গুরুদয়ালের বাঁ হাতের অতিরিক্ত এই বুড়ো আঙুল নিয়েই বিপত্তি।
হৃতিক রোশনের সঙ্গে তাঁর একটিই মিল!
হৃতিকের ডান হাতে রয়েছে একটি অতিরিক্ত আঙুল। তাঁর বাঁ হাতে রয়েছে বাড়তি একটি আঙুল। এই ছ’নম্বর আঙুলটির জন্যই আধার কার্ড বানাতে গিয়ে আট মাস ধরে ভুগতে হয়েছে মহারাষ্ট্রের গুরুদয়াল দিলবাগ রায় ত্রিখাকে।
দেশের সব ক্ষেত্রেই আধার বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্র। তা নিয়ে মামলাও চলছে। নাসিকের গাঁধীনগরের বাসিন্দা গুরুদয়াল জানেন, আধার না হলে সরকারি কোনও সুবিধা মিলবে না। তাই আধার রেজিস্ট্রেশনের জন্য দোরে দোরে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু সব জায়গা থেকে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে তাঁকে!
আধার কার্ড করাতে প্রয়োজন হয় বায়োমেট্রিক তথ্য। তার মধ্যে পড়ে দু’হাতের দশ আঙুলের ছাপও। সেই ছাপ নেওয়ার যন্ত্রও সে ভাবেই তৈরি। ফরম্যাটে দশ আঙুলের জন্য দশটি খোপ। আর এতেই ফাঁপরে পড়েন গুরুদয়াল! সংবাদমাধ্যমে তাঁর খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে অবশ্য রেজিস্ট্রেশন করাতে পেরেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: চলো পাল্টাই বনাম উল্টাই, লড়াই আজ
গত আট মাসের সেই লড়াইয়ের গল্পটাই সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেছেন বেসরকারি সংস্থার বছর ছত্রিশের কর্মী গুরুদয়াল। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বাঁ হাতে ছ’টি আঙুল। বুড়ো আঙুল দু’টি। একে অপরের সঙ্গে জোড়া। ফলে আঙুলের ছাপ না নিয়ে ফিরিয়ে দেয় স্থানীয় আধার কেন্দ্র। এর পরে তিনি ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ইউআইডিএআই) –এর বিভিন্ন রেজিস্ট্রেশন সেন্টারে ঘুরেছেন। কাজ হয়নি। তবু থেমে থাকেননি। এর পরে তিনি বিভিন্ন সরকারি অফিসারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। কিন্তু খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কেউই সমস্যা মেটাননি। এর পরে তাঁর হয়রানির কথা সংবাদমাধ্যমের নজরে আসে। প্রশ্ন ওঠে ভিআইপি বা তারকা বলে কি কাউকে এ ভাবে ফেরানো হত? খবর ছড়িয়ে পড়তেই অবশেষে গত কাল একটি কেন্দ্রে গিয়ে আধার কার্ডের রেজিস্ট্রেশন করাতে পেরেছেন গুরুদয়াল। এখন শুধু আধার কার্ড হাতে পাওয়ার অপেক্ষা!
কী বলছেন গুরুদয়াল? তাঁর বক্তব্য, ‘‘গোটা প্রক্রিয়াটিরই পরিবর্তন করা উচিত। আমার মতো অনেকেরই বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা রয়েছে। সরকারের উচিত নিয়মকানুনগুলি একটু শিথিল করা। অন্তত প্রতিবন্ধী এবং বয়স্কদের জন্য প্রক্রিয়াটা একটু সহজ করা প্রয়োজন।’’
ছ’আঙুলের জন্য ছোটবেলায় অল্পবিস্তর ভুগতে হয়েছে হৃতিককে। স্কুলে নিজেকে একা ও অস্বাভাবিক ভাবতেন একটা সময়ে। এখন এই আধুনিক ডিজিটাল ভারতেও তাঁকে এতটা ভুগতে হবে, ভাবতে পারেননি আম আদমি গুরুদয়াল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy