাহাবাদ হাইকোর্টে যায়। পরে অবশ্য মামলাটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
সহারনপুরের জেলাশাসক সন্ধ্যা তিওয়ারি আজ বলেন, “ছন্দে ফিরছে এলাকা। মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশ, গোলমালে জড়িত কাউকে ছাড়া হবে না।” জেলাশাসক আরও জানিয়েছেন, অশান্তির জেরে মোট ২২টি দোকান ও ১৫টি গাড়ি নষ্ট হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিজিপি মুকুল গয়াল জানান, আজ নতুন করে কোনও গণ্ডগোল হয়নি। তবে কার্ফু জারি থাকা এলাকায় দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। বিষয়টিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। সন্ধ্যা আরও জানান, আগামী কাল কিছু এলাকায় কয়েক ঘণ্টার জন্য কার্ফু তোলা হতে পারে। তবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত স্কুলগুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
বিজেপি নেতা শাহনওয়াজ হোসেন অভিযোগ করেন, “প্রশাসন চালাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ অখিলেশ সরকার। উত্তরপ্রদেশে যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা শুধু ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি করছেন।” সেই সঙ্গেই শাহনওয়াজের বক্তব্য, বিজেপি শান্তি ও সহাবস্থান চায়। তাঁর কথায়, “এ দেশে সকলেরই ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের অধিকার আছে। কেউ সেখানে বাধা দিতে পারে না। কিন্তু অখিলেশ সরকার সব দিক থেকেই দুর্বল। উত্তরপ্রদেশে যে সরকার বলে কিছু নেই, এই ঘটনা সে বার্তাই দেয়।” সরব ছিল কংগ্রেসও। কংগ্রেস নেত্রী রীতা বহুগুণা জোশীর বক্তব্য, “প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্যই এত বড় গোলমাল বাধল। যেখানে একটা বিবাদ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে, সেখানে প্রশাসন এবং পুলিশের আরও বেশি সতর্ক থাকা উচিত ছিল।” তবে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে আজ মাঠে নেমেছে সমাজবাদী পার্টিও। দলের এক নেতার দাবি, “রাজ্যে শান্তি নষ্টের চেষ্টা চলছে। স্থানীয় মানুষের কিছু সমস্যা আছে। আর কিছু লোক ভাবছেন, সেটা নিয়েও রাজনীতি করা যায়। উত্তরপ্রদেশে সমাজ-বিরোধীদের কোনও জায়গা নেই।”
ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিষয়টি নিয়ে মুখ না খোলায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আজই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। উত্তরপ্রদেশ সরকারকে সব রকম সহযোগিতারর আশ্বাসও দিয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy