পঁচাত্তরের পরে আর পদ নয়। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা ক্ষমতার রাশ ধরার পরই এই অঘোষিত ফরমান চাউড় করা হয়েছিল। আর তাতেই সরকারে ও দলে ব্রাত্য হয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশী, যশবন্ত সিন্হার মতো প্রবীণ নেতারা। এই নেতারা সকলেই পার করেছিলেন পঁচাত্তরের কোঠা। ভোট বড় বালাই। কর্নাটক ভোটের আগে মোদী জমানার সেই অঘোষিত প্রথাই তুলে দিলেন খোদ বিজেপি সভাপতি অমিত!
কারণ, গত বছরই অমিত ঘোষণা করেছেন কর্নাটকের ভোটে মুখ্যমন্ত্রী পদে দলের মুখ হবেন ইয়েদুরাপ্পা। ২৭ ফেব্রুয়ারি ৭৫ বছর পূর্ণ হবে ইয়েদুরাপ্পার। ভোট তার পরেই। ঘনিষ্ঠ মহলে অমিত জানিয়েছেন, বয়স নিয়ে এমন কোনও প্রথাই নেই। যদিও বয়সসীমা নিয়ে এই অঘোষিত প্রথার কথা তুলেই আডবাণী-জোশীদের সরকারে তো বটেই, দলেও কোনও পদ না দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল মার্গদর্শক মণ্ডলীতে। যাঁদের কাজ ছিল দলকে পথ দেখানো। সাড়ে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও যে মণ্ডলীর একটিও বৈঠক হয়নি। দলকে পথ দেখানোরও সুযোগ পাননি। যশবন্ত সিন্হা কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ২০১৪ সাল থেকেই বিজেপিতে ৭৫ বছর পার হলে ‘ব্রেন- ডেড’ হওয়া শুরু হয়েছে।
বিজেপি নেতারা অবশ্য এখন দাবি করছেন, দলে এমন কোনও প্রথাই কোনও দিন ছিল না। থাকলে কলরাজ মিশ্র কী করে ৭৫ পেরিয়েও মোদী মন্ত্রিসভায় রইলেন। এ ক্ষেত্রেও বাস্তবটি হল, বয়সের কথা সামনে রেখেই গত বছর মন্ত্রিসভার রদবদলের মুখে ইস্তফা দিয়েছিলেন কলরাজ। মন্ত্রিসভা থেকে সরতে হয়েছিল নাজমা হেপতুল্লাকে। অমিতের চাপে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরার সময়ও ৭৫ বছরের দোহাই দিয়েছিলেন আনন্দীবেন পটেল। যিনি সদ্য মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল হয়েছেন।
বিজেপির এক সূত্রের মতে, আসলে কর্নাটকে ইয়েদুরাপ্পা ছাড়া আর কোনও মুখ নেই দলের। গুজরাতে ভাল রকম ধাক্কা খাওয়ার পরে কর্নাটকেও লডা়ইটা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ, রাহুল গাঁধী এ বারে অনেক বশি বেশ সক্রিয়। ফলে এখন বয়সের সীমারেখা তুলে দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই। আডবাণী-জোশীরা এখন প্রশ্ন তুলতেই পারেন, তবে কি তাঁদের কোণঠাসা করাই ছিল ওই অঘোষিত ফরমানের লক্ষ্য?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy