ফাইল চিত্র।
সীমান্তে যুদ্ধের জিগির কমিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কটমোচনের চেষ্টা শুরু হলো ভারত এবং চিনের মধ্যে। আজ ব্রিকস-এর নিরাপত্তা সমন্বয় নিয়ে বৈঠকের পাশাপাশি চিনের স্টেট কাউন্সিলার ইয়াং জিয়েচির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। সূত্রের খবর, বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে ডোকলাম পরিস্থিতি নিয়ে।
ডোভাল যখন বেজিং-এ দৌত্য করছেন তখন নয়াদিল্লি থেকেও উত্তাপ কমানোর জন্য সক্রিয়তা শুরু হয়েছে। আজ রাজ্যসভায় বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং জওহরলাল নেহরু ভবনে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল ওয়াগলে একযোগে জানিয়েছেন, চিনের সঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজে ভারত আগ্রহী। এই প্রসঙ্গে ডোকলাম কাণ্ডের ঠিক আগে (৮ জুন) আস্থানায় হওয়া ভারত-চিন শীর্ষ বৈঠককে সামনে নিয়ে এসেছে সাউথ ব্লক। মুখপাত্রের কথায়, ‘‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং চিনের প্রেসিডেন্টের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে উন্নয়নের কাজকর্ম এগোনো নিয়ে ঐকমত্য হয়েছিল আস্থানায়। এই অংশীদারিত্ব গোটা বিশ্বের স্থিতিশীলতার জন্যই জরুরি।’’ এখানেই না থেমে গোপাল ওয়াগলে বলেছেন, ‘‘দু’দেশের মধ্যে মতপার্থক্য বিবাদে পরিণত হওয়া উচিত নয়। ভারত-চিন সম্পর্কের অনেক স্তর রয়েছে।’’
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দিল্লি থেকে এই ইতিবাচক বার্তা দেওয়ার কিছু পরেই বেজিং-এ বৈঠকে বসেছেন ডোভাল-জিয়েচি। সূত্রের খবর, আজকের বৈঠকের পরেই ডোকলাম থেকে দু’দেশের সেনা প্রত্যাহার সম্ভব নয়। কিন্তু পরিস্থিতি সহজ হওয়ার একটা প্রক্রিয়া আজ শুরু হলো। বৈঠক শুরু হওয়ার আগে বেজিংও কিছুটা সুর নরম করেছে। চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা শিনহুয়ার একটি খবরে ভারতীয় অর্থনীতিকে সামলানোর প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করা হয়েছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে দু’দেশের বাণিজ্যিক যোগাযোগ আরও বাড়ানো প্রয়োজন। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, এটিকে
একটি সদর্থক বার্তা হিসাবেই দেখা উচিত। ভারতের বিশাল বাজার চিনের কাছে আকর্ষণীয়। ফলে সামরিক সংঘাতকে এড়ানোর চেষ্টা চিনও করতে চাইছে বলেই মনে করছেন কূটনীতিকেরা।
সূত্রের খবর, ডোভাল-জিয়েচির বৈঠকে এমন একটি সূত্রের সন্ধান করা শুরু হয়েছে যাতে দু’দেশেরই মুখরক্ষা হয়। চিনের বক্তব্য ভারত সেনা প্রত্যাহার করে নিক। ভারতের বক্তব্য, চিন সেনা প্রত্যাহার করলেই ভারতও পিছু হটবে। ভারতের যুক্তি, ২০১২ সালের একটি লিখিত সমঝোতায় স্থির হয়েছিল ভারত, চিন এবং ভুটানের সীমান্ত যেখানে মিলেছে সেই অঞ্চলে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা হবে। সীমান্ত নিয়ে যে বিবাদ রয়েছে তা আলোচনার মাধ্যমেই স্থির হবে। চিনের পাল্টা যুক্তি, ডোকলামের অবস্থান সীমান্তের কোন দিকে তা নিয়ে বিবাদ থিম্পুর সঙ্গে বেজিং-এর। নয়াদিল্লির কোনও অধিকার নেই নাক গলানোর।
এই দুই যুক্তির ফাঁকেই সূত্র খোঁজার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এই স্নায়ুর যুদ্ধে কে আগে চোখের পলক ফেলবে এখন সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy