Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কথা রাখেনি কেন্দ্র, ফসলের দামে ক্ষোভ

চাষিদের ক্ষোভের আগুনে আজ ঘৃতাহুতি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু। উত্তরপ্রদেশ সরকার কৃষিঋণ মকুব করার পর সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকারও সেই পথে হেঁটেছে। একই পদক্ষেপ করেছে পঞ্জাব ও কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৭ ০৫:০৬
Share: Save:

এ বার কেন্দ্রের ঘোষিত খারিফ ফসলের দামে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ল চাষিদের মধ্যে। ফের অভিযোগ উঠল, লোকসভা ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাষের খরচের দেড় গুণ ফসলের দাম দেওয়া দূরের কথা, ফসলের চাষের খরচের থেকেও কম দাম নির্ধারণ করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।

চাষিদের ক্ষোভের আগুনে আজ ঘৃতাহুতি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু। উত্তরপ্রদেশ সরকার কৃষিঋণ মকুব করার পর সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকারও সেই পথে হেঁটেছে। একই পদক্ষেপ করেছে পঞ্জাব ও কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার। তার পরে আজ বেঙ্কাইয়া মন্তব্য করেছেন, ‘‘কৃষিঋণ মকুবটা এখন ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

লোকসভা ভোটের আগে মোদীর প্রতিশ্রুতি ছিল, স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী চাষের খরচের সঙ্গে তার ৫০ শতাংশ জুড়ে ফসলের ন্যূনতম দাম ঠিক হবে। সেই প্রতিশ্রুতি রাখা হয়নি। উল্টে দেশ জুড়ে কৃষক-বিক্ষোভ ছড়াচ্ছে। বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশে কৃষকদের উপর গুলি চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দু’জন কৃষক ঋণের দায়ে আত্মহত্যা করায় দু’সপ্তাহে এই সংখ্যা পৌঁছল ১৯-এ।

বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, মোদী সরকারের কৃষিনীতিটি ঠিক কী? কারণ উত্তরপ্রদেশে ভোটের প্রচারে মোদীই কৃষকদের ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। উত্তরপ্রদেশ ও অন্যান্য রাজ্য চাপের মুখে ঋণ মকুব করলেও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে সাহায্য করবে না। এখন খারিফ ফসলেও দাম না পেলে কৃষকদের দেনা আরও বাড়বে।

২০১৭-১৮ অর্থ বছরের জন্য ১৪টি ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঠিক করেছে মোদী সরকার। কিন্তু কৃষক বিক্ষোভের জন্য সেই দাম ঘোষণা না-করে শুধু রাজ্যগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কৃষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, ধান, ডাল, তৈলবীজ, তুলোর ক্ষেত্রে যেটুকু বেড়েছে, তাতে শুধুমাত্র বাজার দরের মূল্যবৃদ্ধিটুকুই সামাল দেওয়া যাবে। ধানের ক্ষেত্রেই যেমন ন্যূনতম সহায়ক মূল্য প্রতি কুইন্টালে বেড়েছে মাত্র ৮০ টাকা। কৃষকসভার নেতা হান্নান মোল্লার অভিযোগ, ‘‘মোদী সরকার চাষিদের সঙ্গে রসিকতা করছে। ফসলের দাম যা ঠিক হয়েছে, তা উৎপাদন খরচের থেকেও কম!’’

খারিফ ফসলের দাম নিয়ে কিছু রাজ্য ইতিমধ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। আপত্তি তুলেছে এনডিএ-শরিক অকালি দলও। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক ফসলের দাম নিয়ে হতাশা জানিয়ে বলেছেন, ‘‘কৃষকদের সমস্যা একটা জাতীয় সমস্যা। কেন্দ্রের সাহায্য ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়।’’ অকালি নেতা প্রেম সিংহ চান্দুমার্যার মতে, পঞ্জাবে দেনায় জর্জরিত চাষিদের কাছে মাত্র ৮০
টাকা ধানের দাম বৃদ্ধি হাস্যকর। অকালি নেতারা শীঘ্রই কেন্দ্রের কাছে দরবার করবেন।

এ হেন বিরোধিতার পরেও কেন কৃষিঋণ মকুবকে ‘ফ্যাশন’ বলছেন বেঙ্কাইয়া? তাঁর ব্যাখ্যা, একমাত্র চরম পরিস্থিতিতেই ঋণ মকুব করা উচিত। এটা কোনও স্থায়ী সমাধান নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE