Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অন্তঃসত্ত্বার জন্য তৈরি ৭ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড

আদালত জানিয়েছে, ২৯ জুন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তার আগেই মেডিক্যাল বোর্ডকে রিপোর্ট দিতে হবে। রাজ্যের আইনজীবী চঞ্চল গঙ্গোপাধ্যায় জানান, এসএসকেএম হাসপাতালের সাত চিকিৎসককে নিয়ে বোর্ড তৈরি করে দেবে রাজ্য। আদালতের নোটিস পেয়েই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও বারাসত শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০৩:৫৭
Share: Save:

বারাসতের অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও তাঁর গর্ভস্থ ভ্রূণের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সাত চিকিৎসকের মেডিক্যাল বোর্ড তৈরি করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, ২৯ জুন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তার আগেই মেডিক্যাল বোর্ডকে রিপোর্ট দিতে হবে। রাজ্যের আইনজীবী চঞ্চল গঙ্গোপাধ্যায় জানান, এসএসকেএম হাসপাতালের সাত চিকিৎসককে নিয়ে বোর্ড তৈরি করে দেবে রাজ্য। আদালতের নোটিস পেয়েই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গর্ভস্থ ভ্রূণের হৃৎপিণ্ডে বড় রকমের সমস্যা রয়েছে বলে বারাসতের ওই মহিলা গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। ওই ভ্রূণের বয়স ২৪ সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। আইনত ২০ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাতের অনুমতি রয়েছে। এই সময়সীমা আরও বাড়ানো উচিত বলেও আজ মন্তব্য করেছেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কৌল। কেন্দ্রীয় সরকার এই সময়সীমা বাড়ানোর জন্য গর্ভপাত আইনে সংশোধনের কাজ শুরু করলেও তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

ওই মহিলার আবেদনের ভিত্তিতে বুধবারই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মতামত জানতে চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রের আইনজীবী অশোক পণ্ডা বলেন, মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টের ভিত্তিতেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। মহিলার স্বাস্থ্যের কথা ভেবে মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকদের তালিকা নিয়ে তৈরিই ছিলেন রাজ্যের আইনজীবী। তিনি আদালতকে তা জানিয়েও দেন।

অন্তঃসত্ত্বা ওই মহিলা বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টও আদালতে জমা দিয়েছিলেন। তা দেখে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেট্টি আবেদনকারীকে পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিয়েছেন, গর্ভস্থ শিশুটির পালমোনারি আর্টেসিয়া-র সমস্যা রয়েছে। যার ফলে মস্তিষ্ক-সহ সারা শরীরেই কম অক্সিজেন যায়। এর জন্য জন্মের পরই একাধিক জটিল অস্ত্রোচার করতে হবে। যাতে ঝুঁকির সম্ভাবনা খুবই বেশি। দীর্ঘস্থায়ী ফলও মেলে না। অধিকাংশ শিশুর ক্ষেত্রে জন্মের পর অস্ত্রোপচার করাও সম্ভব হয় না। ফলে তাদের শ্বাসকষ্ট হয়। খাওয়ানো মুশকিল হয়। এই শিশুরা সায়নোটিক স্পেল নামক একটি সমস্যার ভোগে, যাতে মস্তিষ্কে অক্সিজেন কম যাওয়ার জন্য সংজ্ঞা চলে যায়। মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘এই ধরনের প্রসবের পর মহিলার জীবন কেমন হবে, তা-ও বিবেচনা করা উচিত।’’

ওই মহিলার আইনজীবী স্নেহা মুখোপাধ্যায়ের যুক্তি, এখন চিকিৎসা ব্যবস্থা এতটাই উন্নত যে, ২৬ সপ্তাহ পর্যন্তও নিরাপদে গর্ভপাত সম্ভব। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভ্রূণের সমস্যা ধরা পড়ে ২০ সপ্তাহের পরে। অথচ তখন আইনত গর্ভপাতের অনুমতি থাকে না।

সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের নির্দেশ তাঁদের মামলাকে এক ধাপ এগিয়ে দিল বলে মনে করছেন আবেদনকারী ও তাঁর পরিবার। এ দিন তাঁরা জানান, মামলাটির জন্য তাঁরা সমস্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ওই মহিলার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা ভাল নয়। সেই অবস্থায় একাধিক জায়গায় বারবার একই ধরনের পরীক্ষা করানো এক ধরনের নৃশংসতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE