Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আইনজীবী নিয়োগ নিয়ে অমিত শাহের প্রস্তাব উড়িয়ে দিলেন যোগী

বিজেপির সূত্র বলছে, নতুন স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলের প্রধান করা হয়েছে রমেশ পান্ডেকে, যিনি বিজেপির দিল্লি নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ নন। অখিলেশ জমানায় অতিরিক্ত প্রধান স্ট্যান্ডিং কৌঁসুলি ছিলেন বিনয়ভূষণ।

জয়ন্ত ঘোষাল
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৭ ০৪:১৯
Share: Save:

বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ এবং আরএসএস নেতৃত্বের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সংঘাতের বিষয় ইলাহাবাদ হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট এবং অন্যান্য আদালতে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি আইনজীবীদের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিল ও আইন অফিসার নিয়োগ। মোট ৩২৮ জন আইনজীবী নিযুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৪৯ জন স্ট্যান্ডিং কাউন্সিল, ২০১ জন আইনজীবী, ১২৭ জন ব্রিফ হোল্ডার।

রাজ্য সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে এই নামগুলি ঘোষণা করলেও চিরকাল দলের পক্ষ থেকেই সেগুলি চূড়ান্ত করা হয়। বিজেপির ক্ষেত্রে আগে দলের শীর্ষ নেতারা নাম সুপারিশ করতেন, এখন দলের সমস্ত সুপারিশের কেন্দ্রীকরণ হয়েছে। দিল্লির ছাড়পত্রের ভিত্তিতেই তালিকা তৈরি হয়। এ বারও দিল্লি থেকে ৩২৮ জনের নাম পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ১২০টি নাম পাল্টে দেন মুখ্যমন্ত্রী। অখিলেশ যাদবের সময়ে কাজ করেছেন এমন অনেককেই রেখে দিয়েছেন তিনি।

বিজেপির সূত্র বলছে, নতুন স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলের প্রধান করা হয়েছে রমেশ পান্ডেকে, যিনি বিজেপির দিল্লি নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ নন। অখিলেশ জমানায় অতিরিক্ত প্রধান স্ট্যান্ডিং কৌঁসুলি ছিলেন বিনয়ভূষণ। তাঁকেও বিজেপি বদলাতে চেয়েছিল কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী রাজি হননি। সমাজবাদী পার্টির ঘনিষ্ঠ ১৫ জন আইনজীবীকে আদিত্যনাথ স্ট্যান্ডিং কাউন্সিল হিসেবে রেখে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ দল। দলের অসন্তোষের খবর উড়িয়ে আদিত্যনাথের অবশ্য দাবি, ‘‘সরকারি পদে নিয়োগের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। সরকারি নিয়োগ নিয়ে দল মাথা ঘামায় না।’’

কিন্তু ঘটনা হল, পাছে আইনমন্ত্রী দলের কাছে ফাইলটি ফেরত পাঠান, তাই গত শুক্রবার আদিত্যনাথ নিজেই তাতে সই করে বিজ্ঞপ্তি জারি করার জন্য পাঠিয়ে দেন। তিনি দলের চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে রাজি নন বলে রাজ্যের নানা
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ও কমিটির মনোনয়নও আটকে আছে।

বিজেপি সূত্র বলছে, যত দিন যাচ্ছে ততই কেন্দ্রের সঙ্গে দূরত্ব রচনা করছেন আদিত্যনাথ। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে তিনি মোদীর প্রথম পছন্দ ছিলেন না। পছন্দের প্রার্থী ছিলেন কেন্দ্রীয় টেলিকমমন্ত্রী
মনোজ সিন্হা। কিন্তু আদিত্যনাথের পিছনে দাঁড়ায় সঙ্ঘ পরিবার। তাঁকে চাপে রাখার জন্য বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ দুই নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ এবং শ্রীকান্ত শর্মাকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী করার পাশাপাশি মুখপাত্রও করে দেওয়া হয়। কিন্তু আদিত্য মন্ত্রিসভার ভিতর নিজের একটি ছোট গোষ্ঠী তৈরি করে ফেলেছেন। দ্বিতীয়ত, রাজ্যে সমস্ত প্রকল্প, এমনকী কেন্দ্রীয় প্রকল্পের প্রচারে মোদীর পরিবর্তে আদিত্যনাথের ছবি প্রকাশিত হচ্ছে বিরাট করে।

ঘটনা হল, আদিত্যনাথ অন্যান্য রাজ্যেও খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড প্রভৃতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভোট প্রচারের জন্য তাঁকে ডেকে পাঠাচ্ছেন। বিজেপির মোদীভক্ত কিছু নেতার অভিযোগ, আদিত্যনাথ ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। আবার আদিত্যনাথের ঘনিষ্ঠ রাজ্য নেতারা বলছেন, আদিত্যনাথের জনপ্রিয়তা দিল্লির হজম হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE