Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
র‌্যাগিং কি, উঠছে প্রশ্ন

সাইয়ের হস্টেলে আত্মঘাতী খেলোয়াড়

হস্টেলের ঘরেই বিষফল খেয়ে আত্মঘাতী হল কেরলের আলাপুঝায় ‘ওয়াটার স্পোর্টস সেন্টার’-এর এক ছাত্রী। হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষছে তার তিন বন্ধুও। মিলেছে একটি সুইসাইড নোটও। তবে তা থেকে আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলেনি, জানাচ্ছে পুলিশ। ওই চার জনের পরিবারের অবশ্য দাবি, সিনিয়রদের লাগাতার হেনস্থার জেরেই পরিকল্পনা করে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে মেয়েরা।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি ও আলাপুঝা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৫ ০২:৫৮
Share: Save:

হস্টেলের ঘরেই বিষফল খেয়ে আত্মঘাতী হল কেরলের আলাপুঝায় ‘ওয়াটার স্পোর্টস সেন্টার’-এর এক ছাত্রী। হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষছে তার তিন বন্ধুও। মিলেছে একটি সুইসাইড নোটও। তবে তা থেকে আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলেনি, জানাচ্ছে পুলিশ। ওই চার জনের পরিবারের অবশ্য দাবি, সিনিয়রদের লাগাতার হেনস্থার জেরেই পরিকল্পনা করে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে মেয়েরা। খাস সাই (স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া)-এর অন্দরে ‘র‌্যাগিং’-এর জেরে খেলোয়াড়ের আত্মঘাতী হওয়ার অভিযোগে উত্তাল কেরল। দ্রুত তদন্তের দাবি উঠেছে লোকসভাতেও।

কাল সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ হস্টেলের ঘরে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল চার বন্ধুকে। তড়িঘড়ি তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্থানীয় মেডিক্যাল কলেজে। চিকিৎসকরা গত কালই জানিয়েছিলেন, প্রত্যেকের অবস্থা সঙ্কটজনক। এর পর জাতীয় স্তরে খেলা ১৫ বছরের অপর্ণা আজ সকালে মারা যায়। বাকি তিন জনের অবস্থাও গুরুতর। এদের এক জন সম্প্রতি সোনাও জিতেছিল।

তবে কি এমন হল, যার জেরে এ হেন পদক্ষেপ করতে হল অপর্ণাদের?

পুলিশ জানিয়েছে, চার জনের সই করা ওই সুইসাইড নোটে অনেক কথার মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ তাদের চোখে পড়েছে— ‘‘ছোট ছোট ভুলগুলোকে ওরা বড় করে দেখাত...।’’ কিন্তু ঠিক কী ভুল ওরা করেছিল, তাঁর উল্লেখ নেই চিঠিতে।

ওই চার খেলোয়াড়ের পরিবার অবশ্য সরাসরি আঙুল তুলেছে সাই কর্তৃপক্ষের দিকে। তাঁদের অভিযোগ, সিনিয়র ও কোচেদের মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের জেরে এই কাণ্ড করে বসেছে মেয়েরা। অপর্ণার এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘দু’দিন আগেই মেয়েটাকে প্রচণ্ড মারধর করেছিলেন কোচ। ভাল করে দাঁড়াতে-বসতে পারছিল না ও।’’ অনেকে এ-ও বলছেন, ইদানিং সমাজবিরোধী কাজকর্ম শুরু হয়েছে হস্টেলের আশপাশে। খারাপ হয়েছে হস্টেলের পরিবেশও। এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন হস্টেলের ওয়ার্ডেন। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়েরা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে বলে খবর পাই। তার আগে কিছু জানতে পারিনি।’’ এ-ও দাবি করেন, এখনও পর্যন্ত ওয়াটার স্পোর্টস সেন্টারের কোনও খেলোয়াড় র‌্যাগিং-এর অভিযোগ আনেনি।

আলাপুঝার এসপি কে কে বালচন্দ্রনের কথায়, ‘‘ওই ছোট্ট ভুলটা আসলে মদ খাওয়া।
ক’দিন আগে চার জন মিলে বিয়ার খেয়েছিল। তার জেরে বকা খেতে হয় ওদের। পরে সিনিয়ররাও বিষয়টি নিয়ে পিছনে লাগে।’’ তিনি আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, সেই ঘটনার জেরেই ওই ছাত্রীরা বিষফল খায়। কিন্তু ওদের বাড়ির লোক যে ভাবে নির্যাতনের অভিযোগ আনছে, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। কোনও শারীরিক নির্যাতনের প্রমাণও মেলেনি, জানান এসপি। একই দাবি সাই কর্তৃপক্ষেরও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যদি র‌্যাগিংয়ের ঘটনাই ঘটত, আমাদের কাছে এক বার অন্তত অভিযোগ জানাতে পারত ওরা!’’

ক্রীড়া মন্ত্রকের পক্ষ থেকে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্রীড়ামন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল বলেন, ‘‘মৃত খেলোয়াড়ের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বাকি তিন জনের চিকিৎসার খরচ বহন করবে সরকারই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE