Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বাম থেকে ডানে ডাক এবিভিপির

এবিভিপি-র উত্তর-পূর্ব রাজ্য সম্পাদক মনোজকান্তি দাসের কথায়, ‘‘কমিউনিস্টরা ভারতে থেকে বিদেশি চিন্তাভাবনার পৃষ্ঠপোষকতা করেন। তাই কমিউনিস্ট-মুক্ত ভারত গঠনের লক্ষ্যে দেশ জুড়ে অভিযান শুরু হচ্ছে।’’

এবিভিপি।

এবিভিপি।

উত্তম সাহা
শিলচর শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৪
Share: Save:

‘চলো কেরল’ স্লোগানের সঙ্গে তাল মিলিয়েই দক্ষিণ অসমের বরাক উপত্যকায়, কমিউনিস্টদের ‘বাড়ি বাড়ি অভিযান’ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। কমিউনিস্ট নেতা, কর্মী, সমর্থকদের বাড়ি চিহ্নিত করে তাঁদের বাড়িতে যাবেন এবিভিপি প্রতিনিধিরা। স্থানীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, কমিউনিস্ট ভাবধারা ছেড়ে ‘জাতীয়তাবাদী’ সংগঠনে তাঁদের নাম লেখানোর আহ্বান জানাবেন তাঁরা। অভিযানের দিন-তারিখ এখনও পাকা হয়নি। কিন্তু তার আগেই বরাকের বিভিন্ন অংশে এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চাপান-উতোর শুরু হয়ে গিয়েছে।

এবিভিপি-র উত্তর-পূর্ব রাজ্য সম্পাদক মনোজকান্তি দাসের কথায়, ‘‘কমিউনিস্টরা ভারতে থেকে বিদেশি চিন্তাভাবনার পৃষ্ঠপোষকতা করেন। তাই কমিউনিস্ট-মুক্ত ভারত গঠনের লক্ষ্যে দেশ জুড়ে অভিযান শুরু হচ্ছে।’’ তাঁর মতে, বরাক উপত্যকায় সিপিএমের একটা ঘাঁটি রয়েছে। ১৯৭৪ সালে নুরুল হুদা শিলচর থেকে সাংসদ হয়েছিলেন। ১৯৭৮ সালে বরাক উপত্যকা থেকে চার বাম-বিধায়ক নির্বাচিত হন। সেই সংগঠন বা ভোট-ব্যাঙ্ক না থাকলেও এখনও বামেদের কিছু বাঁধাধরা ভোট রয়েছে বরাকের বিভিন্ন অংশে। বুঝিয়ে-সুঝিয়ে তাঁদের ‘সঠিক পথে’ আনা অসম্ভব নয় বলেই মনে করেন এবিভিপি নেতৃত্ব।

তবে এই বোঝানোর আড়ালে ‘প্রচ্ছন্ন হুমকি’ রয়েছে বলেই মনে করছেন এসইউসিআই নেতা প্রদীপ দেব। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি যাবে আর কী, হুমকি দেবে!’’ এবিভিপি-র এই অভিযান কর্মসূচি নিয়ে ক্ষুব্ধ সিপিএম নেতৃত্ব। কাছাড় জেলা কমিটির সম্পাদক তপোজ্যোতি ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘মোদীর পায়ের নীচের মাটি সরে যাচ্ছে। ভয় পেয়েই গেরুয়াবাহিনী এবিভিপিকে মাঠে নামাচ্ছে।’’ সিপিএম তাদের মোকাবিলায় তৈরি বলেই জানিয়েছেন তপোজ্যোতিবাবু। এই অভিযানের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে কংগ্রেসও। কংগ্রেস মুখপাত্র সঞ্জীব রায় মনে করেন, সাড়ে তিন বছরের শাসনে মোদী সরকারের জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে। এই অবস্থায় কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক ভাঙা সম্ভব নয় জেনেই বাম-ভোটে আঘাত হানার পরিকল্পনা করেছে গেরুয়াবাহিনী। তবে তাতেও কোনও লাভ হবে না বলেই তাঁর ধারণা। তাঁর কথায়, ‘‘ক্ষমতার হাতছানি না থাকা সত্ত্বেও বামপন্থীরা যে ভাবে নীতি আঁকড়ে জীবন কাটিয়ে দেন, তাতে তাঁদের কাছে এবিভিপির এই ধরনের আহ্বান অর্থহীন।’’

উল্লেখ্য, কমিউনিস্টদের চোখ উপড়ে নেওয়ার হুমকি ঘিরে দেশ জুড়ে বিতর্ক শুরু হয়। তাতে খানিকটা অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি। সে কারণে ‘অভিযানের নামে হুমকি’-র অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে বরাকের এবিভিপি নেতৃত্ব। বিজেপি নেতা তথা অসম বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার দিলীপ পাল এবিভিপির সিদ্ধান্তে আশাবাদী। দিলীপবাবুও ‘জাতীয়তাবাদী চিন্তাধারার দলে’ সামিল হওয়ার জন্য বামপন্থীদের আহ্বান জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ABVP এবিভিপি চলো কেরল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE