Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দলের সব কাঁটা সরাতে উদ্যোগী কেজরীবাল

বিরোধিতার সুর ঢিমে হতেই, দলের হাল শক্ত হাতে ধরলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খোলায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন আম আদমি পার্টির (আপ) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য প্রশান্ত ভূষণ ও যোগেন্দ্র যাদব। মতান্তর হওয়ায় আপের অভ্যন্তরীণ লোকপাল পদের দায়িত্বে থাকাপ্রাক্তন নৌসেনা প্রধান রামদাসকেও সরিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁদের পরিবর্তে নতুন মুখ এসেছে লোকপাল ও দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে।দলের বিদ্রোহী নেতাদের সরিয়ে দিয়ে আজ নতুন করে কাজেঝাঁপিয়ে পড়লেন কেজরীবাল।

দমকলের একটি অনুষ্ঠানে স্কুলপড়ুয়াদের সঙ্গে অরবিন্দ কেজরীবাল। সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

দমকলের একটি অনুষ্ঠানে স্কুলপড়ুয়াদের সঙ্গে অরবিন্দ কেজরীবাল। সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৫ ০৪:১০
Share: Save:

বিরোধিতার সুর ঢিমে হতেই, দলের হাল শক্ত হাতে ধরলেন অরবিন্দ কেজরীবাল।

তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খোলায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন আম আদমি পার্টির (আপ) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য প্রশান্ত ভূষণ ও যোগেন্দ্র যাদব। মতান্তর হওয়ায় আপের অভ্যন্তরীণ লোকপাল পদের দায়িত্বে থাকাপ্রাক্তন নৌসেনা প্রধান রামদাসকেও সরিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁদের পরিবর্তে নতুন মুখ এসেছে লোকপাল ও দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে।দলের বিদ্রোহী নেতাদের সরিয়ে দিয়ে আজ নতুন করে কাজেঝাঁপিয়ে পড়লেন কেজরীবাল। দিনভর তিনি ব্যস্ত থেকেছেন দিল্লি সচিবালয়ে। পরে সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমের সামনে দলের মধ্যে হওয়া গোলমালকে আমল না দিয়ে তিনি বলেছেন, “দলে কোনও সমস্যা নেই। সব কিছু ঠিক আছে।”

কেজরীবাল মুখে এ কথা বললেও, তাঁর ঘনিষ্ঠরা যে ভাবে বিরোধীদের দল থেকে সরানোর জন্য তত্‌পর হয়ে উঠেছেন তাতে প্রশ্ন উঠেছে সব শিবিরেই। শনিবার প্রশান্ত ও যোগেন্দ্রকে যে পদ্ধতিতে কোণঠাসা করে জাতীয় কর্মসমিতি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তা নিয়ে ঝড় উঠেছে দলের অভ্যন্তরেই। বিভক্ত দলীয় কর্মীরাও। ইতিমধ্যেই ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন মেধা পাটকর। আপত্তি জানিয়েছিলেন লোকপাল কমিটির প্রধান রামদাসও। তাঁকেও সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কেজরীবাল। রাজনীতিকদের মতে, দলে কোনও ধরনের বিরোধিতা সহ্য করবেন না তিনি।

প্রথমে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটি ও তার পর জাতীয় কর্মসমিতি থেকে সরানোর পর এ বার জাতীয় পরিষদ থেকেও প্রশান্ত ও যোগেন্দ্রকে সরানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে দল। আপ সূত্রে খবর, ওই দু’জন নিজেরাই দল থেকে সরে গেলে ভাল। তা না হলে পরের ধাপে দু’জনকে জাতীয় পরিষদ থেকে সরানো হবে। তার পরের ধাপে একেবারে দল থেকে। কারণ, কেজরীবাল বিশ্বাস করেন গত বিধানসভা নির্বাচনে ওই দুই নেতা নিঃশব্দে দলকে হারানোর জন্য তত্‌পর ছিলেন। এমন ব্যক্তি দলে থাকলে আখেরে দলেরই ক্ষতি। তাই তিনি ব্যক্তিগত ভাবে ওই দু’জনকে একেবারে দল থেকে সরিয়ে দিতে চান। তবে শুধু ওই দুই নেতাই নন, যে নেতারা কেজরীবালের নেতৃত্ব নিয়ে কোনও না কোনও সময়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁদেরও একে একে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে দল।

দলে বিদ্রোহ দমনে যখন তৎপর কেজরীবাল তখন নতুন এক বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন এক জ্যোতিষী। সুশীল চতুর্বেদী নামে ওই জ্যোতিষীর দাবি, ২০১৭ সালের মধ্যে দেশ থেকে আম আদমি পার্টির রাজনৈতিক অস্তিত্ব সম্পূর্ণ মুছে যাবে। তাঁর বক্তব্য, “এ বছরের জুন মাসের মধ্যে নেতৃত্বের প্রশ্নে আপ শিবির আড়াআড়ি ভাবে বিভক্ত হয়ে পড়বে বলে আমি জানিয়েছিলাম। বাস্তবে তা-ই হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় মানুষ ২০১৭ সালের মধ্যে কেজরীবালের বিরুদ্ধে পথে নামবে। তখন বাধ্য হয়ে ক্ষমতা ছাড়তে হবে তাঁকে।

বিজেপি মুখপাত্র নলিন কোহলির মতে, “কেজরীবালের স্বৈরাচারী চেহারা ক্রমশ সামনে আসছে। যত দিন যাবে ততই দলে বিরোধিতা বাড়বে। আর ততই মুখোশ খুলতে থাকবে কেজরীবালের।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE