Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

আত্মহত্যা করলে সুবিচার মিলবে?

গোটা জীবন দেশের জন্য লড়েছেন। কিন্তু শেষ বয়সে এসে সেই দেশেরই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, ভাবেননি চন্দ্রশেখর জঙ্গম।  আটানব্বইয়ে পৌঁছেও যুদ্ধ থামেনি।

চন্দ্রশেখর জঙ্গম

চন্দ্রশেখর জঙ্গম

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০৪:৪১
Share: Save:

গোটা জীবন দেশের জন্য লড়েছেন। কিন্তু শেষ বয়সে এসে সেই দেশেরই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, ভাবেননি চন্দ্রশেখর জঙ্গম। আটানব্বইয়ে পৌঁছেও যুদ্ধ থামেনি।

কীসের যুদ্ধ? ১৯৬৪ সালে ভারত সরকারের একটি প্রকল্পের আওতায় জমি কিনেছিলেন চন্দ্রশেখর। রশিদ আজও যত্ন করে রেখে দিয়েছেন। তবে ৫৪ বছর কেটে গেলেও জমি হাতে পাননি।

এখন আর বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেন না চন্দ্রশেখর। জড়িয়ে গিয়েছে কথা। ১৯৪৩ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন চন্দ্রশেখর। ১৯৬২-তে ভারত-চিন যুদ্ধে এবং ১৯৬৫-তে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। এরই মধ্যে ১৯৬৪ সালে ভারতীয় সেনা জওয়ানদের সরকারি তরফে জমি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। চন্দ্রশেখরের নামে ১৫.৫ গুন্টা (১৭.৮৭৯ বর্গ ফুট) জমি বরাদ্দও করে সরকার। ১৯৬৮ সালে জমির দাম ৩,৫৪৭ টাকা মিটিয়েও দিয়েছিলেন। কিন্তু জমি মেলেনি।

অবসর নেওয়ার পরে প্রতি সপ্তাহে কালেক্টরের অফিসে ছুটেছেন চন্দ্রশেখর। ১৯৭৭-য়ে সরকারের কাছে জমির দাম ফেরত চান তিনি। তাও মেলেনি। ১৯৮৩ পর্যন্ত নিয়মিত খোঁজখবর নিয়েছেন। লাভ হয়নি।

২০১৩ সালে ওই জমি নিয়ে ফের উঠেপড়ে লাগেন চন্দ্রশেখরের ছেলে। একটি আরটিআই আবেদন করেন তিনি। তাতে তথ্য মেলে, বর্তমানে ওই জমির বড় অংশ রাস্তা বাড়াতে খরচ হয়ে গিয়েছে। কিছুটা অন্য বাসিন্দাদের দেওয়া হয়েছে। বাকিটা রয়েছে সাতারা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের আওতায়। গত সপ্তাহে চন্দ্রশেখরের পরিবার ও এবিভিএলএমের শীর্ষকর্তা বিজয় জঙ্গম রাজস্বমন্ত্রী চন্দ্রশেখর পাতিলের সঙ্গে দেখা করেন। আশ্বাসও মিলেছে। কিন্তু ৯৮ বছরের চন্দ্রশেখর আর আশায় ভুলতে রাজি নন। জড়ানো, ভাঙা গলায় বললেন, ‘‘সুবিচার পেতে হলে আমার মতো সব বৃদ্ধ মানুষকে কি তবে মন্ত্রালয়ে গিয়ে আত্মহত্যা করতে হবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE