Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

নজরদারির অস্ত্র আধার, সওয়াল আদালতে

আইনজীবী শ্যাম দিভান আজ তাঁর সওয়ালে বলেন, আধার রাষ্ট্রের হাতের এমন এক ‘সুইচ’, যা বন্ধ করে দিলে কোনও মানুষের ‘নাগরিক মৃত্যু’ হতে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৩৩
Share: Save:

আধার এমন এক অস্ত্র, যার সাহায্যে সরকার দেশের নাগরিকদের উপর সর্বক্ষণ নজরদারি করতে পারে। এই ব্যবস্থা চলতে দিলে ভারত এক ‘সর্বগ্রাসী, পুলিশ রাষ্ট্র’-তে পরিণত হবে বলে অভিযোগ উঠল সুপ্রিম কোর্টে।

বুধবার থেকে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চে আধারের মূল মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। আয়কর রিটার্ন থেকে মোবাইল সংযোগ— সব ক্ষেত্রেই আধার বাধ্যতামূলক করার বিরুদ্ধে, আধার ব্যক্তি পরিসরে আঘাত করছে বলে অভিযোগ তুলে এবং একে অসাংবিধানিক আখ্যা দেওয়ার দাবিতে ২৭টি মামলা দায়ের হয়েছে। শীর্ষ আদালত ইতিমধ্যে ব্যক্তি পরিসরের অধিকারকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়ায়, নতুন অস্ত্র পেয়ে গিয়েছেন মামলাকারীরা।

আইনজীবী শ্যাম দিভান আজ তাঁর সওয়ালে বলেন, আধার রাষ্ট্রের হাতের এমন এক ‘সুইচ’, যা বন্ধ করে দিলে কোনও মানুষের ‘নাগরিক মৃত্যু’ হতে পারে। কারণ কাগজে-কলমে আর তাঁর কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। কারণ, আধার ব্যবস্থা কোনও মানুষকে চেনে না, শুধু একটা নম্বরকে চেনে। এ এমন এক বিরাট ইলেকট্রনিক ব্যবস্থা, যা নজরদার রাষ্ট্র তৈরি করে। দিভান আরও বলেন, আধার ব্যবস্থার সঙ্গে দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নও জড়িত। কারণ, আধারের তথ্যভাণ্ডারের উপর সরকারের কার্যত কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। সম্প্রতি আধার তথ্য চুরি যাওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানতে চান, যে কারণে বায়োমেট্রিক সংগ্রহের কথা বলা হচ্ছে, যদি সে কারণেই ব্যবহার হয়, তা হলে সমস্যা কোথায়? দিভান বলেন, অসৎ উদ্দেশে ব্যবহারের পথ তৈরি করে রাখাটাও বিপদের।

আদালতের বাইরে আধার নিয়ে বিজেপি-কে দুষেছেন রাহুল গাঁধী। টুইটে কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, ইউপিএ-র আধার ছিল নাগরিকদের ক্ষমতায়নে ঐচ্ছিক ব্যবস্থা। কিন্তু এনডিএ নাগরিকদের ক্ষমতা কাড়তে আধারকে বাধ্যতামূলক করেছে।

আধার আইনকে অর্থ বিলের তকমা দিয়েছিলেন লোকসভার স্পিকার। রাজ্যসভায় তা নিয়ে আপত্তি উঠলেও, সরকার কান দেয়নি। ফলে সিলেক্ট কমিটিতে বিল পাঠানোর দাবি উঠলেও তা হয়নি। আজ প্রথম দিনেই প্রধান বিচারপতি জানতে চান, বিলটি সংসদীয় কমিটিতে গিয়েছিল কি না? পি চিদম্বরম আইনজীবী হিসেবে যুক্তি দেন, এই বিলকে অর্থ বিলের তকমা দেওয়াই ভুল।

প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, স্পিকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতে বিচার হতে পারে কি না? চিদম্বরমের যুক্তি, অবশ্যই পারে। আইনজীবীরা মনে করছেন, আইন পাশের প্রক্রিয়াটিও বিতর্কে এসে যাওয়ায় মোদী সরকার সমস্যায় পড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE