Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

মৃত্যুর সাত দশক পরে শেষকৃত্য মার্কিন সেনার

রবিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার কনকর্ডে ম্যাগনোলিয়া বেরিয়াল গ্রাউন্ডে অক্সফোর্ডের কফিনে রাখা হয় তাঁর প্রেমিকা সুজানের ছবিও।

ইউজিনের কফিন। ছবি:ফেসবুকের সৌজন্যে।

ইউজিনের কফিন। ছবি:ফেসবুকের সৌজন্যে।

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ০৪:১৪
Share: Save:

মৃত্যুর সাত দশক পরে সামরিক মর্যাদায় স্বভূমিতে সমাধিস্থ করা হল মার্কিন বিমানবাহিনীর ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট রবার্ট ইউজিন অক্সফোর্ডকে। রবিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার কনকর্ডে ম্যাগনোলিয়া বেরিয়াল গ্রাউন্ডে অক্সফোর্ডের কফিনে রাখা হয় তাঁর প্রেমিকা সুজানের ছবিও।

১৯৪২ সালে ‘টেক্সাস আর্মি ফ্লাইং স্কুল’ থেকে উত্তীর্ণ হয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেন ২৪ বছরের ইউজিন অক্সফোর্ড। কথা ছিল, প্রথম ছুটিতেই দেশে ফিরে বাগদত্তা সুজানকে বিয়ে করবেন তিনি। চিনের কুনমিংয়ে তাঁর প্রথম পোস্টিং। ১৯৪৪ সালের ২৫ জানুয়ারি, কুনমিং থেকে ভারতের চাবুয়ার উদ্দেশে ওড়ে মার্কিন বিমানবাহিনীর ‘৩০৮ বম্বার্ডমেন্ট গ্রুপ’-এর ‘বি-২৪ লিবারেটর হেভি বম্বার’ যুদ্ধ বিমান। এর পোশাকি নাম ছিল ‘হট অ্যাজ হেল’। মন্দ আবহাওয়ায় অরুণাচলের পাহাড়ে ওই দিন ভেঙে পড়ে পাঁচটি বিমান। দু’টি বিমানের আরোহীরা প্যারাসুটে নামতে পারেন। একটির আরোহীদের মৃতদেহ মেলে। কিন্তু খোঁজ মেলেনি ‘হট অ্যাজ হেল’ ও ‘হ্যালিজ কমেট’ বিমান ও বিমানকর্মীদের।

আরও পড়ুন: তুরস্ক, গ্রিসের দ্বীপে ভূমিকম্পে মৃত

২০০৬ সালে অরুণাচলের পর্বতারোহী ওকেন তায়েং ৯ হাজার ফুট উচ্চতায় আপার সিয়াং জেলায় ‘হট অ্যাজ হেল’-এর ধ্বংসাবশেষ দেখতে পান। ২০০৯ সালে মার্কিন সরকার ও বেসরকারি অভিযাত্রী দল বিমানের ধ্বাংসাবশেষ ও হাড়গোড় উদ্ধার করে। ডিএনএ পরীক্ষায় প্রমাণ হয় ওই হাড়গোড় অক্সফোর্ডের। কিন্তু লাল ফিতের ফাঁসে আটকে পড়ে দেহাবশেষ আমেরিকায় ফেরানোর কাজটি। শেষ পর্যন্ত এই জুনেই অক্সফোর্ডের দেহাংশ আমেরিকার হাতে তুলে দেয় ভারত সরকার।

দু’দশক অক্সফোর্ডের অপেক্ষায় ছিলেন সুজান। অনেক পরে এক রেভারেন্ডের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী হন তিনি। কিন্তু অক্সফোর্ডের স্মৃতি আঁকড়ে ছিলেন শেষ দিন পর্যন্ত। ২০০৯ সালে অক্সফোর্ড মারা যাওয়ার খবর আসতে একেবারেই ভেঙে পড়েন। ২০১১ সালে ৯০ বছর বয়সে সুজানের মৃত্যু হয়।

গত বৃহস্পতিবার ইউজিনের কফিন আটলান্টায় পৌঁছয়। সেনা কনভয়ে তা কনকর্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার পূর্ণ সামরিক মর্যাদায় অক্সফোর্ডের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। হাজির ছিলেন পরিবারের সদস্যরা। অক্সফোর্ডের ভাইপোর স্ত্রী মেরিল রোয়ান সযত্নে সুজানের ছবি অক্সফোর্ডের কফিনে, সামরিক পোশাকের উপরে রাখেন। রাখা হয় তাঁর ছয় সঙ্গীরও ছবি। এপিটাফে লেখা হয়েছে—ইউ আর নট অ্যালোন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Army Death Guwahati
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE