সীমান্তের দু’পাশ থেকে তাল ঠোকাঠুকি চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। শেষ পর্যন্ত অরুণাচলপ্রদেশের ঘটনায় চিনের সেনা এবং সেখানকার প্রশাসন এসে ক্ষমা চেয়ে গিয়েছে বলে সোমবার, সেনা দিবসে দাবি করলেন পূর্বাঞ্চলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল অভয় কৃষ্ণ।
গত ডিসেম্বরে চিন ও অরুণাচল সীমান্তে টুটিং প্রদেশে আচমকাই দেখা যায়, চিন সেনার সাহায্য নিয়ে সে-দেশের প্রশাসনিক লোকজন ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে রাস্তা বানাতে শুরু করেছে। জায়গাটা টুটিং থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে। অভয় এ দিন জানান, ভারতীয় আধাসেনা ‘ইন্দো টিবেটান বর্ডার পুলিশ’ (আইটিবিপি) ওই এলাকায় টহল দেয়। তাদেরই তাড়া খেয়ে রাস্তা বানানোর যন্ত্রপাতি ফেলে চিনের লোকজন পালিয়ে যায়।
অভয় এ দিন বলেন, ‘‘পরে ওরা এসে আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসে। আমরা বলে দিই, এই হচ্ছে সীমান্ত। এই লক্ষ্মণরেখা ছাড়িয়ে আপনারা ভিতরে ঢুকতে পারেন না। ওরা ক্ষমা চেয়ে নিয়ে জানায়, যাঁরা রাস্তায় কাজ করছিলেন, তারা বুঝতে না-পেরে ঢুকে পড়েছিলেন। এমনটা আর হবে না। আমরা ওদের ফেলে যাওয়া মালপত্র ফেরত দিয়ে দিই।’’ উঠে আসে ডোকলাম প্রসঙ্গও। লেফটেন্যান্ট জেনারেল জানান, গত ২৮ অগস্ট থেকে ডোকলাম একই অবস্থায় রয়েছে। চিন সেনা ফিরে গিয়েছে এবং ভারতীয় বাহিনী লাল লাইন টেনে দিয়েছে সীমান্তে।
তবে গত এক বছরে চিনা সেনা বা সেখানকার প্রশাসনের লোকেদের অনুপ্রবেশ বেড়েছে বলে স্বীকার করেন অভয়। ভারত-চিন সীমান্তের বহু এলাকা দুর্গম হওয়ায় সেখানে সেনাবাহিনীর পৌঁছতে দেরি হচ্ছে। ওই সব এলাকায় নজরদারি ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, এ দিন ওঠে সেই প্রশ্নও। অভয় বলেন, ‘‘আমরা প্রস্তুত। দুর্গমতম এলাকাতেও পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে।’’ অভয় জানান, সীমান্তে দুর্গম এলাকায় সেনাবাহিনীর রসদ ও অস্ত্রশস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য ব্রহ্মপুত্র অববাহিকাকে কাজে লাগানোর তোড়জোড় চলছে। এর আগেই সেনা সূত্রে জানা গিয়েছিল, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ফৌজের গতিবিধি অব্যাহত রাখতে ব্রহ্মপুত্রের তলায় দু’টি সুড়ঙ্গ বানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ব্রিটিশদের হাত থেকে ১৯৪৯-র ১৫ জানুয়ারি প্রথমে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব নেন ভারতীয় জেনারেল কে এম কারিয়াপ্পা। সেই থেকে ১৫ জানুয়ারিকে সেনা দিবস পালন করা হয়। এই উপলক্ষে সোমবার বিজয় স্মারকে পুষ্পস্তবক দেন অভয় এবং সেনাবাহিনীর অন্য উচ্চপদস্থ কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy